Imam Hossain
সফলতার জন্য বয়স নয়, ইচ্ছাশক্তি প্রয়োজন, প্রয়োজন সময়কে সুষ্ঠুভাবে ব্যয় করার। জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় তারুণ্যকে কাজে লাগিয়ে তাই যেন প্রমাণ করলেন মাহির ওয়ালিদ। বয়স বিশ ছাড়ানোর আগেই তৈরী করেছেন নিজের একাধিক পরিচয়। নিজেকে তুলে ধরেছেন বিশ্বের দরবারে।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের সর্বকনিষ্ঠ কান্ট্রি হেড হিসেবে মাহির ওয়ালিদ দায়িত্বপালন করেছেন পিসএক্স (ইন্টারন্যাশনাল ইউথ অর্গানাইজেশন)-এ। পাশাপাশি কান্ট্রি চেয়ারপার্সন হিসেবেও কাজ করেছেন দ্যা রোড টু রাইট-এ। এবং বর্তমানে বাংলাদেশেরই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কোম্পানি ইন্টেলসেন্স এআই এর এইচ.আর অ্যান্ড কোঅর্ডিনেশন ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত আছেন।
কেবল গঠিত সংস্থায় কাজ করেই ক্ষান্ত হননি মাহির, নিজেই গঠন করেছেন রেভেনল্যান্ড ও বি দ্যা চেঞ্জ নামে দুটি সংস্থা। যেগুলোতে কাজ করছেন প্রায় সব মিলিয়ে ৩০০ এর বেশী যুবশক্তি। এই দুটি সংস্থার মাধ্যমে তিনি কাজ করছেন জাতিসংঘের টেকশই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার ১, ৪ এবং ৮ নং গোল নিয়ে।
বয়স পঁচিশে পৌঁছানোর আগেই মাহির ওয়ালিদ ইতোমধ্যে পাঁচ হাজারের অধিক যুব উন্নয়নে কাজ করেছেন। কেননা মাহির বিশ্বাস করেন যে- “আমরা যদি কোন জাতির উন্নয়ন করতে চাই তবে আমাদের সে জাতির যুব সমাজের উন্নয়ন করতে হবে”।
মাহির তার কাজের ফলস্বরূপ বৈশ্বিক মঞ্চ থেকে পেয়েছেন একাধিক সম্মাননা। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য,
গ্লোবাল ইয়ুথ লিডারশীপ অ্যাওয়ার্ড ২০২৩,
কমনওয়েলথ ১০০: ওপেন সোর্স লিডার ২০২০,
এশিয়ান ইন্টারন্যাশনাল এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড,
ইউপিজি সাসটেইনেবলিটি লিডার অ্যাওয়ার্ড ২০২১ ও ইউপিজি বিয়াশারা উদ্যোক্তা অ্যাওয়ার্ড ২০২২। এছাড়াও দেশীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে পেয়েছেন আরো অনেক সম্মাননা। সম্প্রতি বিডিজবসের সবথেকে বড় জব ফেয়ারে এইচ.আর ইন্ডাস্ট্রি এক্সপার্ট হিসাবে ডাক পেয়েছেন।
তবে এ সকল সম্মাননা মাহির ওয়ালিদের মধ্যে অহমিকা এনে দেয়নি, বরং দেশ ও সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ থেকে তিনি সবসময় যুব উন্নয়ন, বাস্তবিক শিক্ষা ও টেকসই উন্নয়নে কাজ করে গিয়েছেন। তার ভাষ্যে- “মানুষের জীবন খুবই ছোট। এই ছোট জীবনটা তখনই অর্থপূর্ণ হয়, যখন সে মানুষ, সমাজ তথা দেশের কাজে আসতে পারে, সামান্যতম হলেও”।
কিন্তু এত অল্প বয়সে এত দূর পৌঁছে যাবার যাত্রা এতটাও সহজ ছিলনা। দীর্ঘদিনের অধ্যবসায় আর পরিশ্রমেই আজকের এই অবস্থান। পিছনে তাকালে দেখা যায় বাল্যকাল থেকেই মাহির সমাজে অবদান রাখার অদম্য এক ইচ্ছা নিয়ে বেড়ে উঠেছেন। কৈশোর থেকেই এগিয়েছেন সে লক্ষ্য পূরণে।উচ্চমাধ্যমিকের পর নিজের লক্ষ্য পূরণের জন্য বন্ধু-প্রতিবেশী সকলের বাঁকা নজর উপেক্ষা করে সকলের থেকে নিজেকে কিছুটা বিচ্ছিন্ন করেই জন্মস্থান খুলনা শহর ছেড়ে চলে আসেন ঢাকায়, ভর্তি হন আর্মি আইবিএতে। এ সময়ে আশেপাশের মানুষদের হিংসা, বিদ্রুপই হয়ে ওঠে প্রধান চ্যালেঞ্জ। পাশাপাশি, এগিয়ে চলার মূল বীজ সরাসরি নেটওয়ার্কিং এর পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় বৈশ্বিক মহামারি করোনা। তবে মাহির থেমে থাকেননি। একক প্রচেষ্টায় নিজেকে তৈরী করার জন্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীনই দেশ-বিদেশের বারোটিরও বেশি ছোট বড় সংস্থার সাথে কাজ করে প্রতিনিয়ত নিজেকে প্রস্তুত করেছেন এবং এখনও করে যাচ্ছেন আজকের এই মাহির ওয়ালিদ।
প্রেক্ষাপট ভিন্ন হলেও- “এখন যৌবন যার, যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়” কবিতার এ পঙতিকে আক্ষরিক অর্থ দিয়েছেন মাহির। সমাজ ও যুব উন্নয়নের যুদ্ধে যুবা বয়সের এই মহামূল্যবান সময়কে সঠিক ব্যবহার করছেন তিনি। মাহির আশা করেন তার মতো হাজারো “মাহির ওয়ালিদ” তৈরী করার যাঁরা দেশকে বার বার তুলে ধরবেন বিশ্বের মঞ্চে।