রাজশাহীর প্রতিনিধি:
দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে অনলাইনে অর্ডার নিয়ে আম সরবরাহ করছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। রাজশাহীতে পর্যাপ্ত টিউশনি বা পার্টটাইম কাজ না থাকায় পড়াশোনার খরচ জোগাতে এমন উদ্যোগকে বেঁছে নিয়েছেন শতাধিক শিক্ষার্থী। এতে করে তাদের পড়াশোনার পাশাপাশি ব্যবসার হাতে-খড়ি হচ্ছে। এছাড়াও এই অর্থ দিয়ে অনায়াসেই শিক্ষার্থীদের কয়েক মাস পড়াশোনার খরচ চলে যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতিবছর আম পাড়ার সময় হলে রাবির শতাধিক শিক্ষার্থী আম বিক্রি ব্যবসার সাথে জড়িয়ে পড়েন। এক্ষেত্রে তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম’ ফেসবুকে’ বিভিন্ন পেজ বা গ্রুপ খুলে আমের অর্ডার নেন। পরবর্তীতে রাজশাহীর বিভিন্ন উপজেলার বাগান থেকে পাইকারি দরে তারা আম কেনেন। পরে প্যাকেজিং করে কুরিয়ারের মাধ্যমে তারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আম সরবরাহ করে থাকেন।
অনলাইনে ফরমায়েশ নিয়ে সারাদেশে আম বিক্রি করছেন রাবির ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের চারবন্ধু। আলি, পিয়াস, আতিক এবং মাহবুবা। তারা বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর আমের দাম একটু বেশি। এতে তাদের লাভের পরিমাণ এ বছর কমে গেছে। এখনও পর্যন্ত তারা চার বন্ধু মিলে ৮০ মণের বেশি আম বিভিন্ন স্থানে পাঠিয়েছেন। আগামীকাল থেকে আম রুপালি পাড়া শুরু হবে। এছাড়াও ফজলি, আশ্বিনা, গৌড়মতি, ইলমতি, বারী আম-৪ এখনো গাছ থেকে পাড়ার সময় হয়নি।
জানা গেছে, রাজশাহীতে গোপালভোগ, আম রুপালি, বারি ৪, হারিভাঙ্গা, কাটিমন, হিমসাগর বা ক্ষিরসাপাত, বারি ১১, গৌরমতি, সুর্যডিম, ল্যাংড়া, লখনা, রানীপছন্দ, আশ্বিনান, হঁাড়িভাঙ্গা, ইলামতি প্রভৃতি জাতের আম পাওয়া যায়। এদের মধ্যে গোপালভোগ, ল্যাংড়া, আম রুপালি, হিমসাগর (ক্ষিরসাপাত), হাড়িভাঙ্গা আমের চাহিদা সব থেকে বেশি থাকে। এসব আমের সারাদেশে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ফলে বেশি দাম দিয়ে হলেও অনেকেই রাজশাহীর আম কিনতে পছন্দ করে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছে পাইকারি দরে আম বিক্রি করেন রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার আমগাছী এলাকার বিল্লাল হোসেন। তিনি বলেন, ক্যাম্পাস থেকে নিয়মিত শিক্ষার্থীরা নগদ টাকায় আমার বাগান থেকে আম কিনে নিয়ে যান। আম বিক্রি করতে আমাকে বাজারে যাওয়া লাগে না। এতে করে যাতায়াত খরচ ও আম নিয়ে বাজারে বসে থাকার ঝামেলা পোহাতে হয় না।
শিক্ষার্থীদের এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং অধ্যাপক ড. মো. সেলিম রেজা বলেন, আমাদের দেশেতো কর্মসংস্থানের অভাব আছে। অন্যান্য দেশে শিক্ষার্থীরা দিনে ৩-৪ ঘন্টা কাজ করে অর্থসংস্থান করেন। পড়াশোনার পাশাপাশি আমাদের শিক্ষার্থীরা যদি ব্যবসায়ের নীতি-নৈতিকতা মেনে আমের ব্যবসাসহ অন্যান্য ব্যবসায় জড়িত থাকে। তবে আমার কাছে এটা ভালো উদ্যোগ মনে হয়।