সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক দুটি দেশের মুদ্রা এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ১২টি দেশের মুদ্রা নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছিলেন।
নৌপথে পালানোর সময় তল্লাশি করে এসব মুদ্রাসহ তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে মুদ্রাগুলো জব্দ করা হয়।
ঢাকার সদরঘাট থেকে গ্রেপ্তারের পর সেখানে তাকে তল্লাশি করে এই বিপুল পরিমাণ বিদেশি মুদ্রা পাওয়া যায় বলে বুধবার রিমান্ড আবেদনের বর্ণনায় লিখেছেন তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক মো. সজীব মিয়া।
পরে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষে এক হকারের মৃত্যুর ঘটনায় হওয়া হত্যা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের ১০ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় হকার শাহজাহানকে (২৪) হত্যার অভিযোগে করা ঢাকার নিউ মার্কেট থানার এক হত্যা মামলায় বেক্সিমকো গ্রুপের অন্যতম এই মালিককে মঙ্গলবার সদরঘাট থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
রিমান্ড আবেদনের বর্ণনায় বলা হয়েছে, সালমান এফ রহমানের কাছে থেকে ১২ হাজার ৬২৪ মার্কিন ডলার, ৬২০ সুইস ফ্রাঙ্ক, সাড়ে ৮ হাজার দিরহাম, উজবেকিস্তানের ১৩ লাখ সোম, ১১ হাজার ৬৫০ রিয়াল, ৭৭৯ সিঙ্গাপুরী ডলার, দেড়শ’ পাউন্ড, ১ হাজার ৩২১ ইউরো, ৫০ হাজার টাকা, ভুটানের ৬ হাজার ২৩০ গুলট্রাম, ১ হাজার রুপি, থাইল্যান্ডের ৩ হাজার ৩২০ বাথ জব্দ করা রয়েছে।
গ্রেপ্তারের সময় সালমান এফ রহমানের কাছ থেকে পাঁচটি সবুজ রঙের পাসপোর্ট ও একটি কূটনৈতিক পাসপোর্ট পাওয়ার তথ্য রিমান্ড আবেদন যুক্ত করা হয়েছে।
সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের কাছে ১৭ হাজার ৫১২ ইউএস ডলার, ৭২৬ সিঙ্গাপুরী ডলার ও তিনটি কূটনৈতিক পাসপোর্ট পাওয়া গেছে বলে রিমান্ড আবেদন বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে গ্রেপ্তার সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হককে গোয়েন্দা কার্যালয় থেকে বুধবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়।
এদিকে, বিডিনিউজ জানিয়েছে, আদালত সূত্রে জানা গেছে, সালমান ও আনিসুলের পক্ষে কয়েকজন আইনজীবী ওকালতনামা জমা দিতে গেলে বিএনপি-জামায়াতপন্থি আইনজীবীদের তোপের মুখে তারা আদালত ছেড়ে চলে যান।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানকে বুধবার হেলমেট ও বুলেটপ্রুফ ভেস্ট পরিয়ে ঢাকার আদালতে আনা হয়।
গত ১৬ জুলাই কোটা আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় পাপোশের দোকানের কর্মচারী শাহজাহান আলীকে হত্যার অভিযোগে তার মা আয়শা বেগম মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করা হয়েছে। এই মামলায় আনিসুল হক ও সালমান এফ রহমানকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।