আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দৈনিক প্রথম আলোকে ইঙ্গিত করে বলেন, একটি গণমাধ্যমে যে ঘটনা ঘটেছে, এমন ঘটনা ঘটলে বিশ্বের যেকোনো দেশে সেই গণমাধ্যমের লাইসেন্স বাতিল করা হতো। অপসাংবাদিকতার জন্য বিশ্বের অন্যান্য দেশে লাইসেন্স বাতিল করা হয়, কিন্তু শেখ হাসিনা তা করেননি।
রোববার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
সেতুমন্ত্রী বলেন, তারা বাচ্চাকে ব্যবহার করে, দিনমজুরের নামে উক্তি ব্যবহার করে যে জঘন্য অপরাধ করেছে, সে অপরাধের শাস্তি তাদের পাওয়া উচিত। অপরাধকে ভুল বলে চালিয়ে দেয়া যায় না। ভুলকে ক্ষমা করা যায়, কিন্তু অপরাধকে নয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, স্বাধীনতা দিবসে একটি শিশুকে নিয়ে যে ধরনের জঘন্য অপরাধ করা হয়েছে, সেটার জন্য শাস্তি পাওয়া উচিত। কিছু লোক বলে- সাংবাদিকদের ভয় দেখাতে সরকার মামলা করেছে, অথচ সরকার মামলা কিংবা গ্রেপ্তার করেনি।
সেতুমন্ত্রী বলেন, এদেশের অসংখ্য সাংবাদিক হত্যা করেছে বিএনপি। সাংবাদিকদের স্বাধীনতার জন্য আওয়ামী লীগই লড়াই করেছে। যারা নিজেরাই সাংবাদিক হত্যা করেছেন, তারা নিজেরাই সাংবাদিকের স্বাধীনতার জন্য মায়াকান্না করে। সাংবাদিকদের ওয়েজবোর্ডসহ সব সুযোগ সুবিধা সৃষ্টি করেছে শেখ হাসিনা সরকার। সাংবাদিকদের আরও দায়িত্বশীল হতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রতিদিন পত্রিকার পাতা খুললেই কিছু কিছু পত্রিকা দেখা যায়, সরকারবিরোধী ও সরকারের সমালোচনার সংবাদ। তবুও বলে স্বাধীনতা নেই। ব্লুমবার্গের মতো আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমও শেখ হাসিনার প্রশংসা করে, অথচ বাংলাদেশের কিছু গণমাধ্যম শেখ হাসিনার সমালোচনা করে। মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনের ব্যক্তিরা শেখ হাসিনার প্রসংশা করে, কিন্তু বাংলাদেশের কিছু মানুষ প্রশংসা করতে জানে না। তারা জানে সমালোচনা করতে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসের নির্মাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাংলার ইতিহাস একদিকে বীরত্বের, অন্যদিকে বিশ্বাসঘাতকতার। জিয়াউর রহমানের বিশ্বাসঘাতকতার মধ্য দিয়ে ইতিহাসের কলঙ্ক রচনা হয়। ১৫ আগস্টের বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের উৎসাহদাতা ও মাস্টারমাইন্ড জিয়া। খুনিদের পুরস্কৃত করেছে জিয়া। ইনডেমনিটি আইনের স্বীকৃতি কেন দেয়া হয়েছে, এমন প্রশ্নের জবাব বিএনপি দিতে পারেনি, পারবেও না। বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস, জয় বাংলাকে নির্বাসনে পাঠানোসহ ৭ মার্চের ভাষণ প্রচার বন্ধ করেছে জিয়া।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ২১ আগস্টের মাস্টারমাইন্ড জিয়ারই বংশধর। বিএনপি যাকে হত্যা করতে চেয়েছে, তাদের শোকে দেখতে গিয়েছেন শেখ হাসিনা। আজও দণ্ডপ্রাপ্ত খালেদা জিয়াকে মানবিকতা দেখিয়ে বাসায় থাকতে দিয়েছেন তিনি।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের প্রসঙ্গে সেতুমন্ত্রী বলেন, তিনি আবারও গণঅভ্যুত্থানের হুঙ্কার ছেড়েছেন, অথচ তাদের গণঅভ্যুত্থানে ৫০০ থেকে ৭০০ লোকের উপস্থিতি। এটাই না-কি গণঅভ্যুত্থান? ফখরুল এখনও গণঅভ্যুত্থান, আন্দোলনের নামে দিবাস্বপ্ন দেখছে। যতই আন্দোলনের স্বপ্ন দেখুন, জনগণ আপনাদের সঙ্গে নেই। যে আন্দোলনে জনগণ থাকে না, সেই আন্দোলন কখনও গণঅভ্যুত্থান হতে পারে না। বিএনপির আন্দোলনে জনগণ তো দূরে থাক, নেতাকর্মীদের সংখ্যাও কমছে।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, বিএনপি গণআন্দোলন থেকে নীরব পদযাত্রায়, তারপর মানববন্ধন, এখন অভ্যুত্থান। এটাও থেমে যাবে। কারণ কোমরভাঙা দল কখনোই সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারে না।
আওয়ামী লীগের এই নেতা অভিযোগ করে বলেন, বিএনপি নির্বাচন নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে। নির্বাচন যখনই হোক বিএনপির ভরাডুবি নিশ্চিত। লন্ডনের পরিকল্পনা আর সফল হবে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়নের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান।