তীব্র গরমে পুড়ছে ইউরোপ। এর মধ্যে রেকর্ড তাপমাত্রার পূর্বাভাসের মুখে জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে যুক্তরাজ্যের আবহওয়া দপ্তর। পাশাপাশি ইংল্যান্ডে জারি করা হয়েছে তাপপ্রবাহের লাল সতর্কতা।
পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী সপ্তাহে তাপমাত্রা রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছে যেতে পারে। সোম এবং মঙ্গলবার ইংল্যান্ডের কয়েকটি অংশে ‘তাপপ্রবাহের চরম সতর্কতা’ জারি করা হলো।
আবহাওয়া দপ্তর তাদের ওয়েবসাইটে বলেছে, সোম ও মঙ্গলবার মাত্রাতিরিক্ত, সম্ভবত রেকর্ড-ভাঙা তাপমাত্রা দেখা যেতে পারে। রাতেও যুক্তরাজ্যের বিশেষ করে শহর এলাকাগুলোতে অস্বাভাবিকরকম গরম থাকতে পারে।
পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, বর্তমানে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যাওয়ার ৫০ শতাংশ সম্ভাবনা আছে এবং তাপমাত্রা আরও বেড়ে নতুন রেকর্ড গড়তে পারে।
যুক্তরাজ্যে এর আগে ২০১৯ সালের ২৫ জুলাইয়ে কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি বোটানিক গার্ডেনে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৮ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল।
এ সপ্তাহের শুরুর দিকে যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা সংস্থা এবং আবহাওয়া দপ্তর দেশের কয়েকটি অংশে ৩ মাত্রার তাপ-স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি করেছিল।
এই সতর্কতার আওতায় ঝুঁকির মুখে থাকা মানুষজনকে সুরক্ষিত রাখতে বাড়তি সামাজিক ও স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা নিতে হয়।
আর ৪ মাত্রার লাল সতর্কতা এর চেয়েও আরও একধাপ উপরের। তাপমাত্রা মাত্রারিক্ত কিংবা দীর্ঘস্থায়ী হলে সেক্ষেত্রে এই সতর্কতা জারি করা হয়।
এই স্তরে কেবল ঝুঁকিতে থাকা মানুষজনই নয়, বরং স্বাস্থ্যবান মানুষেরাও চরম আবহাওয়ায় অসুস্থতা এবং মৃত্যুর শিকার হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
এদিকে, ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশে প্রবল বাতাস ও শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। ফ্রান্সের শহর ও গ্রামের বাসিন্দারা নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে বাড়ি ছেড়ে যাচ্ছেন। খবর বিবিসি।
স্পেন ও পর্তুগালে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপর। বেশ কয়েকটি এলাকায় দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। এই দুই দেশে গত কয়েক দিনে দাবদাহে ২৮১ জনের মৃত্যু হয়েছে। তীব্র গরম ও অতিরিক্ত শুষ্ক আবহাওয়ার জন্য এত মানুষ মারা যাচ্ছেন বলে তাঁরা মনে করছেন। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বৃদ্ধ, শিশু ও দীর্ঘস্থায়ী রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোপার্নিকাস জরুরি ব্যবস্থাপনা পরিষেবা দক্ষিণ ইউরোপ ও মরক্কোজুড়ে সবচেয়ে বড় আগুনের ঝুঁকির আশঙ্কা করে একটি মানচিত্র টুইটারে পোস্ট করেছে।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লিউএমও) শুক্রবার বলেছে, তাপপ্রবাহে শহর ও নগরগুলোর বাতাসের মান আরও খারাপ হতে পারে। ডব্লিউএমওর বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা লোরেনেজো লাব্রাডোর জেনেভায় সংবাদ সম্মেলনে বলেন, স্থিতিশীল এবং স্থবির বায়ুমণ্ডল দূষণকারী কণা ও পদার্থ ঠেকাতে ঢাকনা হিসেবে কাজ করে। এর ফলে বাতাসের মান খারাপ হয়, স্বাস্থ্যের ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করে, বিশেষ করে শারীরিকভাবে নাজুক মানুষের ওপর।