ওমরাসহ আগামী হজ মৌসুমে যাত্রীরা যাতে নির্বিঘ্নে সৌদি আরবে যেতে ও আসতে পারেন সে লক্ষ্যে বেসরকারি সব এয়ারলাইন্সকে যাত্রী পরিবহনের সুযোগ দিয়েছে সরকার। এছাড়াও আসন্ন রমজানে ওমরাযাত্রীদের গমনাগমন সহজ করতে ফ্লাইট সংখ্যা বাড়ানোর সুপারিশ করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব (হজ-২) এস এম মনিরুজ্জামান স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এই কথা জানানো হয়।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সুপারিশে বাংলাদেশ বিমান ও সৌদি এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট সংখ্যা বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। করোনার আগে যেভাবে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশে চলাচলকারী বিমানের ট্রানজিট যাত্রী হয়ে ওমরাযাত্রীরা সৌদি আরবে যাওয়ার সুযোগ পেতেন, সেই সুযোগ আবার দিতে সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের অন্যান্য এয়ারলাইন্সকে (থার্ড ক্যারিয়ার) বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে ফ্লাইট পরিচালনার সুযোগ দিতে সুপারিশ করা হয়।
এ ব্যাপারে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোকাম্মেল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘এমন চিঠি দেওয়া হয়েছে কি না এখনও জানি না। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখে বলতে পারব। আমি এ বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি।’
২৪ মার্চ সই করা ‘ওমরাযাত্রীগণের নির্বিঘ্ন সৌদি আরবে গমনের লক্ষ্যে বিমানের ফ্লাইট বৃদ্ধিকরণ’ শীর্ষক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, উপর্যুক্ত বিষয়ের প্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে, করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘদিন ওমরাহ পালন বন্ধ থাকার পর বিগত আগস্ট, ২০২১ মাস হতে বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ ওমরাহ পালনের সুযোগ পেয়েছেন। দীর্ঘদিন পর পুনরায় সুযোগ আসায় বাংলাদেশ থেকে বহুসংখ্যক ওমরাহযাত্রী ওমরাহ পালনের জন্য সৌদি আরব গমন করছেন। করোনা মহামারির কারণে বিদেশে চাকরিরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের গমনাগমনও দীর্ঘদিন সীমিত থাকার পর বর্তমানে বিদেশগামী বিশেষ করে সৌদি আরবগামী বিমান যাত্রীর সংখ্যা পূর্বের যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন অনেক বেশি। করোনা মহামারির পূর্বে বাংলাদেশি ওমরাহযাত্রীগণ মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশের বিমানের যাত্রী হয়ে ট্রানজিট নিয়ে সৌদি আরবে গমন করতে পারতেন।
করোনা পরিস্থিতি শুরু হওয়ার পর বাংলাদেশের ওমরাহযাত্রীগণ শুধুমাত্র বিমান বাংলাদেশে এয়ারলাইন্সে এবং সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্সযোগে সৌদি আরব গমন ও প্রত্যাগমন করতে পারেন। এর ফলে সৌদি আরবগামী বিমানযাত্রীর সংখ্যা একদিকে বৃদ্ধি পেয়েছে অন্যদিকে বিমানের ফ্লাইট সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। সে কারণে বর্তমানে বিমানের টিকেট পাওয়াও দুরূহ হয়ে পড়েছে। বিমান টিকেট সংকটের কারণে টিকেটের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। আগামী কিছু দিনের মধ্যে পবিত্র রমজান মাস শুরু হবে। বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ অন্যান্য সময়ের চেয়ে পবিত্র রমজান মাসে অধিক সংখ্যায় ওমরাহ পালনের জন্য সৌদি আরব গমন করেন। বিগত দুটি রমজানে ওমরাহযাত্রীগণ সৌদি আরবে যেতে না পারায় এ বৎসর ওমরাহ পালনে সৌদি আরব যাওয়ার বিষয়ে মানুষের মধ্যে অনেক বেশি আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এরূপ প্রেক্ষাপটে বিমানের ফ্লাইট অপ্রতুলতার কারণে রমজান মাসে ওমরাহ পালনে ইচ্ছুক সকল ওমরাহযাত্রীগণ সৌদি আরব গমন করতে পারবেন কিনা সে বিষয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
ওমরাহগাত্রীসহ আগামী হজ মৌসুমে হজযাত্রীগণ যাতে নির্বিঘ্নে সৌদি আরবে গমন এবং প্রত্যাগমন করতে পারেন সে লক্ষ্যে নিম্নের পদক্ষেপসমূহ গ্রহণের বিষয়টি বিবেচনা করা একান্ত দরকার।
ক. বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এবং সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্স এর ফাইট সংখ্যা বৃদ্ধিকরণ;
খ. করোনা পরিস্থিতির পূর্বের ন্যায় মধ্যপ্রাচ্যের অনানা দেশে চলাচলকারী বিমানের ট্রানজিট যাত্রী হয়ে ওমরাহযাত্রীদের সৌদি আরব গমনের সুযোগ প্রদান;
গ. বাংলাদেশ এবং সৌদি আরবের অন্যান্য এয়ারলাইন্সকে (Third Carrier) বাংলাদেশ এবং সৌদি আরবের মধ্যে ফ্লাইট পরিচালনার সুযোগ প্রদান।
বর্ণিতাবস্থায়, বাংলাদেশের ওমরাহযাত্রীগণের এবং আগামী হজ মৌসুমে হজযাত্রীদের নির্বিঘ্নে সৌদি আরব গমন এবং প্রত্যাগমনের লক্ষ্যে উপরে উল্লেখিত বিষয়সমূহ বিবেচনাপূর্বক ফ্লাইট সংখ্যা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।