বান্দরবানের থানচি শাখার সোনালী ব্যাংক থেকে ১৫ লাখ ও কৃষি ব্যাংক থেকে ৭ লাভ টাকা লুট করেছে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট-কেএনএফকে দায়ী করছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা জানায়, চাকরিজীবীদের ঈদের বেতন ও বোনাস ব্যাংকে আনার পর তাতে নজর দিয়েছে সন্ত্রাসীরা। দুপুরে একদল সন্ত্রাসী থানচির সাইজন বমপাড়া এলাকার রাস্তা দিয়ে ট্রাকে এসে থানচি সোনালী ব্যাংক ও কৃষি ব্যাংকে হানা দেয়। এ সময় তারা বাইরে ফাঁকা গুলি চালিয়ে ব্যাংকের ভেতরে প্রবেশ করে। তারা ক্যাশে থাকা নগদ টাকা নিয়ে গেছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মামুন জানিয়েছেন, আজ বুধবার দুপুরে থানচি শাখার সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে একদল অস্ত্রধারী ডাকাত ডাকাতি করে। এখন পর্যন্ত যতটুকু জানা গেছে, সোনালী ব্যাংক থেকে প্রায় ১৫ লাখ এবং কৃষি ব্যাংক থেকে প্রায় ৫-৭ লাখ টাকা নিয়ে গেছে ডাকাতরা। তবে ডাকাতরা ব্যাংকের ভল্ট খুলতে পারেনি। তারা কাউন্টারে রাখা ও গ্রাহকদের উত্তোলন করা টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে।
থানচি থানার ওসি বলেন, থানচিতে ব্যাংকে সন্ত্রাসীরা হানা দিয়েছে। এ ছাড়া ফাঁকা গুলির ঘটনাও ঘটেছে। তবে কত টাকা লুট হয়েছে তা জানা যায়নি। এ ঘটনায় হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
বুধবার (৩ এপ্রিল) বান্দরবানের সব ব্যাংকের কার্যক্রম নির্ধারিত সময়ের আগেই বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
এর আগে, মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) বান্দরবানের রুমায় উপজেলা প্রশাসন কমপ্লেক্স ভবনে হামলা চালিয়ে সোনালী ব্যাংক থেকে অস্ত্র ও টাকা লুট করে নিয়ে যায় অস্ত্রধারী একদল ডাকাত। এ সময় তারা মসজিদ থেকে ব্যাংকের ম্যানেজারকেও অপহরণ করে নিয়ে যায়।
এদিকে বান্দরবানের রুমায় সোনালী ব্যাংকে ডাকাতির ঘটনার ১৬ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও অপহৃত ব্যাংক ম্যানেজার নিজাম উদ্দিনের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
বুধবার (৩ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে অপহৃত ব্যাংক ম্যানেজার নিজাম উদ্দিনের স্ত্রী ইশফাত বলেন, কোনো পক্ষ এখনো আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। কোনো মুক্তিপণও দাবি করেনি। তিনি তার স্বামীকে সুস্থ অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সরকারের সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করেন।
নিজাম উদ্দিনের বড় ভাই চট্টগ্রাম কর্ণফুলী থানার এসআই মিজান উদ্দিন বলেন, আমি এখন রুমায় আছি। ভাইয়ের এখনো কোনো খবর পাইনি।
সেনাবাহিনী, পুলিশ এবং অন্যান্য সংস্থার সমন্বয়ে যৌথ অভিযান চলছে বলেও জানা গেছে।
ব্যাংকে ডাকাতি ও ম্যানেজারকে অপহরণের ঘটনায় বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ‘কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)’-এর জড়িত থাকার কথা উঠছে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, নানা ইঙ্গিতে নামগুলো উঠে আসছে। তবে তদন্ত সাপেক্ষে বিষয়টি জানানো হবে।
জেলা পুলিশ সুপার সৈকত শাহীন বলেন, হামলাকারীরা ব্যাংকের আইনশৃঙ্খলায় নিয়োজিত পুলিশ ও আনসার সদস্যের অস্ত্র-গুলিও লুট করেছে। যারাই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকুক তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।