ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) স্থানীয় সময় সকাল ১০টা থেকে শুরু হবে। বুধবার (২২ নভেম্বর) কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরার সাক্ষাৎকালে এ তথ্য জানান ফিলিস্তিনি মুক্তিকামী সংগঠন হামাসের কর্মকর্তা মুসা আবু মারজুক।
তিনি বলেছেন, দীর্ঘ দেড় মাসের বেশী সময় ধরে হামাস ও ইসরায়েলের মাঝে সাময়িক যুদ্ধবিরতি চুক্তি আগামীকাল সকাল ১০টা থেকে কার্যকর হবে।
চুক্তি অনুযায়ী ৫০ জিম্মিকে মুক্তি দেয়ার পর প্রতি ১০ জন জিম্মির মুক্তির বিনিময়ে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ এক দিন বাড়াতে রাজি আছে ইসরায়েল।
বিবৃতিতে কাতার আরও জানিয়েছে, প্রস্তাবিত চার দিনের যুদ্ধবিরতির আওতায় নিজেদের জিম্মায় থাকা ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিকদের মধ্যে ৫০ জন নারী ও শিশুকে মুক্তি দিতে রাজি হয়েছে হামাস। বিনিময়ে ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ১৫০ জন নারী ও অপ্রাপ্তবয়স্ককে ছেড়ে দেয়া হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে যুদ্ধ চলার পর গত সপ্তাহে কাতার এবং মিশরের মধ্যস্থতার ভিত্তিতে ইসরায়েলের কাছে যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছিল কাতারে অবস্থানরত হামাসের হাইকমান্ড।
বুধবার (২২ নভেম্বর) এই যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। এর পরপরই হামাসের পক্ষ থেকে টেলিগ্রামে একটি বিবৃতি দেয়া হয়েছে। বিবৃতি দিয়েছে ইসরায়েল সরকারও। এসব বিবৃতি থেকে যুদ্ধবিরতির কিছু শর্তের কথা জানা গেছে।
বিবৃতিতে হামাস জানিয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী গাজা উপত্যকায় সব এলাকায় আকাশ ও স্থলপথে যেকোনো ধরনের অভিযান পরিচালনা থেকে বিরত থাকবে। এছাড়াও চুক্তি অনুযায়ী ইসরায়েলি সামরিক যান চলাচলও বন্ধ থাকবে।
চিকিৎসা উপকরণ, জ্বালানিসহ মানবিক সহায়তা নিয়ে শত শত ট্রাক সীমান্ত পেরিয়ে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ এসব ট্রাককে গাজায় ঢোকার অনুমতি দেবে।
হামাস আরও জানিয়েছে, দক্ষিণ গাজায় চার দিনের জন্য ড্রোন ওড়ানো বন্ধ রাখতে সম্মত হয়েছে ইসরায়েল। আর উত্তর গাজায় প্রতিদিন ছয় ঘণ্টা (স্থানীয় সময় সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত) ড্রোন ওড়ানো বন্ধ রাখা হবে।
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়েছে, সাময়িক যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকা অবস্থায় গাজার যেকোনো এলাকা থেকে যে কাউকে আটক করা কিংবা কারও ওপর হামলা না করার বিষয়েও সম্মত হয়েছে ইসরায়েল।