বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অবস্থার প্রেক্ষাপটে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের আওতায় সব ধরনের বৈদেশিক ভ্রমণ, কর্মশালা, সেমিনারে অংশগ্রহণ, গাড়ি ক্রয় এবং ভূমি খাতের অধিগ্রহণ বাবদ বরাদ্দ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে সরকার।
রোববার (২ জুলাই) অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত জরুরি পরিপত্র জারি করা হয়েছে। অর্থ বিভাগের উপ-সচিব আনিসুজ্জামান স্বাক্ষর করেছেন।
এতে বলা হয়েছে, চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অবস্থার প্রেক্ষাপটে সরকারি ব্যয়ে কৃচ্ছ্র সাধনের লক্ষ্যে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অন্যান্য প্রতিষ্ঠান এবং আওতাধীন অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত বা আধা স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, পাবলিক সেক্টর করপোরেশন, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটে কতিপয় খাতে বরাদ্দ করা অর্থ ব্যয়ে সরকার বেশকিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এছাড়া পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের আওতায় এসব খাতের বরাদ্দ করা অর্থ অন্য কোনো খাতে এবং অন্য কোনো খাত থেকে এসব খাতে পুনঃউপযোজন করা যাবে না। তবে অত্যাবশ্যকীয় বিবেচনায় কিছু ক্ষেত্রে সীমিত আকারে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়ে বিদেশ ভ্রমণের সুযোগ দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে-
পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের আওতায় সরকারি অর্থায়নে এবং বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা, বিশ্ববিদ্যালয়, দেশ কর্তৃক প্রদত্ত স্কলারশিপ, ফেলোশিপের আওতায় বৈদেশিক অর্থায়নে মাস্টার্স ও পিএইচডি কোর্স অধ্যায়। বিদেশি সরকার, প্রতিষ্ঠান, উন্নয়ন সহযোগীর আমন্ত্রণে ও সম্পূর্ণ অর্থায়নে আয়োজিত বৈদেশিক প্রশিক্ষণ। সরবরাহকারী, ঠিকাদার, পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাসহ কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন কর্মকর্তা কর্তৃক সেবা বা পণ্যের গুণগত মান নিরীক্ষা বা পরিদর্শন।
এছাড়া পরিচালন বাজেটের আওতায় ব্যয় কমাতে আরও যেসব সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তা হলো- বিদ্যুৎ খাতে বরাদ্দকৃত অর্থের সর্বোচ্চ ৭৫ শতাংশ ব্যয় করতে হবে। পেট্রোল, অয়েল ও লুব্রিকেন্ট এবং গ্যাস ও জ্বালানি খাতে বরাদ্দকৃত অর্থের সর্বোচ্চ ৮০ শতাংশ ব্যয় করা যাবে। আবাসিক ভবন এবং অন্যান্য ভবন ও স্থাপনা খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয় বন্ধ থাকবে। মোটরযান, জলযান, আকাশযান খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয় বন্ধ থাকবে। তবে ১০ বছরের অধিক পুরোনো মোটরযান প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে অর্থ বিভাগের অনুমোদন নিয়ে ব্যয় নির্বাহ করা যাবে। ভূমি অধিগ্রহণ খাতে বরাদ্দ করা অর্থ ব্যয় বন্ধ থাকবে।
উন্নয়ন বাজেটের আওতায় ব্যয় কমাতে যেসব সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তা হলো- বিদ্যুৎ খাতে বরাদ্দ কৃত অর্থের সর্বোচ্চ ৭৫ শতাংশ ব্যয় করা যাবে। পেট্রোল, অয়েল ও লুব্রিকেন্ট এবং গ্যাস ও জ্বালানি খাতে বরাদ্দকৃত অর্থের সর্বোচ্চ ৮০ শতাংশ ব্যয় করা যাবে। সকল প্রকার যানবাহন ক্রয় (মোটরযান, জলযান, আকাশযান) বন্ধ থাকবে। ভূমি অধিগ্রহণ খাতে বরাদ্দ করা অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে সব আনুষ্ঠানিকতা প্রতিপালন করে অর্থ বিভাগের পূর্বানুমোদন নিতে হবে।
পরিপত্রে আরও বলা হয়েছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরের শুরু থেকে সরকারের কৃচ্ছ্রসাধনের নীতিতে এ পর্যন্ত সরকারি ব্যয়ে ১৫ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে। এই অর্থের মধ্যে সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন-ভাতা খাত থেকে সাশ্রয় হয়েছে ১ হাজার ৯৩ কোটি টাকা। এছাড়া, পণ্য ও সেবাসহ পূর্ত কাজ এবং শেয়ার ও ইকুইটিতে বিনিয়োগের লাগাম টেনে সাশ্রয় হয়েছে প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা।