প্রতিবছর হাজার হাজার শিক্ষার্থী পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কোচিং ও উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য গ্রাম থেকে শহরমুখী হচ্ছে। এই ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের থাকার জন্য ঢাকার ফার্মগেট, পান্থপথ, গ্রিনরোড, আজিমপুর ও এর আশেপাশের এলাকায় গড়ে উঠেছে বেসরকারি মালিকানায় বিপুল সংখ্যক হোস্টেল। কিন্তু বেশিরভাগ হোস্টেলেই রয়েছে পুষ্টিকর খাদ্য, নিরাপদ পানি ও শৌচাগারের তীব্র সংকট। হোস্টেলভেদে প্রতিজন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে প্রতিমাসে ৬ থেকে ১০ হাজার টাকা ফি নেওয়া হলেও একই রুমে গাদাগাদি করে সিট দেওয়া হচ্ছে অতিরিক্ত শিক্ষার্থীদের। নেই পর্যাপ্ত আলো ও বাতাসের ব্যবস্থা। প্রতি ১০-১৫ জনের জন্য রয়েছে একটিমাত্র শৌচাগার যা নিয়মিত পরিস্কারের কোনো ব্যবস্থা নেই। আবার প্রতিমাসেই নষ্ট হয়ে যায় শৌচাগার অথবা রুমগুলোর বিভিন্ন অংশ। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সার্ভিস চার্জের টাকা নেওয়া হলেও করা হয় না কোনো রক্ষণাবেক্ষণ। এছাড়া হোস্টেলগুলোর পানি খাওয়ার পুরোপুরি অনুপযোগী। কিছু কিছু হোস্টেলে নামমাত্র ফিল্টার থাকলেও সে পানি পান করে শিক্ষার্থীরা ভুগছেন টাইফয়েড ও ডায়রিয়া সহ নানা পানিবাহিত রোগে। বাধ্য হয়েই অনেককে আশেপাশের মসজিদ কিংবা ওয়াসার পাম্প থেকে লাইন ধরে পানি আনতে হচ্ছে। কিন্তু সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়ছেন নারী শিক্ষার্থীরা। অন্যকোনো ব্যবস্থা না থাকায় তাদের একপ্রকার বাধ্য হয়েই পানি কিনে পান করতে হচ্ছে। হোস্টেলে ওঠার আগে খাদ্যের যে তালিকা দেওয়া হয় তার সাথে শিক্ষার্থীদের প্রদত্ত খাবারের কোনো মিল নেই। আবার অনেক সময় বাসি ভাত দেয়ায় মুখেই তুলতে পারেন না বহু শিক্ষার্থী। কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও তারা কোনো কর্ণপাত করেন না। সবকিছু মিলিয়ে চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে এসব হোস্টেলগুলোর শিক্ষার্থীরা। অনেকে দুর্ভোগ সইতে না পেরে চলে যাচ্ছেন আপন ঠিকানায়। তাই ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের মানসম্মত আবাসন নিশ্চিত ও হোস্টেলগুলোতে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি করা এখন সময়ের দাবি।
লেখকঃ মোঃ সৈয়দুর রহমান
শিক্ষার্থী,ঢাকা কলেজ,ঢাকা।