রাজধানীর অদূরে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরনের কেরামতিতে বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। লাগামহীন দুর্নীতি ও অনিয়ম করে সাধারণ কাউন্সিলর হয়ে রাতারাতি হাজার কোটি টাকার সম্পদের মালিক বনে যাওয়া, অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা, লুটপাট, দ্বৈতনাগরিকত্ব, কমিশন বানিজ্য সহ নানা অভিযোগ বিক্ষুব্ধ নগরবাসী গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরনের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় থেকে শুরু করে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিতভাবে অভিযোগ জানিয়েছে। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরনের নানা অপকর্ম নিয়ে আজ থাকছে দ্বিতীয় পর্ব।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইতিমধ্যেই গণমাধ্যমে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণের দুর্নীতির খবর প্রকাশ পাওয়ার পর দুর্নীতি দমন কমিশনও বিষয়টি আমলে নিয়েছে। এছাড়া গাজীপুরের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম দুদক চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন। এ আবেদনের প্রেক্ষিতেই দুদক ইতিমধ্যেই অনুসন্ধান শুরু করেছে। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হওয়ায় আসাদুর রহমান কিরন সে দেশে চলে যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছেন বলেও নিশ্চিত করেছেন একাধিক কাউন্সিলর এবং কিরনের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র।
উল্লেখ্য, আসাদুর রহমান কিরন উদুল ফিতরের পর মন্ত্রনালয়ের অনুমতি ছাড়াই ৭ দিন সিঙ্গাপুর ভ্রমণ করেছেন যা সম্পুর্ন বেআইনি। তিনি ওই ভ্রমণকালীন সময় বিপুল পরিমান নগদ অর্থ সিঙ্গাপুরে পাচার করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। দুদকে জমা দেয়া অভিযোগপত্রে নজরুল ইসলাম দাবি করেন, আসাদুর রহমান কিরনের ইনকাম ট্যাক্স ফাইল এবং ২০১৩ এবং ২০১৮ সালে নির্বাচনে তার প্রদত্ত হলফনামা তদন্ত করলে দুর্নিতীর চিত্র প্রকাশিত হবে।
সিটি কর্পোরেশনের মাস্টার রোলে নিয়োগ এর কথা বলে আসাদুর রহমান কিরন কমপক্ষে ২ শতাধিক লোকের কাছ থেকে জনপ্রতি ৪-৫ লক্ষ টাকা দাবি করছে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।সূত্র-ভোরের পাতা
এছাড়া কিরনের অনুসারী ও সহযোগী পাইলট এবং বিদ্যুৎসহ কিছু চক্র ২০২০-২০২১ সালের সম্পাদিত হওয়া কিছু কাজের বিল আটকিয়ে রেখে বিভিন্ন ঠিকাদারকে উত্তরার বিভিন্ন রেস্ট্রুরেন্ট এ ডেকে এনে বিল প্রাপ্তিতে ৩০-৪০ শতাংশ কমিশন দাবি করে। এবং ঠিকাদারদের জিম্মি করে বিভিন্ন প্রকার সুযোগ সুবিধা ভোগ করে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরন কক্সবাজারের হোটেল কক্স সিটিতে ২ টি ফ্ল্যাট কিনেছেন। এরমধ্যে একটি ফ্ল্যাটের পূর্বের মালিক ছিলেন ৫ নং ওয়ার্ড এর কাউন্সিলর দবির সরকার। এছাড়া হাজী মোকলেছুর রহমানের কাছে ১০ কোটি টাকা জমি ক্রয় বিক্রির জন্য প্রদান করেছেন কিরন। এমনকি প্রিয়াঙ্কা সিটিতেও ফ্ল্যাট কিনেছেন বলেও জানা গেছে।
সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, গতমাসে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন ৮১ টি প্যাকেজের ১টি টেন্ডার আবান করে। টেন্ডারগুলো আসাদুর রহমান কিরনের ৪৩ নং এবং ৪৪ নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন কাজের টেন্ডার তালিকা দেখলে এটা সুস্পষ্টভাবে প্রমানিত হবে যে এই টেন্ডারটি থেকে কিরন অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে ১০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার একটি মহাপরিকল্পনা করেছেন যা তদন্ত হওয়া একান্ত প্রয়োজন।