বাংলাদেশ ও ভারত অভিন্ন নদ-নদী, পানি ব্যবস্থাপনা, সাইবার সিকিউরিটি, জ্বালানি, কৃষি, খাদ্য নিরাপত্তা ও জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে আরও সহযোগিতা জোরদারে ঘনিষ্টভাবে কাজ করার ব্যাপারে সম্মত হয়েছে।
বৈঠকের ফলাফলের বিষয়ে দেওয়া এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, রোববার সন্ধ্যায় দিল্লীতে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-ভারত যৌথ পরামর্শক কমিশনের (জেসিসি) সপ্তম দফা বৈঠকে এ সম্মতি জ্ঞাপন করা হয়।
বৈঠকের পর দেওয়া যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর নগরীর হায়দারাবাদ হাউসে অনুষ্ঠিত বৈঠকে যৌথভাবে সভাপতিত্ব করেন।
মহামারি করোনাভাইরাস শুরুর পর এটি সশরীরে অংশ নেয়া প্রথম বৈঠক। আগের বৈঠকটি ২০২০ সালে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে দুই মন্ত্রী ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে উভয় দেশে অভিন্ন ত্যাগের কথা গুরুত্বসহকারে স্মরণ করেন, যার মধ্যদিয়ে কৌশলগত অংশীদারিত্বের প্রচলিত বিশ্বাস অতিক্রম করে দু’দেশের মধ্যে একটি ঘনিষ্ঠ ঐতিহাসিক ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠেছে ।
তারা সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, মহামারি করোনাভাইরাসের চ্যালেঞ্জ দেখা দেওয়া সত্ত্বেও উভয় দেশ নিরাপত্তা ও সীমান্ত ব্যবস্থাপনা থেকে শুরু করে পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বাণিজ্য ও বিনিয়োগ প্রবাহ প্রতিটি ক্ষেত্রে আগের যেকোন সময়ের চেয়ে ঘনিষ্টভাবে কাজ করছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, এই দুই মন্ত্রী প্রশংসা করে বলেন, দ্বিপাক্ষিক ও আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে একটি রোল মডেল, যা গত দশকে এ দু’দেশের মধ্যে কেবলমাত্র অভিন্ন বিশ্বাস ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার মাধ্যমে জোরদার হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে তারা ২০২২ সালের মে মাসে কান চলচ্চিত্র উৎসবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ওপর যৌথভাবে প্রযোজিত বায়োপিক ‘মুজিব- মেকিং অব অ্যা নেশন’র ট্রেইলার প্রদর্শন উদ্বোধনের কথা উল্লেখ করেন।
উভয় মন্ত্রী উচ্চ পর্যায়ের সফরের প্রশংসা করে বলেন, এক্ষেত্রে বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক কর্ম-কৌশলের মাধ্যমে অনেক কাজ এবং তারা নিয়মিতভাবে আরো জোরদার অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার ব্যাপারে সম্মত হন।
এ ব্যাপারে উভয় মন্ত্রী সহযোগিতা জোরদারে তাদের কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দিয়েছেন। তারা উভয় দেশের জনগণের পারস্পরিক স্বার্থের জন্য বিভিন্ন বিষয় মোকাবেলা এবং স্থায়ী সমাধান খঁজে বের করার ব্যাপারে আরও গুরুত্ব দেন।
রোহিঙ্গা ইস্যুর কথা উল্লেখ করে উভয় পক্ষ মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে জোরপূর্বক বিতাড়িত সেদেশের নাগরিকদের নিরাপত্তা দিয়ে দ্রুত ও স্থায়ীভাবে ফেরত নেওয়ার গুরুত্বের কথা পুনর্ব্যক্ত করে। তারা বাংলাদেশের বিভিন্ন শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন।
দুই দেশের মধ্যে চমৎকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বজায় থাকার কথা উল্লেখ করে তারা নেতাদের সিদ্ধান্ত দ্রুততার সাথে বাস্তবায়নে ঘনিষ্ট সহযোগিতার এবং দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার সকল ক্ষেত্রে পারস্পরিক কার্যক্রম জোরদারের গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করেন।
নয়াদিল্লী সফরকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন ভারতের উপ-রাষ্ট্রপতি এম. ভেঙ্কাইয়া নাইডু ও ভারত সরকারের অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করবেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বৈঠকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় যে ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ জেসিসি’র অষ্টম বৈঠক আগামী বছর বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হবে।-বাসস