নিজস্ব প্রতিবেদক মোঃ এরশাদ চৌধুরী .চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশে অবস্থিত চট্টগ্রাম পার্কভিউ হসপিটাল কতৃপক্ষ মানবিকদূত হয়ে পাশে দাঁড়ালেন চট্টগ্রাম সীতাকুন্ডের কেশবপুর এলাকার বিএম কন্টেইনার ডিপোতে ভয়াবহ অগ্নিকান্ড ও বিস্ফোরণের ঘটনায় আহত রোগীদের চিকিৎসা সেবায় অন্তিম ভূমিকা রেখে চলছেন৷
গত শনিবার(৪ জুন) রাত ১১টার দিকে অগ্নিকান্ড নিয়ন্ত্রনে কাজ করতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৯ সদস্যসহ অন্তত ৪৬ জন নিহত হয়েছে,বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে প্রায় ১শ’র অধিক আহত রোগী৷
পার্কভিউ হসপিটালের ইমারজেন্সি ইউনিট থেকে ফ্রি চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে প্রায় ৫০ জনকে। গুরুতর অগ্নিদগ্ধ ১৭ জনকে পার্কভিউ হসপিটালে চিকিৎসা সেবা প্রদান করার জন্য ভর্তি করা হয়েছে। গুরুতর অগ্নিদগ্ধ দের মধ্যে ১ জনের লাশ আনা হয়েছে নাম মহিউদ্দিন বয়স ২২, লাশ পরবর্তীতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে হস্তান্তর করা হয়েছে এবং ৫ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।
বর্তমানে চট্টগ্রাম তথা দেশসেরা বেসরকারি হাসপাতাল হিসাবে পরিচিত পার্কভিউ হসপিটালে চিকিৎসাধীন আছেন ১২ জন,তার মধ্যে নুরুল কাদের নামের একজন আইসিউতে আছেন৷
ঘটনার দিন থেকে শুরু করে এই পর্যন্ত বিলাশবহুল এই হসপিটালে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন অগ্নিকান্ডে আহত প্রায় ৫০ জন রোগী,এখনও আরো ১২জন রোগী গুরুতর অবস্থায় পার্কভিউ হসপিটালে উন্নত চিকিৎসা নিচ্ছেন,রোগীদের ঔষুধ থেকে শুরু করে রোগীর স্বজনদের খাবারের ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন পার্কভিউ হসপিটাল কতৃপক্ষ৷
আহত কয়েকজনের স্বজনদের সাথে কথা বললে তারা বলেন আমাদের যে আর্থিক ক্ষমতা এইরকম হসপিটালে চিকিৎসা নেওয়া কখনও সম্ভব হতোনা যদি হসপটাল কতৃপক্ষ নিজ দায়িত্বে সবকিছু বহন না করতো,তারা বলেন এখানকার সিষ্টেম খুবই ব্যয়বহুল তবুও হসপিটালে টাকার রোগী আর ফ্রি রোগী কোনরকম পার্থক্য নেই,সবার ক্ষেত্রে একইমানের সেবা৷
পার্কহসপিটালের পরিচালকডাঃ এটিএম রেজাউল করিমের ছোট ভাই সাবেক কেন্দ্রিয় ছাত্রলীগ নেতা সিরাজুল করীম বিপ্লবের সাথে একান্ত আলাপের সময় তিনি জানান ঘটনার দিন আমার বড় ভাই ডাঃ এটিএম রেজাউল করীম আমাকে ফোন করে বলেন দূরত পার্কভিউতে যেতে তিনিও আসতেছেন,আমি গিয়ে দেখি একের পর এক গুরুতর আহত অগ্নিদগ্ধ রোগী আসতেছে,সকলের সাথে আমিও আহতদের হাত দিয়ে ধরে জরুরী বিভাগে নিয়ে গেছি,আমি দেখেছি কেমন পরিস্থিতি মানুষের আর্তনাদ,তিনি আরো বলেন আমার বড় ভাই ডাঃ এটিএম রেজাউল করীমের কাছে জানতে চাইলাম ভাইয়া এত রোগীর চিকিৎসার খরচ কে বহন করবে? ভাই আমাকে উত্তরে বললেন জীবনে অনেক টাকা দেখেছি এদের সেবা করলে আল্লাহ দেবে,তাছাড়া এইরকম দূর্যোগ শুধু সরকারের নয় সকলের দায়িত্ব এগিয়ে আসা কারণ দেশও আমাদের মানুষগুলোও আমাদের,যতদিন সুস্থ না হয় প্রতিটি রোগীর খরচ আমরা বহন করব,ভাই’র কথাগুলো শুনে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে রইলাম এবং সস্তি পেলাম কঠিন মূহর্তগুলো সহজ হয়ে যায় এইরকম মানুষগুলোর মানবিকতায়৷
প্রসঙ্গ: ২০১৯ সাল থেকে যখন করোনা মহামারী পুরো বিশ্বব্যাপি ছড়িয়ে পরে তখন ২০২০ সালের শুরু থেকে চট্টগ্রাম পার্কভিউ করোনা ইউনিট চালু করেন এবং শত শত করোনা রোগীর চিকিৎসা সেবা দেন,যাদের আর্থিক অসচ্ছল তাদের দিয়েছেন ফ্রি সেবা,যদিওবা হসপিটালটিতে চিকৎসা খরচ ব্যয়বহুল তবুও নানা সময় বিভিন্ন রোগীদের মোটা অংকের ডিসকাউন্টসহ নানাভাবে সহযোগীতা করা হয়৷
চিকিৎসার মান ও সেবা আর অভিজ্ঞ চিকিৎসক নার্সদের দক্ষ সেবার কারণে পার্কভিউ হসপিটাল চট্টগ্রামে সবার শীর্ষ্যে রয়েছে শুধু তা নয় দেশ সেরা কয়েকটি হসপিটালের মধ্যে পার্কভিউ হসপিটালও একটি,পার্কভিউ হসপিটাল কতৃপক্ষের মানবিকতার উদাহারণ থাকবে সাধারণ মানুষের হৃদয়ের মাঝে৷
যে পরিমাণে মানবতার সেবায় এগিয়ে এসেছে তা গোটা বাংলাদেশের জন্য দৃষ্টান্ত এবং উদাহরণও বটে তাদের পাশাপাশি পার্কভিউ হাসপাতাল যে নজির স্থাপন করেছে এবং করে যাচ্ছে তাতে এই মানবিক প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে চট্টগ্রামবাসী গর্ব করতে পারব, দেশের ও চট্টগ্রামের যে কোন কঠিন পরিস্থিতির পাশে দাড়াতে চট্টগ্রাম পার্কভিউ হাসপাতাল লিমিটেড বদ্ধপরিকর, অতীতের করোনা থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত সেবা কে গুরুত্ব দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে চট্টগ্রামের আপামর জনসাধারণের ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা নিয়ে।