জার্মানির ধনী ব্যাভারিয়ান শহর অগসবার্গে গ্রীষ্মের রাতগুলো এখন ভয়ঙ্কর অন্ধকার এবং শান্ত। শহরের ঐতিহাসিক ভবনগুলোর সম্মুখভাগ আলোকিত নয়, রাস্তার আলো ম্লান এবং বেশিরভাগ ফোয়ারা বন্ধ।
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের শুরুর পর থেকে জার্মানির আশেপাশের অনেক শহরের মতো অগসবার্গও জ্বালানি সঞ্চয়ের পথে হাঁটছে। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের ফলে তেল ও গ্যাসের দাম বেড়েছে এবং জীবনযাত্রার সংকট তৈরি হয়েছে৷
অগসবার্গের মেয়র ইভা ওয়েবার রয়টার্সকে বলেন, শহরের জ্বালানি বিল গত বছরের প্রায় ১৫ দশমিক মিলিয়ন ইউরো থেকে প্রায় দ্বিগুণ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইভা ওয়েবার বলেন, আমরা অগসবার্গের নাগরিকদের দেখাতে চাই যে আমরা সত্যিই কঠিন সময়ের মুখোমুখি হতে পারি…আমাদের সবাইকে সত্যিই বিদ্যুৎশক্তি সঞ্চয় করতে হবে।
শহরটির পাবলিক পুলে তাপমাত্রাও কমিয়েছে। কোন কোন ট্রাফিক লাইট বন্ধ রাখা যেতে পারে তা নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা চলছে। অন্যান্য শহরের মতো এই শহরেও সরকারি ভবনগুলোতে উত্তাপ সীমিত রাখার কথা ভাবা হচ্ছে।
জার্মানি রাশিয়ান গ্যাসের উপর সবচেয়ে বেশি নির্ভরশীল দেশগুলোর মধ্যে একটি। নর্ড স্ট্রিম-১ পাইপ লাইন দিয়ে রাশিয়ার গ্যাস সরবরাহে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়ায় ইউরোপের প্রধান অর্থনৈতিক শক্তি জার্মানির শিল্প-কারখানাগুলো ভবিষ্যৎ হুমকিতে পড়েছে। শীতপ্রধান দেশটিতে আসন্ন শীতে নাগরিকদের বাড়িঘর গরম রাখতে বাড়তি বিদ্যুতের জোগান দেয়া সম্ভব হবে কি না তা নিয়েও দেখা দিয়েছে সংশয়।
পরিস্থিতি মোকাবেলায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দিকে ঝুঁকছে জার্মানি। দেশটির অর্থমন্ত্রী রোবার্ট হাবেক এই সংকটকে স্মরণকালের অন্যতম আখ্যা দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে তিনি বলেছেন, রাশিয়া থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের অন্যতম কাঁচামাল গ্যাস রপ্তানি কমিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। সেই সঙ্গে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র ফের সচল করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সূত্র: রয়টার্স