ঢাকা , শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫, ২৬ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই নির্বাচন: প্রেস সচিব নওগাঁর মহাদেবপুরে বিএনপি’র কর্মীদের লিফলেট বিতরণ ৭ গোলের ম্যাচে হংকংয়ের কাছে বাংলাদেশের হার রাণীশংকৈলে জাতীয় কন্যাশিশু দিবস পালিত। ফরিদগঞ্জে আলহাজ্ব এম এ হান্নানকে ধানের শীষের প্রতীকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবিতে উপজেলা ও পৌর যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদলের গণমিছিল জুলাই সনদ স্বাক্ষরের তারিখ ঘোষণা, নেতৃত্বে প্রধান উপদেষ্টা দেবিদ্বারে মাদক সেবনের দায়ে দীপংকরের কারাদণ্ড চানখারপুল হত্যাযজ্ঞ: সাক্ষ্য দিতে ট্রাইব্যুনালে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ আশুলিয়ায় জামগড়া আর্মি ক্যাম্প সেনাবাহিনীর অভিযানে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র ও একটি বিদেশি অত্যাধুনিক শট গান সহ ৩ জনকে আটক করেছে RAW জাতীয় নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার জন্য ষড়যন্ত্র করছে : এম এ মালিক

সাটুরিয়ায় ব্রীজের মুখ ভরাটের প্রতিবাদে কৃষকদের বিক্ষোভ

এম,এ,রাজ্জাক- সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি

 

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় একটি সেতুর পাশে পানি নিষ্কাশনের পথ মা দিয়ে বন্ধ করে দেওয়ার প্রতিবাদে  বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন ভুক্তভোগী কৃষক ও স্থানীয় গ্রামবাসী।

শনিবার সকাল ৯টায় উপজেলার হরগজ বাজারের চৌরাস্থা থেকে প্রথমে বিক্ষোভ শুরু হয়ে বাজারের প্রধান প্রধান গলি প্রদক্ষিণ করে পূর্বের স্থানে এসে শেষ হয়। পরে ঘণ্টাব্যাপী ভিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়।

বিক্ষোভে  কাজী শহিদুল্লাহর নেতৃত্বে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় বাসিন্দা বেলাল হোসেন, কৃষক সাইদুর রহমান ও দেলোয়ার হোসেন। তারা অভিযোগ করেন, হরগজ মোড় থেকে বাজার সড়কের বালুর চর নামক স্থানে অবস্থিত একটি সেতুর উত্তর পাশে দীর্ঘদিন ধরে পানি নিষ্কাশনের একটি স্বাভাবিক পথ ছিল।  কিন্তু ৫ আগস্টের পর হঠাৎ করে রাতের আঁধারে ওই নিষ্কাশন পথটি মাটি দিয়ে ভরাট করে দেওয়া হয়।

কাজী শহিদুল্লাহ বলেন, স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী  আনোয়ার, ফরিদ ও আলতাফ এই মাটি ভরাটে সহায়তা করেছেন। এতে করে সড়কের দুই পাশের বিস্তীর্ণ কৃষিজমিতে পানি আটকে যাচ্ছে। উত্তর ও দক্ষিণ পাশে হাজার হাজার একর জমিতে পানি জমে গিয়ে ফসল নষ্ট হচ্ছে। বিশেষ করে ধান ও সবজি চাষে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা। তিনি আরো বলেন, এই বালুর চকের ফষলি জমির পানি খালে যেতো পরে তা ধলেশরী নদীতে গিয়ে পড়ত। তা এখন যেতে পারছে না। মাটি ভরাটের কারনে অল্প বৃষ্টির ফলে ফষলি জমিতে জলাবদ্ধতা দেখা দিচ্ছে।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক সাইদুর রহমান বলেন, “নিষ্কাশন পথ বন্ধ হওয়ায় আমার জমির পানি বের হতে পারছে না। মাঠে পানি জমে ধান নষ্ট হয়ে গেছে। সামনে শীতকাল, এখনই ব্যবস্থা না নিলে রবিশস্যও চাষ করা সম্ভব হবে না। ইতোমধ্যে আমার প্রায় ৫ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এই বালুর চকে শত শত কৃষকের চাষকৃত ভুট্রা, ধান ও বিভিন্ন সবজি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

বেলাল হোসেন বলেন, ব্রীজের উত্তর পার্শে হানিফ আলী, ঝর্ণা বেগমসহ কয়েকজন জমি কিনে। কিন্তু তাদের কেনার চাইতে বেশী বাড়তি পানি নিস্কাসনের যে পথ ছিল তা রাতের আধারে মাটি ভরাট করে ফেলেছে। রাস্তার দুই ধারে হাজার হাজর এক জমির পানি বের হতে পারছে না। চলতি মৌসমে সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি জমে ফষল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক দেলোয়ার হোসেন বলেন, এ ক্ষতি বিষয়ে আমরা হরগজ ভুমি সহকারী উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভুমি) এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার কার্যালয়ে গণ সাক্ষর  করে লিখিত অভিযোগ করেছি। হরগজ এলাকার ঐ চিন্থিত মহল আনোয়ার, ফরিদ ও আলতাফের সহযোগীতায় প্রশাসনও কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। যা খুবই রহস্যজনক মনে হচ্ছে।

দ্রুত নিষ্কাশন পথ খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে বিক্ষোভে  আরো কৃষকরা  বলেন, সংশ্লিষ্ট প্রশাসন যদি দ্রত ব্যবস্থা না নেয়, তবে তারা উপজেলা পরিষদ ও জেলা প্রশাসক কার্যালয় ঘেরাওসহ আরও বড় কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন।

এ বিষয়ে হানিফ আলী ও ঝর্ণা বেগম বলেন আমরা আমাদের কেনা জমিতেই মাটি ভরাট করেছি।

আর এ ব্রীজের মুখে মাটি ভরাট কাজে সহায়তাকারী ফরিদ বলেন, জমির মালিক খুব গরীব, তাদের নিজেদের জমিতে মাটি ভরাট করেছে। তাদের নিকট একটি পক্ষ চাঁদা দাবী করেছিল , চাঁদা না পেয়ে এবং আমাদের চরিত্র হনন করার জন্য এ বিক্ষোভের  আয়োজন করেছে।

সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইকবাল হোসেন বলেন, এ বিষয়ে কোন লিখিত অভিযোগ আমি হাতে পাইনি। আপানদের মাধ্যমে জানতে পারলাম। আমি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তদন্ত করে দেখব। অভিযোগের সত্যতা পেলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

ট্যাগ :

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপডেটের সময় : ১২:৫২:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
৫৪৯ Time View

সাটুরিয়ায় ব্রীজের মুখ ভরাটের প্রতিবাদে কৃষকদের বিক্ষোভ

আপডেটের সময় : ১২:৫২:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

 

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় একটি সেতুর পাশে পানি নিষ্কাশনের পথ মা দিয়ে বন্ধ করে দেওয়ার প্রতিবাদে  বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন ভুক্তভোগী কৃষক ও স্থানীয় গ্রামবাসী।

শনিবার সকাল ৯টায় উপজেলার হরগজ বাজারের চৌরাস্থা থেকে প্রথমে বিক্ষোভ শুরু হয়ে বাজারের প্রধান প্রধান গলি প্রদক্ষিণ করে পূর্বের স্থানে এসে শেষ হয়। পরে ঘণ্টাব্যাপী ভিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়।

বিক্ষোভে  কাজী শহিদুল্লাহর নেতৃত্বে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় বাসিন্দা বেলাল হোসেন, কৃষক সাইদুর রহমান ও দেলোয়ার হোসেন। তারা অভিযোগ করেন, হরগজ মোড় থেকে বাজার সড়কের বালুর চর নামক স্থানে অবস্থিত একটি সেতুর উত্তর পাশে দীর্ঘদিন ধরে পানি নিষ্কাশনের একটি স্বাভাবিক পথ ছিল।  কিন্তু ৫ আগস্টের পর হঠাৎ করে রাতের আঁধারে ওই নিষ্কাশন পথটি মাটি দিয়ে ভরাট করে দেওয়া হয়।

