প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন,‘সবার উদ্দেশ্য হয়ে গেছে টাকা আয় করা। এখন একটা প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে, কীভাবে খুব দ্রুত অর্থ আয় করা যায়, গাড়ি-বাড়ি করা যায়। এটা আমি ঠিক মনে করি না।’
শনিবার ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির মঞ্জুর এলাহী মিলনায়তনে ল’ ক্লিনিকের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে একথা বলেন প্রধান বিচারপতি। দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয় এই প্রথম ল ক্লিনিক চালু করছে। যেখানে শিক্ষার্থীদের আইন অনুশীলনের সার্বিক দিকগুলো চর্চার সুযোগ থাকবে।
আইনজীবীদের মান নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করে হাসান ফয়েজ বলেন, ভাল লইয়ারের সংখ্যা এদেশে অনেক কম। তিনি বলেন, ভালো বিচারক ও ভালো আইনজীবী হতে হলে প্রচণ্ড পরিশ্রমী হতে হবে। অসৎ লোক এগুতে পারে অর্থবিত্ত হতে পারে। কিন্তু সমাজে ভালো মানুষ ভালো লইয়ার হিসেবে নিজেদের তৈরি করতে পেরেছে এমন দৃষ্টান্ত নেই।
আইনের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘সৎ ও পরিশ্রমীদের আমরা জুডিশিয়ারিতে নেব। যে বিচার বিক্রি করবে, তাদের বিচারকের আসনে বসানো যাবে না। যারা পরিশ্রমী নয়, তাদেরও বসানো যাবে না। বসাতে হবে অবশ্যই সৎ এবং পরিশ্রমীদের। যারা গ্রাম থেকে বিচার চাইতে আসা মা বয়সী, বাবা বয়সীদের দিকে দরদ দিয়ে তাকাবে। তাদের সঠিক বিচার দেবে। এভাবেই নিজেদের তৈরি করতে হবে। দেশকে এগিয়ে নেবে।’
আদালতের বিভিন্ন প্রায়োগিক বিষয় সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের দিক-নির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, ‘সময় নষ্ট করলে লইয়ার হওয়া যাবে না। পড়াশোনা করতে হবে, গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানি শুনতে হবে, নোট নিতে হবে।’
শিক্ষকদেরও আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এম এম শহিদুল হাসান বলেন, ‘তাত্ত্বিক জ্ঞান ও ব্যবহারিক পরিবেশের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরির জন্যে আমরা এই ল ক্লিনিক করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছি।’
ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখ্য উপদেষ্টা ও প্রতিষ্ঠাকালীন উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেন, ‘প্রচুর তদবির হলেও আইন বিভাগের ৫০টি আসলে আমরা সম্পূর্ণ মেধার ভিত্তিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করি। একাডেমিক প্রক্রিয়ার সাথে যুক্তরাই এই সেরা ৫০ নির্বাচন করেন।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের উপদেষ্টা অধ্যাপক একরামুল হক বলেন, ‘বিশ্বের অনেক দেশে ল ক্লিনিকের এই চর্চা ছড়িয়ে গেলেও বাংলাদেশে এর চর্চা বাড়েনি। প্রস্তুতি ও চর্চা ছাড়া একজন তরুণ আইনজীবী কীভাবে কোর্টে দাঁড়াবে? বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ল ক্লিনিক খোলা হওয়ায় এই সুযোগটা বাড়ছে।’