মো ইপাজ খাঁ মাধবপুর হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
জলবাযু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট নানাবিধ প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে হাওর অঞ্চলের কৃষক প্রায় সময়ই ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে থাকে। এমনিতেই তাঁরা একটি ফসল ফলায়। তাই বোরো ধান সংগ্রহের পূর্বে সর্বদাই তাদের মধ্যে একটা আতংক কাজ করে থাকে। কখন চৈতালি ঢল এসে তাদের ক্ষেতের সোনার ফসল ঢুবিয়ে নষ্ট করে ফেলে। এমন আতঙ্ক বিরাজ করে কৃষকের মাঝে। এমতাবস্থায় স্থানীয় এনজিও ‘এসেড হবিগঞ্জ’ এবং জাপানী এনজিও শেয়ার দ্যা প্লানেট এসোসিয়েশন জাইকা’র আর্থিক সহায়তা নিয়ে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু করে ২০২২ সালে। এই প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ ধান গবেষনা ইনস্টিটিউট এর উদ্ভাবিত ব্রি ধান ৮৮, ব্রি ধান ৯৬, ব্রি হাইব্রিড ধান ৩, ব্রি হাইব্রিড ধান ৫ কৃষকের জমিতে চাষের উদ্যোগ গ্রহণ করে। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে চলতি বছর হবিগঞ্জ জেলার কৃষকের মাঝে ৫ হাজার কেজি ধান বীজ সরবরাহ করে। এ বছর নতুন আরো একটি স্বল্প জীবনকালের অধিক ফলনশীল ধান ব্রি হাইব্রিড ধান ৮ কৃষকের জমিতে চাষের জন্য সরবরাহ করে। কৃষকরা তাদের জমিতে এর চাষাবাদ করে বর্তমানে ধান কেটে ঘরে তুলছে।
এর আগে ২৪ এপ্রিল ব্রি হাইব্রিড ধান ৮ এর চাষ করেছে এমন কৃষকের জমিতে ফসল কর্তন ও মাঠ দিবসের আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মোঃ শাহজাহান কবীর, বিশেষ অতিথি ছিলেন শেয়ার দ্যা প্লানেট এসোসিয়েশন এর নির্বাহী পরিচালক মি. তেৎসুই সুতসুই, ব্রি আঞ্চলিক কার্যালয় হবিগঞ্জ এর প্রধান ড. মামুনুর রশীদ এবং শেয়ার দ্যা প্লানেট এসোসিয়েশন এর বাংলাদেশ প্রতিনিধি কৃষিবিদ পরিমল কুমার রায়। সভাপতিত্ব করেন এসেড হবিগঞ্জ এর প্রধান নির্বাহী জাফর ইকবাল চৌধুরী। অনুষ্ঠানে ফসল কর্তনের পর ফলন পরিমাপ করা হয়। প্রচলিত বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে পরিমাপের পর হেক্টর প্রতি ফলন পাওয়া যায় ১৪ মে.টন। অনুষ্ঠানে ব্রি মহাপরিচালক তার বক্তব্যে বলেন হাওরাঞ্চলের কৃষকরা অধিক ফসল চান। সেই কথাটি মাথায় রেখে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট উফসী ইনব্রিড জাতের ধানের পাশাপাশি একাধিক হাইব্রিড জাতের ধানের বীজ উদ্ভাবন করেছে। আজকে তেমনি একটি ধানের মাঠ দিবস পালন করা হলো। ফলন যা হয়েছে তা কৃষকের প্রত্যাশা সম্পূর্ণরূপে পূরণ করবে। তিনি আরো বলেন বর্তমানে ধানের ক্ষেতে বাস্টসহ নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হয়ে কৃষক ফসল কম পাচ্ছেন। এ বিষয়টি মাথায় নিয়ে আমরা আরো নতুন নতুন ধানের জাতের উদ্ভাবন প্রক্রিয়া চালু রেখেছি। অচিরেই আমাদের কাছ থেকে কৃষকরা এমন জাতের ধান পাবে যেগুলোতে বাস্ট রোগের আক্রমন তুলনামূলক কম হবে। তিনি তাদের আবিষ্কৃত জাতের ধান কৃষকদের মাঝে দ্রত ছড়িয়ে দেয়ার জন্য বিশেষ প্রকল্প হাতে নেয়ায় শেয়ার দ্যা প্লানেট এসোসিয়েশন ও এসেড হবিগঞ্জ-কে ধন্যবাদ জানান। পাশাপাশি এমন কাজে সহায়তার জন্য জাইকা’র প্রশংসা করেন।