রাজধানীর বঙ্গবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণের মাধ্যমে তাদের পুনর্বাসনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আপাতত আহত হয়ে যারা হাসপাতালে ভর্তি তাদের ১৫ হাজার টাকা করে সহায়তা দেয়া হবে।
মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) ভবনের বুড়িগঙ্গা হলে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনার কথা জানিয়েছেন ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান। এসময় উপস্থিত ছিলেন ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
এদিন ভোর ৬টা ১০ মিনিটে বঙ্গবাজারে আগুন লাগে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একে একে অর্ধশত ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়। তাদের সঙ্গে পুলিশ, র্যাব, সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি ও সশস্ত্র বাহিনীর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ভয়াবহ এই আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুনে পোড়ে আশপাশের আরও চার-পাঁচটি মার্কেটও। এমনকি পুলিশের একটি ব্যারাকেও আগুন লাগে।
ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অগ্নিকাণ্ডের বিষয়টিতে সমন্বয় করছেন। তিনি নির্দেশ দিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের ক্ষতির পরিমাণ নির্ধাণের পর তাদের পুনর্বাসনের জন্য কাজ করতে। মন্ত্রণালয় থেকে জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে, আহত হয়ে যারা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন, তাদের ১৫ হাজার টাকা করে সহায়তা দেয়া হবে।’
অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত প্রসঙ্গে ডা. এনামুর রহমান বলেন, ‘তদন্ত প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলা যাচ্ছে না, কোথা থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। দুর্ঘটনার সূত্রপাত এখনো জানা সম্ভব হয়নি। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের পরই মূল কারণ জানা যাবে।’
তিনি বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে যেসব মালামাল ব্যবসায়ীরা কিনেছেন, তার সব নষ্ট হয়ে গেছে। ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের চেষ্টায় অনেকের মালামাল নিরাপদ জায়গায় নেয়া গেছে।’
ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের কথা উল্লেখ করে মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, আগুনে যেসব ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’
ডিএসসিসি মেয়র এসময় বলেন, ‘এই মার্কেট ২০১৯ সাল থেকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসাবে চিহ্নিত। এরপরও এখানে ব্যবসা কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছিল। এটি অত্যন্ত অনাকাঙ্ক্ষিত। সিটি করপোরেশন ও অন্যান্য সংস্থা যেসব জায়গা ঝুঁকিপূর্ণ হিসাবে চিহ্নিত করেছে, সেসব জায়গা আর যেন ব্যবহার না করা হয়, সেজন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। আর ব্যবসায়ীরাও যেন জোর করে কার্যক্রম পরিচালনা না করেন, সেদিকেও তাদের লক্ষ্য রাখতে হবে।’
মেয়র বলেন, ‘হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ থাকলে সিটি করপোরেশন ইচ্ছা করলেও কোনো জায়গা ভেঙে ফেলতে পারে না। সিটি করপোরেশন ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত করে। এরপর সেই ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দেয়। তবে জোরপূর্বক তাদের সরিয়ে নেয়ার সুযোগ সিটি করপোরেশনের নেই। বঙ্গবাজার মার্কেটকে পুনর্নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। তবে সেখানকার ব্যবসায়ীরা হাইকোর্টে মামলা করে স্থগিত করে রেখেছিলেন। সেজন্য আমরা নির্মাণে যেতে পারিনি।’