হুমায়ুন কবির, কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি: বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া সদর ৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহবুবউল আলম হানিফ বলেছেন, এই কুষ্টিয়ার বুকে কুষ্টিয়াতে, পিছিয়ে পড়া কুষ্টিয়াতে সুন্দর একটি উদ্যোগ নিয়ে একটি প্রতিষ্ঠান করেছেন। আমি এখানে এসে বিস্মিত হয়েছি। এখানে না আসলে বুঝতে পারতাম না এখানে এত ছাত্র-ছাত্রী পড়ে। এখানে এমন চমৎকার একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে। বাহিরে থেকে আসলে ওইভাবে বোঝা যায়নি, ভিতরে এসে জানলাম এবং আরো ভালো লাগলো যখন জানলাম এখানে পড়াশোনার পরিবেশটা ভালো। এখানে একটা শিক্ষার বহু মার্তিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আমরা সব জায়গায় দেখি যে, বিভিন্ন স্কুলে গতানুগতিক শিক্ষার মধ্যেই থাকে। সেখানে মনে হয়েছে এডুকেয়ারে তাদের শিক্ষার পদ্ধতি চিন্তা, চেতনা একটু বহুমাত্রিক ও ভিন্নমাত্রায় আছে। আমরা সব সময় বলি শিক্ষা হচ্ছে জাতির মেরুদন্ড শিক্ষার কোন বিকল্প নেই এবং জ্ঞানই হচ্ছে মানুষের শক্তি। জেনে ভালো লাগলো এডুকেয়ার আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজে এখানে প্রায় ১৫০০ জন শিক্ষার্থী সুস্থ ধারায় জ্ঞান অর্জন করছে। মঙ্গলবার (২১ মার্চ) সকাল ১১টায় এডুকেয়ার আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের ভবন উদ্বোধন ও কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা এবং শিক্ষার মানোন্নয়ন সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। এডুকেয়ার আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের সভাপতি মোঃ মোজাম্মেল হকের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া সদর ৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহবুবউল আলম হানিফ। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, ব্যারিস্টার সেলিম আলতাফ জর্জ (এমপি), কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব সদর উদ্দিন খান, সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আজগর আলী, কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী ফারুকুজ্জামান, শেখ হাসান মেহেদী, কুষ্টিয়া সদর উপজেলার চেয়ারম্যান ও কুষ্টিয়া পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আতা, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক যশোর শিক্ষা বোর্ড উপ-বিদ্যালয় পরিদর্শক এস এম রফিকুল ইসলাম, কুষ্টিয়া প্রেসক্লাব কেপিসি সভাপতি হাজী রাশেদুল ইসলাম বিপ্লব। এ সময় হানিফ বলেন, নলেজ ইজ পাওয়ার। যার জ্ঞান নেই সে আসলে পৃথিবীতে বড় অভাগা। কারণ তার কাছে পৃথিবীতে সব কিছুই অজানা। জ্ঞান অর্জনের মধ্য দিয়ে পৃথিবীর সবকিছু জানা সম্ভব। যার জ্ঞান আছে পৃথিবীত তার হাতের মধ্যে। এই জ্ঞান অর্জনের জন্যই এখানে যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে নিঃসন্দেহে একটি ভালো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। আমরা প্রত্যেকেই শিক্ষার উপরে গুরুত্ব দিয়ে আসছি। আমরা দেখেছি একটা চাইনিজ প্রবাদ, “Teachers open the door, but you must enter by yourself- Learm a proverb a day.” একটি শিক্ষক প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকরা কিন্তু আমাদের শিক্ষার্থীদের, বাচ্চাদের মনের দরজাটা খুলে দিতে পারে কিন্তু সেই শিক্ষার্থীকে দরজাতে প্রবেশ করে জ্ঞান অর্জন করতে হবে। শিক্ষকরা কিন্তু জ্ঞান টাকে শিক্ষার্থীদের মাথায় ঢুকিয়ে দিতে পারবে না। শিক্ষার্থীদের নিজেদের থেকেও চেষ্টা করতে হবে। হানিফ আরো বলেন, আমরা সব সময় বাচ্চাদেরকে জিপিএ ৫ পাওয়ার জন্য বেশি বেশি চাপ দিয়ে থাকি এবং বড় হয়ে ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হতে হবে। এরকম একটি বাড়তি চাপ দেওয়া হয় এবং মেন্টালি তাদেরকে ওইভাবে গ্রোআপ করা হয়। যে ভালো করে পড়ুক ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হোক। হলে বাড়ি গাড়ি হবে আরামে জীবন যাপন করতে পারবে কিন্তু একটা মানুষ যে শুধুমাত্র ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার জীবনে সবটুকু নয়। এটা হয়তো আমরা অনেক সময় আমাদের মনে অজান্তে বাচ্চাদের দূরে সরিয়ে রাখি। একটি শিশুর প্রথম পাঠশালা হচ্ছে তার বাড়ি, তার ঘর। প্রথম শিক্ষক হচ্ছে তার মা এবং তার বাবা। একটা বাচ্চার মানুষ হিসাবে তাকে গড়ে তোলার জন্য মা এবং বাবার সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে। স্কুলের শিক্ষকরা শিক্ষার্থীর মনের দরজা খুলে দেয় কিন্তু বাচ্চাদের নীতি-নৈতিকতা পূর্ণভাবে তৈরি করার ভূমিকা থাকে তার মায়ের, তার বাবার, তার পরিবারের। আমরা মা বাবারা যখন জিপিএ ৫ এর দিকে দৌড়ায়, অনেক সময় বাচ্চাদেরকে অবশ্যই সে লক্ষ্য পৌঁছাতে হবে সেজন্য বাড়তি চাপ দিয়ে থাকি। আজকে আপনারা দেখেন আমাদের সমাজটা ভয়ংকর একটা খারাপের দিকে চলে যাচ্ছে। মানুষের মধ্যে পরস্পরের মধ্যে আস্তা নেই, নিষ্ঠা নেই, সম্মান বোধ নেই, শ্রদ্ধা নেই, সবকিছু আমার কাছে একটা দুর্ভিক্ষ মনে হয়।