তালুকদার ফয়সাল, স্টাফ রিপোর্টার:
আজ বুধবার সকাল ১১ টায়
জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে ‘স্বাস্থ্যখাতে সাম্প্রতিক অস্থিরতা এবং উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক সংবাদ সন্মেলন করেন চিকিৎসকদের সংগঠন
ফাউন্ডেশন ফর ডক্টরস’ সেফটি রাইটস এন্ড রেস্পন্সিবিলিটিজ।
সংগঠনের উপদেষ্টা ডা. আব্দুন নূর তুষার সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন। সংগঠনের মহাসচিব ডা শেখ আব্দুল্লাহ আল মামুন স্বাগত বক্তব্য দেন।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তরা স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় অব্যবস্থাপনা, ডাক্তার নার্স ও অন্যান্যদের প্রতি অবহেলা মূলক অবান্ধব নীতি প্রণয়ন নীতি প্রণয়ন, দুর্নীতি ও কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার অভাব, চিকিৎসা সেবা ও চিকিৎসা শিক্ষা গ্রহণে নৈরাজ্য বিরাজমানের অভিযোগ করে বলেন-
১. অস্ত্রোপচার তখা সামান্য খাৎনার সময়ও রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ও রোগ নির্ণয়কারী পরীক্ষার সময় রোগীর মৃত্যু আমাদের উৎকন্ঠিত করে। তবে কোন তদন্ত ছাড়াই সরাসরি ডাক্তারদের দোষী করে সংবাদ শিরোনাম অনেক সময়ই অনাকাংখিত পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটায়। যে কোন অভিযোগে অভিযুক্তের বক্তব্য প্রচার করা ছাড়াই কেবল অভিযোগ তুলে ধরলে বিষয়টি একপাক্ষিক হয়ে যায়। তাছাড়া রোগীর বন্ধু বান্ধব এমনকি ফুড ভ্লগার বন্ধুও ডাক্তারের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিলে সেটাও প্রচার করলে ডাক্তারের বন্ধু বান্ধবের বক্তব্য প্রচার করা কি উচিত নাকি অনুচিত? আমরা মনে করি যেহেতু দেশে চিকিৎসায় অবহেলা বা ভুল বা যে কোন অভিযোগ নিরসনের জন্য অভিযোগ করার প্রতিষ্ঠান বিএমডিসি আছে – তাই বিএমডিসিতে অভিযোগ করার প্রক্রিয়া আরো সহজ করে ও ইনফর্মড কনসেন্ট এর সাথে সকল হাসপাতালে সরাসরি বিএমডিসিতে অভিযোগ দেবার জন্য অভিযোগ বাক্স স্থাপন ও এ সংক্রান্ত তথ্য রোগীকে দিয়ে রাখলে এই রকম যা খুশি তাই সংবাদ পরিবেশন কমতে পারে। পৃথিবীর অন্যতম উন্নত দেশে প্রতিবছন আঠারো হাজার এরকম কেস হয়ে থাকে। পঞ্চাশ হাজারের বেশি রোগী নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকেন। তাই চিকিৎসাজনিত ভুল হয় না এমনটি ভাবার কোনো কারণ নাই। তবে সেই ভুল কি ইচ্ছাকৃত কিনা অথবা এটির জন্য অন্য কেউ দায়ী কিনা সেটা না জেনে ঢালাও সংবাদ পরিবেশন করলে সাধারণ জনগণের চিকিৎসা ব্যহত হয়। যেমন খাৎনাজনিত মৃত্যুর একটি ঘটনা যেভাবে প্রচার পেয়েছে সেই একই সময়ে হাজামরা একাধিক শিশুর লিংগ কেটে ফেলেছেন যা হাসপাতালে চিকিৎসকরা জোড়া দিয়েছেন। এই সংবাদগুলো কখনো গুরুত্ব পায় না।
