আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেনি,লক্ষ্মীপুর গরুর ঘর থেকে গৃহবধুর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

অন্যান্য

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
রবিন হোসেন তাসকিন

লক্ষ্মীপুরে গরুর ঘরে মিলল সিমু আক্তার (২৩) নামে এক গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ। বুধবার (১৬ মার্চ) ভোর ৫টার দিকে সদর উপজেলার তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের চরমনসা গ্রামের হারিছ মাঝির বাড়ির গরু ঘরে গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ দেখা যায়। এর পর থেকেই তার শশুর হারিছ মাঝি পলাতক রয়েছে। সিমুর পরিবারের দাবি, এটি আত্মহত্যা নয়। পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে।

ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়লে আশপাশের মানুষ ওই বাড়িতে ভীড় জমায়।

সুমির পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানায়, প্রায় ৮ বছর আগে চরমনসা গ্রামের ওমান প্রবাসী আবুল বাশারের সঙ্গে কুশাখালি ইউনিয়িনের ৬ নম্বর ওয়ার্ড কুশাখালি গ্রামের সিরাজ মিয়ার মেয়ে সিমুর বিয়ে হয়। তাদের সংসারে শাহাদাত হোসেন নামে ৬ বছরের এক ছেলে রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই সিমুর সঙ্গে প্রায়ই শশুর হারিছ মাঝি, শাশুড়ি রহিমা বেগম, ৩ ননদ সুমি আক্তার, স্বপনুর আক্তার ও শাহনাজ আক্তারের ঝগড়া লাগতো। কলহ লেগেই থাকতো তাদের।

অন্যদিকে মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) রাতেও মুঠোফোনে স্বামীর সঙ্গে সিমুর কথা-কাটাকাটি হয়। বাড়িতে শশুর-শাশুড়ি ও ননদরাও তাকে বকাঝকা করে। রাতেই বাশার তার শশুর-শাশুড়িকে ফোন দেয়। এসময় সিমুকে নিয়ে যাওয়ার জন্য ধমক দেওয়া হয়। সিমুর সঙ্গে আর সংসার করবেন না বলেও জানান তিনি। ঝগড়ার কারণেই সিমুকে তার শশুর-শাশুড়ি ও ননদরা হত্যা করে পরিকল্পিতভাবে গরুর ঘরে ফাঁস লাগিয়ে রেখেছে।

কান্নাজিড়িত কণ্ঠে সিমুর মা বকুল বেগম বলেন, আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেনি। শশুর বাড়ির লোকজন তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। এখন আত্মহত্যা বলে প্রকৃত ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমি মেয়ে হত্যার বিচার চাই।

ছোট ননদ স্বপনুর আক্তার বলেন, আমাদের কাছে কোন ঝগড়া হয়নি। রাতে একসঙ্গে খাবার খেয়ে ঘুমাতে যায়। ফজরের নামাজের সময় উঠে ভাবির ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পায়। তিনি আত্মহত্যা করেছেন। পরে আমরা তার পরিবারকে খবর দিই।

স্থানীয় ইউপি সদস্য নুরুল আমিন মাঝি বলেন, ওই পরিবারে পূর্ব থেকেই কলহ চলে আসছে। একাধিকবার আমি সালিস করেছি। মৃত্যুর ঘটনা শুনে ঘটনাস্থল গিয়েছি। কলহ জের ধরেই ঘটনাটি ঘটেছে। তবে হত্যা নাকি আত্মহত্যা তা বলতে পারছি না।

লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক এস আই হাবিব বলেন,ঝুলন্ত অবস্থায় গৃহবধুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।ময়নাতদন্তের জন্য লাশ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।ময়নাতদন্তের রির্পোট পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *