চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শহর ও শিবগঞ্জ উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নে বড় পর্দায় কাতার বিশ্বকাপ ফুটবলের সবগুলো খেলা দেখার ব্যবস্থা করেছেন, আবাহনী ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান কাইয়ুম রেজা চৌধুরী। বিশ্বকাপ ফুটবল শুরুর দ্বিতীয় দিন সোমবার (২১ নভেম্বর) থেকে শিবগঞ্জ উপজেলার দুইটি ইউনিয়ন মনাকষা ও বিনোদপুরে খেলা দেখানো শুরু হয়েছে।
এছাড়াও তিনি জেলা শহরের আদালত চত্বর ও শিবগঞ্জ উপজেলার সবগুলো অর্থাৎ ১৫ ইউনিয়নেরই বিভিন্ন জায়গায় প্রজেক্টেরের মাধ্যমে বড় পর্দায় ফুটবল খেলা দেখার ব্যবস্থা করেছেন। যা চলতি সপ্তাহেই শুরু হবে। আয়োজনটির সার্বিক তত্বাবধায়ন করছেন, কাইয়ুম রেজা চৌধুরীর মেয়ে এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হেল্প চাঁপাই এর সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য জারা জাবীন মাহবুব।
বড় পর্দায় ফুটবল বিশ্বকাপের সবগুলো খেলা দেখতে পাওয়ার ব্যবস্থা হওয়ায় খুশি ফুটবলপ্রেমীরা। সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন “হেল্প চাঁপাই” এর স্বেচ্ছাসেবকরা এই আয়োজনে সহযোগিতা করছেন। দেশের সীমান্তবর্তী এলাকার প্রত্যন্ত গ্রামেও প্রজেক্টেরের মাধ্যমে খেলা দেখতে পেয়ে খুশি ও উচ্ছ্বসিত ফুটবল ভক্তরা।
শিবগঞ্জের বিনোদপুরের কলেজছাত্র সাহিন শওকত জানান, গ্রামের কয়েকজন মিলে এবার চলতি ফুটবল বিশ্বকাপের খেলা বড় পর্দায় আয়োজন করার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম, এতে খরচ অনেক। তাই সেই পরিকল্পনা থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়েছি। কারন আমাদের মতো কলেজ ছাত্রদের দ্বারা খরচ করে বড় পর্দার আয়োজন করা সম্ভব নয়। পরে জানতে পারলাম, শিবগঞ্জের একজন ক্রীড়াপ্রেমী ব্যক্তির আয়োজনে বিভিন্ন ইউনিয়নে খেলা দেখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। জানার পর গতকাল সোমবার থেকে এখানে প্রত্যেকটি খেলা বড় পর্যায়ে উপভোগ করেছি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থী ও আর্জেন্টিনার সমর্থক ফেরদৌস শিহানুক শান্ত বলেন, পারিবারিক কাজে গ্রামের বাড়িতে এসে আটকে গেছি
বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকলে সাধারণত বড় পর্দায় খেলা দেখি। এদিকে প্রিয় দল আর্জেন্টিনার খেলাও চলছে। পরে এক বন্ধুর কাছে শুনে ২ কিলোমিটার দূর থেকে এসে খেলা উপভোগ করছি। অত্যন্ত গ্রামে এমন আয়োজন সত্যি প্রশংসার দাবিদার।
পঞ্চাশোর্ধ তরিকুল ইসলাম জানান, আমরা বই-পুস্তকে কালা মানিক খ্যাত পেলের খ্যাতির কথা পড়ে তার ভক্ত হয়েছি। এখন পর্যন্ত পাঁচটি বিশ্বকাপ কোনোটিই মিস করিনি। প্রতিবারের ন্যায় এবারও বাড়িতে বসে টিভিতে খেলা দেখতাম। কারন আগের মতো সমর্থক বন্ধু-বান্ধব নিয়ে খেলা দেখা সম্ভব হয় না। কিন্তু যখন বড় পর্দায় প্রজেক্টরে খেলা দেখার কথা শুনেছি তখনই আনন্দে উৎফুল্লিত হয়েছি। কারণ এখানে বিভিন্ন বয়সী ফুটবলপ্রেমীদের নিয়ে একসাথে খেলা দেখতে পারি।
সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন “হেল্প চাঁপাই” এর সাধারণ সম্পাদক জিলহাজ বিশ্বাস বলেন, দেশের ক্রীড়ানুরাগী ও আবাহনী ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য কাইয়ুম রেজা চৌধুরীর জন্ম চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিখ্যাত “চৌধুরী-জমিদার পরিবারে”। তাই নিজ গ্রামের মানুষজনও যাতে এই উৎসবের সময় উপভোগ করতে পারে এইজন্য বড় পর্দার ব্যবস্থা করেছেন তিনি। এতে ১৫টি ইউনিয়নের বিভিন্ন জায়গায় এবং জেলা শহরের আদালত চত্বর মিলে মোট ১৬টি স্থানে প্রজেক্টেরের মাধ্যমে খেলা দেখানো হবে। প্রাথমিকভাবে ইতোমধ্যেই দুই ইউনিয়নের দুইটি জায়গায় শুরু হয়েছে। আগামী দু-এক দিনের মধ্যের বাকিগুলোতেও শুরু করা হবে। এই কাজে হেল্প চাঁপাই এর সভাপতি জারা জাবীন মাহবুব আপুর সঠিক দিক নির্দেশনায় স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ করছে।
উল্লেখ্য, ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান কাইয়ুম রেজা চৌধুরী উপমহাদেশের প্রখ্যাত রাজনীতিক ও সাবেক অর্থমন্ত্রী (তৎকালীন পাকিস্তান সরকার) মোর্তজা রেজা চৌধুরীর ছেলে ও সাবেক প্রধান বিচারপতি মাইনুর রেজা চৌধুরীর ছোট ভাই। তিনি ঢাকা ওয়ারী ক্লাবের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন। এছাড়াও তিনি ‘ঢাকা সিটি আইন-বাণিজ্যিক মহাবিদ্যালয়’ প্রতিষ্ঠা করেন। ব্যবসা-বাণিজ্য ছাড়াও তিনি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে একজন সুপরিচিত ব্যক্তিত্ব। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলাসহ কেন্দ্রীয় পর্যায়ে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন।