দেবীদ্বার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদকে কিলঘুষি মারার ঘটনায় কুমিল্লা-৪ আসনের সংসদ সদস্য রাজি মোহাম্মদ ফখরুলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে বাংলাদেশ উপজেলা পরিষদ অ্যাসোসিয়েশন। বিচার না হলে উপজেলা চেয়ারম্যান–ভাইস চেয়ারম্যানরা একযোগে পদত্যাগ করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি।
রবিবার রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ উপজেলা পরিষদ অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে সংগঠনের সভাপতি হারুন-অর রশীদ হাওলাদার এ ঘোষণা দেন।
এ সময় হারুন-অর রশীদ বলেন, আগামী ২ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদ ভবনে স্পিকার বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হবে। রাজী মোহাম্মদ ফখরুলের আচরণের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী বরাবর আনুষ্ঠানিক আবেদন করা হবে। ১৫ সেপ্টেম্বর দেশের সব উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, নারী ভাইস চেয়ারম্যানরা ঢাকায় সমাবেশ করবেন। তারপরও যদি যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হয়, তাহলে সব উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, নারী ভাইস চেয়ারম্যানরা প্রধানমন্ত্রী ও নিজ এলাকার জনগণকে অবহিত করে একযোগে পদত্যাগ করতে বাধ্য হবেন।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় শালীনতা ভূলুণ্ঠিত হয়েছে। আবুল কালামকে যেভাবে লাঞ্ছিত করা হয়েছে, তার বিরুদ্ধে অ্যাসোসিয়েশন তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছে। ব্যক্তি স্বার্থ ও প্রতিহিংসা চরিতার্থে আবুল কালামকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে ।
হারুন-অর রশীদ বলেন, এ ঘটনা নজিরবিহীন। এ ঘটনা সরকারকেও বিব্রত করেছে। এ ঘটনা দেশের ৪৯২টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিসহ সব জনপ্রতিনিধিদের আহত করেছে। তারা ধৈর্যের সঙ্গে আশা করেছিলেন যে রাজী মোহাম্মদ ফখরুল দায় স্বীকার করবেন। নিঃশর্ত ক্ষমা চাইবেন। কিন্তু তিনি উল্টো পথে হাঁটছেন। প্রকৃত ঘটনা আড়াল করে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছেন।
উপজেলা পরিষদ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বলেন, রাজী মোহাম্মদ ফখরুল ও আবুল কালাম আজাদ উভয়ই আওয়ামী লীগ দলীয় নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে আবুল কালামের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী নিশ্চই দলগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
সংবাদ সম্মেলনে আবুল কালাম আজাদ ফোনে সাংবাদিকদের বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সভায় রাজী মোহাম্মদ ফখরুল তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। এ ঘটনায় রোববার বিকেলে ঢাকায় আওয়ামী লীগ একটি বৈঠক ডেকেছে। সেখানে দুজনকেই ডাকা হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এ ঘটনায় তিনি ন্যায়বিচার পাবেন।
উল্লেখ্য, গত ১৬ জুলাই জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার একপর্যায়ে সংসদ সদস্য রাজী দেবিদ্বার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদকে কিলঘুষি মারেন বলে অভিযোগ ওঠে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন, সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম খান বীরু, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুল আজিজ, ইয়াসিন মিয়া, রেজাউল হক জানু, অ্যাডভোকেট রিনা পারভীন প্রমুখ