শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, একাত্তর ও পচাত্তরের ঘাতকরা এক ও অভিন্ন। ষড়যন্ত্রকারীরা চিহ্নিত। তারা এখনো বিভিন্নভাবে সক্রিয়। তাই সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। সব রকমের ভন্ডামি ভুলে সাদাকে সাদা কালোকে কালো বলতে হবে। গণতন্ত্রের নামে ধর্মীয় সন্ত্রাস মেনে নেয়া যায় না।
সোমবার বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
বুয়েটের উপাচার্য সত্য প্রসাদ মজুমদারের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় শিক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু তার ২৩ বছরের রাজনৈতিক জীবনে কখনো কোনো হটকারী সিদ্ধান্ত নেননি। তিনি ভবিষ্যত দেখতে পেতেন। তিনি গোড়া থেকেই পূর্ববাংলার স্বাধীনতার কথা বলেছেন। তার ৬ দফা ছিল স্বাধীনতার সেতু। তাই পাকিস্তান তা মেনে নিতে পারেনি। পাকিস্তান সব সময় চেয়েছে তাকে রাষ্ট্র ক্ষমতার বাইরে রাখতে। তিনি ধাপে ধাপে স্বাধীনতার জন্য বাঙালিকে তৈরি করেছিলেন। ৭ মার্চের ভাষণে তিনি নিরস্ত্র বাঙালিকে একটি সশস্ত্র যুদ্ধের জন্যে তৈরি করেছিলেন। কিন্ত তিনি এই ভাষণে স্বাধীনতার ঘোষণা দেননি। তারও একটা যৌক্তিকতা ছিল। তিনি চেয়েছিলেন বিচ্ছিন্নতাবাদী বলে যেন আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে না পারে। যখনই পাকিস্তান পূর্ববাংলায় গণহত্যা শুরু করলেন তখনই তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিলেন। এবং তখনই সারা বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষ আমাদের স্বাধীনতার পক্ষে দাড়িয়েছিলো। এটাই ছিলো বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শিতা।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর রাজনীতির বিপরীত ধারা সামরিক স্বৈরাচার, অপরাজনীতি, ধর্মকে ক্ষুদ্র ও হীনস্বার্থে ব্যবহার করার রাজনীতি। রাজনীতি একটি ইতিবাচক বিষয়। কিন্তু রাজনীতির এই ভিন্ন ধারায় আদর্শিক কিছু খুঁজে পাওয়া যায়নি। আওয়ামী লীগ যে আদের্শের রাজনীতি করে, তা উদার মানবতাবাদী, অসাম্প্রাদায়িক রাজনীতি, সেই রাজনীতির বিরোধিতা করা ভিন্ন ধারার রাজনীতির মূল উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য। অর্থাৎ পুরোটাই নেতিবাচক। একটি আদর্শের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান। তাদের নিজস্ব কোনো আদর্শিক অবস্থান খুঁজে পাওয়া যায় না। তারা নিজেদের আদর্শকে সামনে আনছেন না। কারণ মানুষ হত্যা করা ষড়যন্ত্র করা, কু-করা, আগ্নিসন্ত্রাস করা এগুলো কোনো আদর্শ হতে পারে না। এগুলো রাজনীতির উপাদান হতে পারে না। বঙ্গবন্ধু এই অপরাজনীতির বিপক্ষে দাঁড়িয়ে মানুষের অধিকারের পক্ষে, অসাম্প্রদায়িক গণতন্ত্রের পক্ষে রাজনীতি করেছেন।