নওগাঁ জেলা প্রতিনিধিঃ
নওগাঁয় মার্কেটের ২য় তলায় “আই এফ আই সি’ ব্যাংক শাখা”র পার্শ্বে থাকা একটি “বালিকা” মাদ্রাসায় অগ্নিকান্ড-মাদ্রাসার মূল গেটে তালা দিয়ে অগ্নিকান্ডের সময় পরিচালক ছিলেন বাইরে।জীবনের ঝুকি নিয়ে স্থানিয়রা মাদ্রাসার ঘড়ের ভেতর আটকে থাকা শিশু শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করায় অল্পের জন্য রক্ষা পেলো ৬৫ জন শিশুর জীবন। এসময় শিশুদের উদ্ধার ও আগুন নেভাতে গিয়ে ফিরোজ হোসেন (২৭) নামের এক যুবক মুখ মন্ডলে “চোখে” আঘাত প্রাপ্ত হয়েছেন।
এ অগ্নিকান্ডের ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার দিনগত রাত সারে ৮ টারদিকে নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার চৌমাশিয়া (নওহাটামোড় বাজারে)।
স্থানিয় ও উদ্ধার কাজে নিয়োজিতরা জানান, বাজারের মসজিদ এর পার্শ্বে “রেজিয়া প্লাজা” নামের একটি মার্কেটের ২য় তলায় থাকা “তাহযীবুল বানাত” (বালিকা) মাদ্রাসা (লিল্লাহ বোডিং) এ আগুন ধরলে পার্শ্বের বাসার ছাঁদ থেকে আগুনের লেলিহান ও ধোয়া দেখতে পেয়ে একজন দৌড়ে এসে আগুন লাগার খবর দেন। সাথে সাথে আমরা অনেকেই ২য় তলায় মাদ্রাসাতে থাকা শিশুদের উদ্ধারে এগিয়ে গেলেও মাদ্রাসার মূল গেটে তালা থাকায় উদ্ধার কাজ বাঁধাগ্রস্থ হয়। এসময় মাদ্রাসার ভেতর আটকে থাকা শিশুরা আতংকিত হয়ে হৈ চৈ করছিল। এমনকি ঐ মার্কেটের নিচ তলায় থাকা দোকানীরাও আতংকিত হয়ে মালামাল নিরাপদে নিতে শুরু করেন।
উদ্ধার কাজে জড়ীত জাকির হোসেন নামে স্থানিয় এক যুবক জানান, গেটে তালা ও ভেতরে আটকে পড়া শিশুদের চিৎকারে আমরা দিশেহারা হয়ে পরি এবং এক পর্যায়ে চাবি পেয়ে তালা খুলে গোটা ঘড় ধোয়ায় আচ্ছন্ন তারপর জীবনের ঝুকি থাকা সত্বেও আমরা ঘড়ের ভেতর প্রবেশ করে শিশুদের উদ্ধার করি। উদ্ধারের সময় ফাঁয়ার সার্ভিস এর (মহরায়) শেখানো কৌশল অবলম্বন করে মাদ্রাসার ভেতর থাকা গ্যাস সেলিন্ডার এর আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে “পানিতে ভেজা চটের বস্তা” দিয়ে সেলিন্ডারের আগুন নেভানোর সময় আগুনের লেলিহানের ঝাপসা লেগে ফিরোজ হোসেন নামের এক মৎস্যজিবী যুবক মুখ-মন্ডল ও চোখে আঘাত প্রাপ্ত হলেও শিশু শিক্ষার্থীদের নিরাপদে বের করা সম্ভব হয়েছে।
মাদ্রাসার পরিচালক পরিচয় দানকারী হাফেজ মাও মোঃ নুরনবী হাবিবী ওরফে রাজু বলেন, আমি গেটে তালা দিয়ে বাইরে ঔষুধ আনতে গিয়েছিলাম, এরি মাঝেই গ্যাসের সেলিন্ডার থেকে আগুন লাগে, তবে কারো কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি, শিশু শিক্ষার্থীসহ মাদ্রাসা স্টাফরা নিরাপদে রয়েছেন, তবে সবাই এমহূর্তে ভঁয় পেয়ে আংকিত রয়েছেন।
খবর পেয়ে মহাদেবপুর ফায়ার সার্ভিস এর একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌছান।
বগুড়ার গাবতলী উপজেলার দূর্গাহাটা গ্রামের ইয়াচিন আলীর ছেলে হাফেজ মাও মোঃ নুরনবী হাবিবী ওরফে রাজু গত ২০২১ ইং সালের প্রথমদিকে চৌমাশিয়া (নওহাটামোড়) বাজারে এসে “মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা” করা সহ শিক্ষার্থী ভর্তি শুরু করেন।বর্তমানে এ মাদ্রাসায় ৬৫ জন শিশু শিক্ষার্থী রয়েছেন। এমনকি মাদ্রাসাটি পরিচালনা করার জন্য কোন কমিটি নেই। নেই কোন অনুমোদন। তারপরও পরিচালক পরিচয় দানকারী
হাফেজ মাও মোঃ নুরনবী হাবিবী ওরফে রাজু নিজেই তার ইচ্চামত পরিচালক ও শিক্ষক হিসাবে মাদ্রাসাটি পরিচালনা করে আসছেন বলে জানিয়েছেন স্থানিয়রা।
গেটে তালা, পরিচালনা কমিটি, অনুমোদনসহ ক্ষয়ক্ষতি বিষয়ে জানতে প্রতিবেদক বুধবার ১ জুন বিকাল সোয়া ২ টায় হাফেজ মাও মোঃ নুরনবী হাবিবী ওরফে রাজু’র সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে কোন তথ্য না দিয়ে ফোনের লাইন কেটে দেন।