ফারজানা খান লিয়া, মানিকগঞ্জ
মানিকগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স শাহিনুর ইসলামের বিরুদ্ধে কর্তব্য কাজে অবহেলা, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের সঙ্গে অসদাচরণ, সহকর্মীদের শারীরিক হেনস্তা করাসহ নানা অভিযোগ উঠেছে। শাহিনুর ইসলামের এমন আচরণে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কসহ কর্মরত চিকিৎসক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও নার্সরা। এতে হাসপাতালটির সুনাম ও স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাপনার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এবিষয়ে সম্প্রতি শাহিনুর ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক, কর্মরত ডাক্তার, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও সহকর্মী নার্সরা পৃথক পৃথক ভাবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত শাহিনুর ইসলাম মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বান্দুটিয়া এলাকার সুজন আলীর ছেলে।
অভিযোগ ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জেলা সদর হাসপাতালে কর্মরত সিনিয়র স্টাফ নার্স শাহিনুর ইসলাম স্থানীয় হওয়ায় এবং নিজেকে বিশেষ একটি রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতা হিসেবে দাবি করে নিজের প্রভাব খাটিয়ে কর্তব্য কাজে অবহেলা করেন।
এছাড়া চিকিৎসক, নার্সসহ হাসপাতালের কর্মরত চিকিৎসক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও সহকর্মী নার্সদের সঙ্গে, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের সঙ্গে অসদাচরণ, সহকর্মীদের শারীরিক হেনস্তা করে আসছে।
এ বিষয়ে ইতিপূর্বে তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ দায়ের হয়েছিলো। যে কারণে সে মুচলেকা দিয়ে ক্ষমাও চেয়েছিলো। দুই বছর আগে তাকে প্রশাসনিক কারণে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলী করা হয়েছিলো। পরবর্তীতে সে পুনরায় মানিকগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে সংযুক্ত হলে ১৫০ টাকার স্ট্যাম্পে চাকরিবিধি বহির্ভূত কোন কাজ ভবিষ্যতে করবে না মর্মে মুচলেকা দেয়। তারপরও তার আচরনের কোন পরিবর্তন হয় নাই।
প্রতিনিয়ত হাসপাতালের কর্মরত সহকর্মীদের শারীরিক ভাবে হেনস্তা করে আসছে সে। এছাড়া হাসপাতালে আগত রোগীদের বিভিন্ন ক্লিনিকে নিয়ে কমিশন গ্রহন, সরাসরি টাকা নেয়া, হাসপাতালে চাকরি দেওয়ার কথা বলে সহজ সরল লোকদের নিকট থেকে টাকা নেয়া, বিভিন্ন ওয়ার্ড ইনচার্জকে জিম্মি করে চাঁদা আদায় করারও অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়েকের সাথে অসদাচরণসহ নানা অভিযোগে শাহিনুরের বিরুদ্ধে মানিকগঞ্জ সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন তত্ত্বাবধায়কের পক্ষে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট মো. হাবু মিয়া। যা আদালতের মাধ্যমে তদন্তাধীন রয়েছে।
এছাড়া প্রথম স্ত্রীর অনুমতি না নিয়ে এই হাসপাতালের রেশমী আক্তার নামের এক নার্সকে ফুসলিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করেছে এই শাহিনুর ইসলাম। তাদের স্বামী- স্ত্রী বয়সের ব্যবধান অর্ধেক।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত সিনিয়র স্টাফ নার্স শাহিনুর ইসলামের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ তুলেছেন তা সত্য নয়।
এ বিষয়ে জানতে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ বাহাউদ্দিনের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে জানান, হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স শাহিনুর ইসলামের বিরুদ্ধে কর্তব্য কাজে অবহেলা, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের সঙ্গে অসদাচরণ, সহকর্মীদের শারীরিক ভাবে হেনস্তা করাসহ নানা অভিযোগ আসায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য লিখিত ভাবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।