চিকিৎসাজনিত ভুল অস্বাভাবিক নয়। এরজন্য রোগীকে ক্ষতিপূরণ সহ চিকিৎসকের লাইসেন্স বাতিলের বিধান আছে। আমরা মনে করি রোগী ও চিকিৎসক উভয়ের স্বার্থে এই অভিযোগগুলোর বিহিত হওয়া জরুরী। তাই বলে একে ফৌজদারী অপরাধ হিসেবে গণ্য করে চিকিৎসককে গ্রেফতার ও জামিন প্রদান না করা সঠিক হতে পারে না। সেন্ট্রাল হাসপাতালে মূল অভিযুক্ত চিকিৎসককে বাদ দিয়ে জরুরী চিকিৎসা দিতে আসা চিকিৎসককে জামিন না দেয়া ও সহকারীদের আটক করে রাখা চিকিৎসকদের প্রতি ন্যয়সংগত আচরণ ছিলো না। পেশাগত অন্যায় বিচার করার কাজ প্রাথমিকভাবে পেশাগত মান নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানের তথা বিএমডিসির। আমরা মনে করি বিএমডিসিকে শক্তিশালী করে এই সমস্যাগুলোকে যথাযথভাবে প্রতিকার করা সহজ। তারপর সংক্ষুব্ধ কেউ উচ্চতর আইনী ব্যবস্থার জন্য আবেদন করতেই পারেন।
২. বাংলাদেশে অধিকাংশ রোগের চিকিৎসায় স্ট্যান্ডার্ড কোন ট্রিটমেন্ট প্রোটোকল তৈরি করা হয় নি। অথচ অবাধ তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে কাজটা আদৌ কঠিন নয়। এ ব্যাপারে বাংলাদেশের বিভিন্ন মেডিক্যাল সোসাইটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। সম্প্রতি মুসলমানি ও এন্ডোস্কোপি করতে গিয়ে অজ্ঞান করা নিয়ে উদ্ভুত জটিলতায় যে তিনজন রোগী মৃত্যু হলো, তা আমাদের আবার ট্রিটমেন্ট প্রোটোকলের প্রয়োজনীয়তার কথা স্মরণ করিয়ে দিলো। বর্তমান প্রেক্ষিতে বাংলাদেশে বলা হচ্ছে যে, কেবলমাত্র এনেসথেটিস্টরাই এসব ক্ষেত্রে রোগীকে ঘুম পাড়ানো বা অজ্ঞান করার কাজটা করবেন। বাংলাদেশ কেন, পৃথিবীর কোন দেশের প্রেক্ষিতে এটি বাস্তবসম্মত কোন ভাবনা নয়। বরং এক্ষেত্রে আমাদের একটা সুনির্দিষ্ট প্রোটোকল থাকা জরুরি, যেখানে লেখা থাকবে একজন ডাক্তার কখন, কোন পরিস্থিতিতে রোগীকে ‘সিডেশন’ দিতে পারবেন এবং কখন সিডেশন ও অজ্ঞান করার জন্য একজন এনেসথেসিস্টদের দরকার হবে। এই প্রোটোকলে আরো লেখা থাকবে, কোন পদ্ধতিতে কী কী জটিলতা হতে পারে এবং সেক্ষেত্রে করণীয় কী? আবার এইসব অপারেশন করা বা পরীক্ষা পদ্ধতি প্রয়োগের আগে রোগীকেও পদ্ধতি সম্পর্কে সম্ভাব্য ঝুঁকিসহ বিস্তারিত সবকিছু জানিয়ে তার বা পক্ষের লিখিত সম্মতি নিতে হবে। চিকিৎসা সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে আমরা যদি এসব ‘স্ট্যান্ডার্ড প্রাক্টিস’ অনুসরণ করি, তাহলে সামগ্রিকভাবে পরিস্থিতির উন্নতি হবে। চিকিৎসকদের বিরূদ্ধেও তখন ঢালাওভাবে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ উত্থাপিত হবে না।
