স্বৈরাচার রুখতে জুলাইয়ে গণজাগরণের ডাক দিলেন ড. ইউনূস
মঙ্গলবার (১ জুলাই) সকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে ‘জুলাই অভ্যুত্থান স্মরণে’ মাসব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই প্রধান উপদেষ্টা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন আন্দোলনের শহীদ, আহত, এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থাকা ছাত্র, শ্রমিক, শিক্ষক, রিকশাচালকসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে। তিনি বলেন, “শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করে আমাদের মুক্তির স্বাদ দিয়েছে। জুলাই গণতান্ত্রিক আন্দোলনের এক অমোঘ ডাক, যার উদ্দেশ্য ছিল ফ্যাসিবাদের বিলুপ্ত করে জনগণের হাতে রাষ্ট্র ফিরিয়ে দেওয়া।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের সামনের পথ অনেক কঠিন হলেও সম্ভাবনা প্রচুর। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়—যখন জনগণ জেগে ওঠে, তখন কোনো শক্তিই তাকে রুখে দিতে পারে না। এই জুলাইকে গণজাগরণ ও ঐক্যের মাসে পরিণত করতে হবে।”
প্রধান উপদেষ্টা জানান, গত বছরের অভ্যুত্থান ছিল কেবল একটি তাৎক্ষণিক অর্জন নয়, বরং একটি বৃহৎ স্বপ্নের সূচনা—নতুন রাষ্ট্রব্যবস্থা নির্মাণের। তাই এই মাসব্যাপী কর্মসূচি কেবল স্মরণ নয়, বরং একটি নতুন শপথ, যাতে ১৬ বছর অপেক্ষা না করে স্বৈরাচারের প্রথম লক্ষণ দেখলেই তাকে দমন করা যায়।
কর্মসূচি সম্পর্কে ড. ইউনূস বলেন, “আমরা প্রতি বছর এই সময়কালটা উদযাপন করব, যাতে পরবর্তী প্রজন্ম জানে কীভাবে জনগণের ঐক্য ফ্যাসিবাদকে পরাজিত করেছিল। আমরা চাই না, আর কখনো একটি স্বৈরাচার মাথাচাড়া দিয়ে উঠুক। স্বৈরাচারের প্রথম পাতা মেলার আগেই যেন আমরা তাকে প্রতিহত করতে পারি।”
তিনি বলেন, “গত বছরের জুলাইয়ে এ দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষের যে ঐক্য তৈরি হয়েছিল, এই জুলাইয়ে তা যেন আরও সুসংহত হয়। এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য জনগণকে গণতান্ত্রিক অধিকার সম্পর্কে সচেতন করা, রাজনৈতিক দায়বদ্ধতার দাবি তোলা এবং রক্তের বিনিময়ে পাওয়া সংস্কারের সুযোগ হারিয়ে না ফেলা।”
শেষে তিনি সকলের উদ্দেশে আহ্বান জানান, “এই মাসকে গণজাগরণ ও জনগণের ঐক্যের মাস হিসেবে গড়ে তোলার মধ্য দিয়েই আমরা শহীদদের প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা জানাতে পারি।”