আরিফুল ইসলাম, সৌদি আরব প্রতিনিধি।।”প্রবাসীর অধিকার, আমাদের অঙ্গীকার, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ, আমাদের সবার” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বাংলাদেশ দূতাবাস রিয়াদ, সৌদি আরবে যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপিত হলো ‘আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ও জাতীয় প্রবাসী দিবস, ২০২৪’। এ উপলক্ষ্যে আজ দূতাবাসের অডিটোরিয়ামে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
আলোচনা সভায় মিশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ এবং রিয়াদস্থ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার প্রবাসী বাংলাদেশীগণ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টা, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় বিষয়ক উপদেষ্টা, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বাণী পাঠ করা হয়। এ উপলক্ষ্যে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় হতে প্রাপ্ত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
আলোচনা অনুষ্ঠানে রিয়াদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স এস এম রকিব উল্লাহ সৌদি আরবের ৩৩ লক্ষ প্রবাসী বাংলাদেশীকে অভিনন্দন জানান এবং বাংলাদেশের অর্থনীতিতে তাদের অবদানের কথা কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করেন। তিনি জানান আগামী এক দশকে সৌদি আরবে ২০২৭ সালে এএফসি এশিয়া কাপ ফুটবল প্রতিযোগিতা, ২০২৯ সালে শীতকালীন এশিয়ান অলিম্পিক, ২০৩০ সালে ওয়ার্ল্ড এক্সপো এবং ২০৩৪ সালে ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবল প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়াও নিওম, রেড সি, কিদ্দিয়া, গ্রিন রিয়াদ, আমালা, দিরিয়া, রোশন ইত্যাদি গিগা প্রকল্প বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে। ফলে সৌদি আরবে বাংলাদেশের শ্রমবাজার সম্প্রসারণের অপার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
তিনি বলেন অনেক প্রবাসী ভাষা না শিখে এবং দক্ষতা অর্জন না করে সৌদি আরবে এসে বিপদে পড়েন। তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন টেকন্যিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার (টিটিসি) হতে বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ গ্রহণের উপর গুরুত্বারোপ করেন। সৌদি সরকার বর্তমানে বাংলাদেশে স্কিল ভেরিফিকেশন প্রোগ্রাম বাস্তবায়ন করছে। এই কর্মসূচির আওতায় ৩৩টি পেশায় বাংলাদেশে পরীক্ষা নিয়ে সৌদি সরকার দক্ষতার সনদ প্রদান করছেন। তিনি দক্ষতা অর্জন করে দক্ষতার সনদ নিয়ে সৌদি আরবে আসার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে উদাত্ত আহ্বান জানান।
চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স সৌদি আরবের আইন-কানুন ও রীতিনীতি মেনে চলার জন্য সৌদি প্রবাসী সকল বাংলাদেশীকে অনুরোধ জানান। তিনি সকল শ্রেণী-পেশার প্রবাসী বাংলাদেশীকে বৈধ পথে কষ্টার্জিত আয় প্রেরণের জন্য অনুরোধ জানান। হুন্ডির মাধ্যমে টাকা না পাঠাতে সকলকে অনুরোধ করেন। তিনি প্রবাসে সকল বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ থাকার ও আহ্বান জানান।
উক্ত অনুষ্ঠানে ডিফেন্স অ্যাটাশে জনাব ব্রিগেডিয়ার মোহাম্মদ রেজাউল করীম এন ডি সি, মিনিস্টার কন্স্যুলার জনাব ব্যারিস্টার মোশারফ হোসেন, মিনিস্টার ইকোনোমিক জনাব মর্তুজা জুলকারনাইন নোমান, শ্রম কাউন্সেলর জনাব মুহাম্মাদ রেজায়ে রাব্বীসহ দূতাবাসের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের শেষে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর শহীদ, জুলাই-আগস্টে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদদের রুহের মাগফেরাত এবং সকল প্রবাসী ও বাংলাদেশের সুখ সমৃদ্ধি কামনা করে মোনাজাত করা হয়।