তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামানকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি আগে বললে ভালো হতো।
বৃহস্পতিবার তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপনে বঙ্গবন্ধু’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমি এ ব্যাপারে একমত, তাকে (শামসুজ্জামান) গ্রেপ্তার করার পর, তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এ কথাটি বললে ভালো হতো।
আরেক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, অনলাইন ভার্সন প্রেস কাউন্সিলের অধীনে আসেনি। অনলাইন নিউজ মিডিয়া ইজ নট আন্ডার দ্য জুরিসডিকশন অব প্রেস কাউন্সিল, অর ফেসবুক পেজ অফ এনি নিউজ পেপার ইজ নট আন্ডার দ্য জুরিসডিকশন অব প্রেস কাউন্সিল এবং প্রেস কাউন্সিলের তিরস্কার করা ছাড়া আর কোনো ক্ষমতা নেই।
হাছান মাহমুদ বলেন, তাকে যখন গ্রেপ্তার করা হয়, তার আগে মামলা হয়েছে। মামলা হওয়ার পরেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোর্টে প্রডিউস করা হয়েছে। এখন প্রথম আলো যে ব্যাখ্যা দিয়েছে কোর্টে সে ব্যাখ্যা দেবে, কোর্ট সেটার বিচার করবে।
আরেক এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ২৬ তারিখ অনলাইনে যে সংবাদটি পরিবেশন করা হয়েছে এটি অবশ্যই রাষ্ট্রের মূল ভিত্তিমূলে আঘাত হানা হয়েছে। স্বাধীনতাকে কটাক্ষ করা হয়েছে। স্বাধীনতা দিবসের দিন জাতীয় স্মৃতিসৌধে, জাতীয় স্মৃতিসৌধ আমাদের স্বাধীনতার প্রতীক, সেখানে একটা ছেলেকে ১০ টাকা দিয়ে ফুসলিয়ে তাকে দিয়ে কথা বলানোর চেষ্টা করা হয়েছে, সে যেটি বলেনি সেটি প্রচার করা হয়েছে, এটি ঠিক হয়নি বলেই তো তারা সরিয়ে নিয়েছে। এখানে অবশ্যই রাষ্ট্রের মূল ভিত্তিমূলে আঘাত হানা হয়েছে।
তিনি বলেন, তুলে নেয়া এবং গ্রেপ্তার হওয়ার মধ্যে পার্থক্য আছে। কাউকে অপরাধবিহীনভাবে কেউ যদি নিয়ে যায় সেটা তুলে নেয়া। আর কারও অপরাধ হয়েছে, মামলা হয়েছে, সুনির্দিষ্ট অভিযোগে কাউকে যদি নিয়ে যায় সেটা হচ্ছে গ্রেপ্তার করা। তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, আমি যদি কাউকে আঘাত করে আহত করি এবং এরপর সরি বলি তাহলে কি আমার অপরাধ ঢেকে যায়?
ভুল হতে পারে- সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে এমন পাল্টা প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ভুল। রাষ্ট্রের ভিত্তিমূলে আঘাত হেনে সেটি কি ভুল? ভুল যদি হয় তারা সেটা আদালতে ব্যাখ্যা দেবে। কিন্তু যে সংবাদটি পরিবেশন করা হয়েছে সেটি এখনো ফেসবুকে আছে। এখনো তো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আছে। সরে গেলেও তো সরে যায় না যেকোনো জিনিস।
‘নাসিরনগরের ঘটনা সেটা সরিয়ে দেয়া হয়েছিল কিছুক্ষণ পরে। কিন্তু এরপর তো দেশে দাঙ্গা হয়েছে। কুমিল্লার ঘটনা সেটাও কিছুক্ষণ পর সরিয়ে নেয়া হয়েছিল। এরপরও দেশে হাঙ্গামা হয়েছে। অনেক মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে। সুতরাং এটা আদালতে তারা ব্যাখ্যা দেবে।’ যোগ করেন তথ্যমন্ত্রী।
ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট নিয়ে করা এক প্রশ্নের উত্তরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এ ধরনের আইন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ করেছে। ইউএসএতে সাইবার ল’ অ্যান্ড পানিশমেন্ট ইন ইউএসএ। ইউএসএতে এর শাস্তি ২০ বছর এবং ডিজিটাল অপরাধের কারণে যদি কারও মৃত্যু হয়, লাইফ টাইম প্রিজন (যাবজ্জীবন কারাদণ্ড)। আমাদের দেশের ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট অত টাফ নয়। ইউএসএ’র ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট টাপার দেন আওয়ার ল’।
তিনি বলেন, গার্ডিয়ানের জানুয়ারি মাসের রিপোর্ট, এভরি ডে ৯ পার্সেন্ট ইজ অ্যারেস্টেড ইন ইউকে বিকজ অব দ্য ডিজিটাল অফেন্স। ডিজিটাল অফেন্সের কারণে পার ডে অন ইন অ্যাভারেজ ৯ পার্সেন্ট ইজ অ্যারেস্টেড। আমাদের দেশে হচ্ছে? হচ্ছে না। কারণ এ আইন সব মানুষের ডিজিটাল নিরাপত্তা দেয়ার জন্য।