৩.চিকিৎসক প্রহার ও নির্যাতনের ঘটনাগুলোর কোনো প্রতিকার হয় না। অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রশাসন এসব বিষয়ে চোখ বন্ধ করে রাখে। এই বিচারগুলি আপোষ মিমাংসা করা হয় প্রশাসন ও একশ্রেনীর ডাক্তার নেতাদের মধ্যস্থতায়। আমরা মনে করি এটি অন্যায়। সাধারণ নাগরিকও প্রহৃত হলে বিচার চাইতে পারে। অথচ সরকারী হাসপাতালে সরকারী চিকিৎসা কর্মকর্তা প্রহৃত হলে – প্রশাসণ সেটা মীমাংসা করার নামে ধামাচাপা দিতে সচেষ্ট থাকে। এই বিষয়ে সরকারী কর্মকর্তার হয়ে মামলাতে স্বাস্থ্য প্রশাসনকে আইনী সহায়তা সহ সবধরণের সমর্থন দিতে হবে ও সরকারী খরচে মামলা পরিচালনা করতে দিতে হবে। সরকারী কাজে থাকা অবস্থায় নিরাপত্তাহীন ডাক্তার কেন তার এই মামলা নিজেখরচে চালাবে? এজন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে তালিকাভুক্ত আইনজীবি প্যানেল রাখার দাবী জানাচ্ছি।
৪.সকল চিকিৎসা কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা সহ উন্নত নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার দাবী জানাচ্ছি।
৫.আসা যাক স্বাস্থ্যসেবার প্রশাসনিক বিষয়ে। ডাক্তারদের প্রমোশন – ট্রান্সফার ও চাকুরীর বিষয়াবলি ইআরপি ও এসএপি জাতীয় সফ্ট্ওয়্যারে নিয়ে এসে অটোমেশন করতে হবে। ঠিক সময়ে বেতনভাতা বৃদ্ধি ও পদায়ন করতে হবে। শিক্ষাছুটি ও অন্যান্য ছুটির বিষয়গুলো সহজ করতে হবে।বিভিন্ন ক্ষেত্রে শুণ্যপদের সংখ্যা আশংকাজনকভাবে বেশি। সরকারী হাসপাতালে চিকিৎসক নাই একথা আপনারা ব্যরিস্টিার সুমনের মুখেও শুনেছেন। চিকিৎসকের পদ খালি রেখে একজনকে দিয়ে তিনজনের কাজ করানোর অমানবিক পদ্ধতি বন্ধ করতে হবে।
৬.নিজখরচে বিদেশে শিক্ষা নিতে ও পরীক্ষা দিতে যাওয়ার ক্ষেত্রে যে বাধা দেয়া হয়েছে তা অযৌক্তিক।এমনকি চিকিৎসা নিতে যেখানে উচ্চপদস্থ ব্যক্তিরা দলে দলে বিদেশে যাচ্ছেন সেখানে বিদেশ থেকে ডিগ্রী আনতে বাধা দেয়ার অর্থ হলো চিরকাল ভিআইপিদের বিদেশে যাওয়ার ব্যবস্থা জারী রাখা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেখানে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণায় জোর দেবার কথা বলেছেন সেখানে ডলার স্বল্পতার অজুহাতে পড়াশোনা ও পরীক্ষায় ছুটি ও জিও না দেয়ার কোনো ব্যাখ্যা থাকতে পারে না। এমনকি একবার চিকিৎসাজনিত ছুটি প্রত্যাখ্যান করে ‘কোন ডাক্তারকে দেখাতে হবে তার নাম লিখে অফিশিয়াল চিঠি দেবার’ মতো হাস্যকরা কান্ডও আমরা দেখেছি। প্রাপ্য ছুটি ও নিয়মাবলী মেনে চিকিৎসকদের শিক্ষা ও বিনোদন ছুটির প্রক্রিয়া সহজ করতে হবে।
৭.কোভিডজনিত মৃত্যুর জন্য ক্ষতিপূরণ দেবার প্রতিশ্রুতির বিষয়ে রহস্যজনক নীরবতা ভবিষ্যত মহামারী এলে চিকিৎসকদের জন্য নিরুৎসাহের কারণ হতে পারে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দেয়া প্রতিশ্রুতি পালনে গড়িমসি করার জন্য কারা দায়ী তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়া দরকার বলে আমরা মনে করি।
