মো: আহসানুল ইসলাম আমিন,স্টাফ রিপোর্টার :
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলায় আগুন লাগলে এত দিন ১৫ কিলোমিটার দূরে শ্রীনগর উপজেলা থেকে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি আসত। অথবা মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা থেকে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি আসত। গাড়ি এসে পৌঁছানোর আগেই ক্ষয়-ক্ষতি যা হওয়ার তা হয়ে যেত।
সিরাজদিখান উপজেলায় একটি প্রচলিত প্রবাদ বাক্য আছে ডাক্তার আসিবার আগে রোগি মারা গেলো, আগুনে পুড়ে ছাই হবার পরে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি এসে পৌছালো । উপজেলার বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল এলাকায় একটি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণের। অবশেষে পূরণ হয়েছে সে দাবি। শেষ হয়েছে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণের কাজ। তিনতলা বিশিষ্ট এ ফায়ার স্টেশনে এখন চলছে ধোয়া-মোছার কাজ।
যানাযায়, উপজেলার তালতলা বাজারে ২০১৮ সালে ২৫ নভেম্বর রাতে অগ্নিকাণ্ডে মুদি দোকান, ওষুধের ফার্মেসি, কাঠের দোকানসহ ১৪টি দোকান ভস্মিভূত হয়। অগ্নিকাণ্ডে প্রায় ২ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি বলে যানাযায়, রাত সাড়ে ১২ টায় থেকে শুরু হওয়া এই আগুন প্রায় আড়াই ঘণ্টা পরে শ্রীনগর ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট পুলিশ ও এলাকাবাসীর সহযোগিতা রাত ৩ টার দিকে নিয়ন্ত্রণে আনে।
তালতলা বাজারে আগুনে পুড়ে যাওয়া দোকানের মালিক কামাল হোসেন উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণের খবরে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন। তিনি বলেন, আমার দোকানে আগুন লাগার পর দুই ঘন্টা পরে শ্রীনগর থেকে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে তার আগেই ক্ষতি যা হওয়ার তা হয়ে গেছে। তবে শুনে ভালো লাগছে এখন সিরাজদিখানেই একটি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন হয়েছে। এতে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ অনেক কমবে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার নিমতলা সিরাজদিখান রোডের রশুনিয়া এলাকায় ৪ কোটি ২২ লাখ ৭৬ হাজার টাকা ব্যয়ে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণের উদ্যোগটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের। আর নির্মাণকাজের তদারকি করছে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে।
সিরাজদিখান উপজেলা চেয়ারম্যান হাজী মহিউদ্দিন আহমেদ বাংলা৫২নিউজ ডটকম বলেন, আগুনে সিরাজদিখান উপজেলায় গত দশ বছরে অন্তত ৫০ কোটি টাকারও বেশি সম্পদ নষ্ট হয়েছে। সিরাজদিখানে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন থাকলে এত ক্ষতি হতো না। এখন অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতির পরিমাণ অনেক কমবে। একটি ফায়ার সার্ভিসের অভাবে সিরাজদিখানবাসী দীর্ঘদিন কষ্ট পেলেও এখন কষ্ট দূর হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে উপজেলা বাসীর পক্ষ থেকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই সিরাজদিখান উপজেলা বাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন নির্মাণ করে দেয়াতে।
মুন্সীগঞ্জ জেলা গণপূর্ত বিভাগের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী নাজমূ হাজান হিরা জানান, চলতি মাসের শেষ দিকে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনটি উদ্বোধনের কথা রয়েছে তবে আমরা এখনো সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের কাছ থেকে লেখিত অনুমোদন পাইনি।
মুন্সীগঞ্জ জেলা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স উপ-সহকারী পরিচালক (ডিএডি) মো মোস্তফা মোহসীন (বিএফএম) বলেন চলতি মাসের ২৪ তারিখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জুম মিটিংয়ের মাধ্যমে সিরাজদিখান ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনটি শুভ উদ্বোধনের কথা রয়েছে তবে এখনো উদ্বোধনের তারিখটি চূড়ান্ত করা হয়নি।