কাজী শহিদুল্লাহ বলেন, স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী  আনোয়ার, ফরিদ ও আলতাফ এই মাটি ভরাটে সহায়তা করেছেন। এতে করে সড়কের দুই পাশের বিস্তীর্ণ কৃষিজমিতে পানি আটকে যাচ্ছে। উত্তর ও দক্ষিণ পাশে হাজার হাজার একর জমিতে পানি জমে গিয়ে ফসল নষ্ট হচ্ছে। বিশেষ করে ধান ও সবজি চাষে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা। তিনি আরো বলেন, এই বালুর চকের ফষলি জমির পানি খালে যেতো পরে তা ধলেশরী নদীতে গিয়ে পড়ত। তা এখন যেতে পারছে না। মাটি ভরাটের কারনে অল্প বৃষ্টির ফলে ফষলি জমিতে জলাবদ্ধতা দেখা দিচ্ছে।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক সাইদুর রহমান বলেন, “নিষ্কাশন পথ বন্ধ হওয়ায় আমার জমির পানি বের হতে পারছে না। মাঠে পানি জমে ধান নষ্ট হয়ে গেছে। সামনে শীতকাল, এখনই ব্যবস্থা না নিলে রবিশস্যও চাষ করা সম্ভব হবে না। ইতোমধ্যে আমার প্রায় ৫ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এই বালুর চকে শত শত কৃষকের চাষকৃত ভুট্রা, ধান ও বিভিন্ন সবজি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

বেলাল হোসেন বলেন, ব্রীজের উত্তর পার্শে হানিফ আলী, ঝর্ণা বেগমসহ কয়েকজন জমি কিনে। কিন্তু তাদের কেনার চাইতে বেশী বাড়তি পানি নিস্কাসনের যে পথ ছিল তা রাতের আধারে মাটি ভরাট করে ফেলেছে। রাস্তার দুই ধারে হাজার হাজর এক জমির পানি বের হতে পারছে না। চলতি মৌসমে সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি জমে ফষল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক দেলোয়ার হোসেন বলেন, এ ক্ষতি বিষয়ে আমরা হরগজ ভুমি সহকারী উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভুমি) এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার কার্যালয়ে গণ সাক্ষর  করে লিখিত অভিযোগ করেছি। হরগজ এলাকার ঐ চিন্থিত মহল আনোয়ার, ফরিদ ও আলতাফের সহযোগীতায় প্রশাসনও কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। যা খুবই রহস্যজনক মনে হচ্ছে।

দ্রুত নিষ্কাশন পথ খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে বিক্ষোভে  আরো কৃষকরা  বলেন, সংশ্লিষ্ট প্রশাসন যদি দ্রত ব্যবস্থা না নেয়, তবে তারা উপজেলা পরিষদ ও জেলা প্রশাসক কার্যালয় ঘেরাওসহ আরও বড় কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন।

এ বিষয়ে হানিফ আলী ও ঝর্ণা বেগম বলেন আমরা আমাদের কেনা জমিতেই মাটি ভরাট করেছি।

আর এ ব্রীজের মুখে মাটি ভরাট কাজে সহায়তাকারী ফরিদ বলেন, জমির মালিক খুব গরীব, তাদের নিজেদের জমিতে মাটি ভরাট করেছে। তাদের নিকট একটি পক্ষ চাঁদা দাবী করেছিল , চাঁদা না পেয়ে এবং আমাদের চরিত্র হনন করার জন্য এ বিক্ষোভের  আয়োজন করেছে।

সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইকবাল হোসেন বলেন, এ বিষয়ে কোন লিখিত অভিযোগ আমি হাতে পাইনি। আপানদের মাধ্যমে জানতে পারলাম। আমি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তদন্ত করে দেখব। অভিযোগের সত্যতা পেলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।