৮.ব্যাঙ এর ছাতার চেয়েও বেশি রাজনৈতিক ও অন্যান্য বিবেচনায় অনুমোদিত বেসরকারী মেডিকেলগুলোর মান নিয়ন্ত্রন না করে আসন বৃদ্ধি করা ছিলো এক ভবিষ্যত বিধ্বংসী সিদ্ধান্ত। শাহ মখদুম – নাইটিংগেল – নর্দার্ন – কেয়ার মেডিকেলের মতো আরো বহু মেডিকেল কলেজ আছে যেখানে শিক্ষক স্বল্পতা – উপকরণ স্বল্পতা ও মানহীনতা আছে। এসব বন্ধ না করে খাবার দোকান বন্ধ করে লাভ হবে না। কারণ এসব মেডিকেল থেকে বের হওয়া মানহীণ চিকিৎসকদের হাতে অদুর ভবিষ্যতে সকলেই অনিরাপদ হয়ে পড়বে। ছাত্রছাত্রীরা নিরপরাধ। টাকার লোভে এদের এসব মানহীন মেডিকেল কলেজে যারা ভর্তি করাচ্ছেন ও শিক্ষক না বাড়িয়ে আসন বাড়াচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। যেসব মেডিকেল কলেজে আসন বাড়ানো হয়েছে সেসব আসনবৃদ্ধি আবার পরীক্ষা করে তার যৌক্তিকত বিচার করতে হবে। হাসপাতালের – ভবনের – হোস্টেলের – শিক্ষক ও কর্মচারীদের কলেবর না বাড়িয়ে আসন বাড়ানোর কারণ কি হতে পারে সেটা সহজেই বোঝা যায়।
৯.উচ্চশিক্ষায় রেডিডেন্টদের ভাতা দেয়া নিয়ে জটিলতা নিরসন করতে হবে। এমনিতেই এই ভাতা অপ্রতুল। তার ওপর সেটা নিয়মিত না। বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বারবার চিঠি দেয়ার পরেও অর্থ ছাড় হচ্ছে না। এটা অন্যায়। একদিকে নাই আবাসন – ডাক্তাররা থাকছেন আজিজ মার্কেটের ওপরে এক নিরাপত্তাহীণ ভবনে। অন্যদিকে বেতন পাচ্ছেন না। এটা শ্রমের শোষণ ও শিক্ষার অবমাননা।
১০.ডাক্তারদের বেসরকারী চাকুরীতে ন্যুনতম বেতন নির্ধারণ করে দিতে হবে। ডাক্তারের ভিজিট – রিং এর দাম ঠিক করতে পারলে জুনিয়র ডাক্তারের সম্মানজনক বেতন কেন নির্ধারণ করা যাবে না? জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতি অমানবিক আচরণ ও যখন তখন ছাটাই বন্ধ করার জন্য – বেসরকারী হাসপাতালে শ্রম আইনের আলোকে স্ট্যান্ডার্ড সার্ভিস রুল দিতে হবে।
১১.হাসপাতালে হোমিওপ্যাথ বসে ঔষধ দিয়ে অটিজম সারানোর কথা বলছেন। আয়ুর্বেদ ও ইউনানী ফালসাফা জাতীয় বিদঘুটে নামে রক্ত পরিস্কারক দিচ্ছেন। আর অন্যদিকে ডাক্তার তার অটিজম স্পেকট্রাম ও ডেভেলপমেন্ট অ্যানালাইসিস করছেন, ক্রোমোজমাল অ্যানোমেলি সনাক্ত করছেন।। এই অদ্ভুত কান্ড এই দেশেই সম্ভব। হোমিও আয়ুর্বেদ চিকিৎসা অ্যালোপ্যাথিক হাসপাতালে না দিয়ে তাদের জন্য আলাদা চিকিৎসা কেন্দ্র করা হোক।
১২.ডাক্তারদের পেশাগত সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে। পেশাগত সংগঠন তথা বিএমএ শক্তিশালী হলে তাতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার লাভ। ভালো ট্রেড ইউনিয়ন যেমন শ্রমিকের স্বার্থ সংরক্ষন করে উৎপাদন বাড়ায় ঠিক তেমনি শক্তিশালী বিএমএ ডাক্তারএর স্বার্থ সংরক্ষন করলে সেবার মান বাড়বে। তাই দলীয় হস্তক্ষেপবিহীণ বিএমএ নির্বাচন ও শক্তিশালী বিএমএ গঠন জরুরী। আধুনিক ও গণমুখি স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বিনির্মান ও চিকিৎসকদের পেশাগত স্বার্থ সংরক্ষণে যোগ্য বিএমএ নেতৃত্ব আজ সময়ের দাবী। অতীত অভিজ্ঞতায় আমরা দেখেছি, কোন নেতার ব্যক্তিগত রাজনৈতিক আকাঙ্খার সিড়ি হিসেবে ব্যবহৃত হলে যে কোন পেশাজীবী সংগঠন তার মূল লক্ষ্য অর্জন ক্ষতিগ্রস্থ হয়। আমরা চাই, সকল চিকিৎসক সংগঠনে কমপক্ষে ত্রিশভাগ নারীকে সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে নেতৃত্ব দেবার সুযোগ দেওয়া হোক।
