অর্থনৈতিক সংকটে জর্জরিত শ্রীলঙ্কা বেশ কয়েকটি শর্ত পূরণ করতে ব্যর্থ হওয়ায় ঋণ দেওয়া স্থগিত করেছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ঋণদাতা সংস্থা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।
গত মাসে ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি প্রদানের কথা থাকলেও এখনও তা পায়নি কলম্বো। বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
এএফপি জানায়, ‘শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে যে তাদের প্রধান সুদের হার কমিয়ে ১১ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, মূল্যস্ফীতির হার গত মাসে দ্রুত কমে ১ দশমিক ৩ শতাংশে নেমে আসার কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এক বছর আগে মূল্যস্ফীতির হার সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠেছিল—৭০ শতাংশ।’
এর আগে ব্যাপক অর্থনৈতিক সংকটে জর্জরিত শ্রীলঙ্কাকে ২৯০ কোটি ডলার জরুরি ঋণ দিতে রাজি হয় আইএমএফ। ঋণের প্রথম কিস্তির ৩৩ কোটি ডলার গত মার্চেই পেয়েছিল শ্রীলঙ্কা। দ্বিতীয় কিস্তির ৩৩ কোটি ডলার পাওয়ার কথা ছিল ছয় মাস পর। কিন্তু আইএমএফের নির্দেশনা অনুযায়ী লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারেনি কলম্বো।
বর্তমানে দেশটির বকেয়া ঋণের পরিমাণ প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি ডলার। গত কয়েক বছরে ভারত-চীনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কাছ থেকে এই ঋণ নিয়েছিল দেশটি। গত বছর শ্রীলঙ্কার হাতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি করার মতো অর্থও ছিল না। এর ফলে দেশটিতে খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধের সংকট দেখা দেয়।
এটা ছিল দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে মারাত্মক অর্থনৈতিক সংকট। এর জেরে শ্রীলঙ্কায় মাসের পর মাস ধরে মানুষ বিক্ষোভ করেন। তাদের প্রতিবাদ ছিল দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে। এই সংকটের কারণে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ান।
অর্থনৈতিক সংকট দেখা দেওয়ার পর ২০২২ সালের শুরুর দিক থেকে শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীতি সুদের হার বাড়াতে থাকে। সবচেয়ে বেশি বাড়ানো হয় গত বছরের এপ্রিলে—রেকর্ড ৭ শতাংশীয় পয়েন্ট। এর ফলে ঋণের সুদের হার গত মার্চে সর্বোচ্চ ১৬ দশমিক ৫ শতাংশে ওঠে। এর পর থেকে দেশটিতে সুদের হার কমানো শুরু হয়।
সূত্র: বার্তা সংস্থা এএফপি