ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী অরিত্রী অধিকারীর আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলায় একই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষিকা নাজনীন ফেরদৌস ও জিনাত আক্তারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ-১২ এর বিচারক আব্দুল্লাহ আল মামুন এ পরোয়ানা জারি করেন।
বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) সকালে সংশ্লিষ্ট আদালত সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. হিমেল গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে মামলাটির একটি তারিখ নির্ধারণ ছিল। ওই দিন আসামিরা আদালতে হাজির হননি। ২৮ মার্চও মামলাটির তারিখ ধার্য ছিল। এদিনও তারা আদালতে হাজির হননি। এজন্য আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
আগামী ১৮ এপ্রিল মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে। মামলাটিতে ১৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৩ জনের সাক্ষ্য নেয়া হয়েছে।
২০১৮ সালে ৩ ডিসেম্বর রাজধানীর শান্তিনগরের নিজ বাসায় ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেয় শিক্ষার্থী অরিত্রী। মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে ভিকারুননিসার বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করে।
ঘটনার পরদিন রাজধানীর পল্টন থানায় ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস, প্রভাতী শাখার প্রধান জিনাত আক্তার ও শ্রেণি-শিক্ষিকা হাসনা হেনার বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে অরিত্রীর বাবা দিলীপ অধিকারী মামলা করেন।
মামলার এজাহারে অরিত্রীর বাবা বলেন, অরিত্রীর স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা চলছিল। ২০১৮ সালের ২ ডিসেম্বর সমাজবিজ্ঞান পরীক্ষা চলার সময় তার কাছে একটি মোবাইল ফোন পাওয়া যায়। এজন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ আমাদের ডেকে পাঠায়। ৩ ডিসেম্বর স্কুলে গেলে কর্তৃপক্ষ আমাদের জানায়, অরিত্রী মোবাইল ফোনে নকল করছিল, তাই তাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এজাহারে অরিত্রীর বাবা আরও উল্লেখ করেন, স্কুল কর্তৃপক্ষ মেয়ের সামনে আমাকে অনেক অপমান করে। এ অপমান এবং পরীক্ষা দিতে না পারার মানসিক আঘাত সইতে না পেরে সে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।
২০১৯ সালের ২০ মার্চ দুই শিক্ষককে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক কামরুল হাসান তালুকদার। ২০১৯ সালের ১০ জুলাই এই দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন আদালত।