১৩.স্বাস্থ্য বিষয়ক দুর্নীতির বিচার হয় না। অভিযুক্ত আবজল মিঠু গংদের কেশাগ্র স্পর্শ হয় না। ডিজি অফিসের ড্রাইভারের শত কোটি টাকা আবিস্কৃত হয়। করোনার সময় মাস্ক ও টেস্ট কেলেংকারী পুরো স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দুর্নীতি রোধ করতে অডিট জোরদার করতে হবে। এই বিষয়গুলোকে মনিটর করার জন্য আলাদা দুর্নীতি রোধক সেল গঠন করতে হবে।
১৪.সামগ্রিকভাবে বেসরকারী স্বাস্থ্যসেবাখাতের উন্নতির জন্য একটি সময়োপযোগী পরিকল্পনা করে তার বাস্তবায়ন করতে হবে। বেসরকারী খাতকে উপেক্ষা করে সবার জন্য স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা প্রায় অসম্ভব।
দীর্ঘদিন পরে আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ে ইতিবাচক পরিবর্তনের সম্ভাবনার সুবাতাস আশা করছি। দুজন চিকিৎসকের নেতৃত্ব আমাদের আশাবাদী করেছে। এফডিএসআর তাই তাদের সহায়তা করার জন্য এই দাবীগুলো সহ অন্যান্য সমস্যা সমাধানে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দিচ্ছে। ডাক্তার ভালো থাকলে রোগী ভালো থাকবেই। হতাশ নির্যাতিত একদল চিকিৎসক কখনোই রোগীর প্রতি পূর্ণ মনোযোগ দিতে পারবে না। রোগীর স্বার্থ বিবেচনা করলে ডাক্তারদের কর্মকে যথাযথ মূল্যায়ন করতে হবে।
এখানে আমরা যা বলেছি তার সবগুলোই ডাক্তার এর কর্মপরিবেশের উন্নতি করবে ও রোগীর প্রতি সেবার মান বাড়াবে। সাংবাদিক ভাইবোনেদের প্রতি অনুরোধ জানাই – আপনারা এই চাওয়াগুলোকে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়ার মাধ্যমে তাদের স্বার্থ সংরক্ষনে আমাদের প্রতিজ্ঞার বিষয়টি সবাইকে জানাবেন ও সহানুভুতিশীল হয়ে সংবাদ পরিবেশন করে ভবিষ্যত বাংলাদেশের ডাক্তারদের দেশত্যাগ ও পেশাত্যাগের যে প্রবণতা সেটি নিয়ন্ত্রন করতে এগিয়ে আসবেন। তা নাহলে এই নৈরাজ্য ও অস্থিরতার কারণে ভবিষ্যতে দরিদ্র জনতা সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হবে। চিকিৎসা ব্যয় বাড়বে ও বিদেশমুখী রোগীর চাপে রেমিটেন্স এর ডলার আবার বিদেশেই চলে যাবে।
এফডিএসআর এর প্রচার সম্পাদক শাহেদ ইমরানের সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম সম্পাদক ডা রাহাত চৌধুরী, কোষাধক্ষ্য অধ্যাপক ফরহাদ মঞ্জুর, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. এহসানুজ্জামান খান, ভারপ্রাপ্ত আইন বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ডাক্তার অরূপ সাহা, ডা. অসিত মজুমদার, ডা মাসুদ, ডা রায়হান প্রমুখ