Wednesday , 1 May 2024
শিরোনাম

মানুষ প্রতিবাদ করছে কিন্তু সংশ্লিষ্ট পত্রিকা ক্ষমা চায়নি, অপপ্রচার চালাচ্ছে : তথ্যমন্ত্রী

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আজকে সমগ্র দেশের মানুষ প্রথম আলো’র ঘটনার ব্যাপারে মুখ খুলেছে, প্রতিবাদ করছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট পত্রিকা ক্ষমা চায়নি। বরং এটার বিরুদ্ধে তারা আন্তর্জাতিক অঙ্গণে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এই অপপ্রচারও একটি অপরাধ’ স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য নিয়ে দেশে প্রতিদিন পত্রিকা, টিভি, অনলাইনে রিপোর্ট হয়েছে এবং হচ্ছে। মামলা তো দূরে থাক, কাউকে এ নিয়ে প্রশ্নও করা হয়নি। তাই শামসুজ্জামানকে  দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে লেখার কারণে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে যে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, এটিও একটি অপরাধ। এটার জন্য আবার কেউ মামলা করে কি না সেটিও দেখার বিষয়।’
আজ দুপুরে সচিবালয়ে নিজ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ সংবাদপত্র পরিষদের (বিএসপি) নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠকে মন্ত্রী এ সব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সারাদেশে এ নিয়ে প্রতিবাদ হচ্ছে। ফেডারেল ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, ৫০ জন বিশিষ্ট নাগরিক, ঢাকা আইনজীবী সমিতি, এডিটরস গিল্ড, বাংলাদেশ সম্পাদক ফোরাম, সংবাদপত্র পরিষদ, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’সহ অনেকেই বিবৃতি দিয়েছে।
অভিযুক্ত শামসুজ্জামানকে ভোররাতে গ্রেপ্তার নিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘মামলা হওয়ার পর গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রাত ৪ টায় অনেক সংসদ সদস্যকেও গ্রেপ্তার করা হয়। দেশে কয়েক দফা মন্ত্রী ছিলেন এবং বড় রাজনীতিবিদ তাদেরকেও গ্রেপ্তার করা হয়। আমরা সবাই জেলে গেছি বেশির ভাগকে রাতেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কই তখন তো কোনো প্রশ্ন আসেনি!’ সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘রাজনীতিবিদ, মন্ত্রী, এমপি যারা ছিলেন তাদেরসহ সবাইকে রাতে গ্রেপ্তার করা যাবে, কিন্তু একজন সাংবাদিক যদি রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বকে কটাক্ষ করে, একজন শিশুকে এক্সপ্লয়েট করে আমাদের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব খাটো করে, তাকে গ্রেপ্তার করা যাবে না- এমন আইন তো নাই। মামলা দায়ের হওয়ার পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এখানে দেখতে হবে, তাকে কোনো নির্যাতন করা হয়েছে কি না। নির্যাতনের কোনো অভিযোগ তো আসেনি।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমি তথ্যমন্ত্রী হিসেবে সাংবাদিকদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য সবসময় চেষ্টা করি এবং যখনই কোনো সাংবাদিক হয়রানির স্বীকার হয়, তখন সবার আগে হস্তক্ষেপ করি। আমাদের মনে রাখতে হবে, সবার ওপরে আমরা স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বকে স্থান দেই এবং সংবাদ পরিবেশন করতে গিয়ে যেন এমন কোনো কাজ না করি যাতে করে সাংবাদিকতার নীতি-নৈতিকতার পরিপন্থী, দেশবিরোধী কোনো কিছু হয়।’
বিএসপি সভাপতি ও প্রবীণ রাজনীতিক মোজাফফর হোসেন পল্টু বলেন, ‘প্রথম আলো বিভিন্ন সময় নেগেটিভ সংবাদগুলো সবচেয়ে আগে প্রকাশ করে। আমার বক্তব্য হলো, প্রকাশ করতে পারেন কিন্তু এর একটা যৌক্তিকতা থাকতে হবে। বিরোধিতার জন্য বিরোধিতা করা সংবাদপত্রের নীতিমালা নয়। নিশ্চয়ই আমরা সাংবাদিকদের নিরাপত্তা চাই, অধিকার চাই। কিন্তু এর একটা সীমা আছে। সাংবাদিকতায় এই জিনিসটা বারবার ভেবে দেখা প্রয়োজন রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা বিগত দিনে অনেক দেখেছি, রানা প্লাজা ধসে পড়ার দিনেও তারা প্রোগ্রাম করেছে, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করেছে। অথচ সে দিন এতোগুলো মানুষ মারা গেছে, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে প্রভাব ফেলেছে। রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুলেও তারা একটা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করতে গিয়ে সেখানে এক ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। এগুলো দুর্ভাগ্যজনক।’
বিএসপি’র সাধারণ সম্পাদক এম জি কিবরিয়া চৌধুরী বলেন, ‘স্বাধীনতাকে যারা মানে না, তারা দেশকেও মানে না। কেউ বাংলাদেশে সাংবাদিকতা করবেন আর দেশকে মানবেন না, এটা হয় না।’
সাড়ে তিনশ’র বেশি পত্রিকার প্রকাশক-সম্পাদকদের এই সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘বাংলাদেশ সংবাদপত্র পরিষদ মনে করে, সাংবাদিকতা নীতিমালা মেনেই সংবাদপত্র প্রকাশ করতে হবে, ছাপাতে হবে। যারা এ ধরণের লেখনী লিখছেন, এটা অনভিপ্রেত, অযাচিত এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’
এ সময় দেশের উন্নয়ন অগ্রগতি নিয়ে সারাবিশ্বে প্রশংসা হচ্ছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী হাছান বলেন, ‘মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী জুলিয়া ভালস বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতির প্রশংসা করে বক্তব্য দিয়েছেন। আজকে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় সেটি ছাপা হয়েছে। বাংলাদেশের অগ্রগতিকে স্বীকৃতি দিতে মার্কিন কংগ্রেসে বিল উপস্থাপন করা হয়েছে। বাসস

Check Also

‘মানবাধিকার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র নিজের চেহারা আয়নায় দেখে না’

বাংলাদেশি হত্যার কী জবাব দেবে মানবাধিকার সংস্থাগুলো? তিনি মানবাধিকার সংস্থাগুলোর কাছে এর জবাব চেয়েছেন। তিনি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

x