রাজশাহীর :- ঈদ উল ফিতরের ঈদ ঘিরে জমে উঠেছে রাজশাহীর কাপড়ের বাজার। কাপড়পট্টি বলে পরিচিত রাজশাহীর সাহেব বাজারে যেন ধাপ ফেলার জায়গা নাই। কাপড়ের আরেক বাজার পাশের আরডিএ মার্কেটেও একই অবস্থা। ভিড় ঠেলে এক দোকান থেকে আরেক দোকানে যেতে হচ্ছে ক্রেতাদের। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে কেনাকাটা। করোনার ধকল সামলিয়ে গত দুই বছর পরে এবারও রাজশাহীর ঈদ বাজারে স্বাচ্ছন্দে কেনাকাটা করতে পারছেন ক্রেতারা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, এবারও রাজশাহীর কাপড়ের বাজারে বেচা-কেনা বেশ ভালো হচ্ছে। এক কথায় জমে উঠেছে ঈদের বাজার। গত বছরের চেয়ে এবার প্রতিদিন অন্তত দ্বিগুন ব্যবসা হচ্ছে বলে বলেও জানান তাঁরা।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে রাজশাহীর সাহেব বাজার কাপড় পট্টি ঘুরে দেখা গেছে, তীব্র গরম আর রোদ মাথায় নিয়ে ক্রেতারা ছুটছেন এক দোকান থেকে আরেক দোকানে। কেউ দোকানের ভিড় ঠেলে ভিতরে বসে কাপড় দেখছেন নিজের পছন্দমতো। কেউ কিনছেন, কেউ বা জায়গা না পেয়ে দাঁড়িয়ে থেকেই পছন্দ করছেন, পছন্দ হলে দাম-দর করছেন।
এ বাজারের ভূঁইয়া বস্ত্রলায়ে গিয়ে দেখা যায়, দোকানে সামনে পাতা টুলগুলোতে ভর্তি ক্রেতারা। বসার আর কোনো জায়গা নাই। তাই আরও জনা দশেক ক্রেতা দাঁড়িয়ে থেকেই দোকানের কর্মচারী ও মালিকের সঙ্গে দাম-দর করছেন বা পছন্দের কাপড় দেখাতে বলছেন। দোকানের মালিক-কর্মচারী মিলে ৫ জনেও সামাল দিতে পারছেন না ক্রেতাদের।
এসময় কথা হয় ক্রেতা সাহিনা আক্তার নামের এক নারীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘গত দুই বছর করোনার ভয়ে বাজারেই আসতে পারিনি। এবার কয়েক দিন অ্যাসছি কাপড় কিনতে। অ্যাজ দিয়ে চারদিন তো হলোই। তাও ছাড়া পঢ়ছে একটা পর একটা। তবে বাড়ির কাছে বাজার তাই ্অ্যাসতে প্যারছি ইচ্ছ্যামতো। বাজারে ভিড়ও অনেক। এবার দামও বেশি কাপড়ের। তাও কিনতে হচ্ছ্যে।’
এ বাজারে কাপড় কিনতে আসা নাইমা আক্তার নামের এক নারী বলেন, ‘এবার বাজারে ধাপ ফেলানোর জায়গা পাচ্ছি না। ভিড় ঠেলে দোকানে দোকানে যেতে হচ্ছে। আবার যে জিনিস পছন্দ করছি সেই জিনেসের দামই বেশি। গত বারের চেয়ে এবার সব জিনিসিরে দাম বেশি। আমাদের মতো মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য এবার কেনা-কাটা করা খুব কঠিন হয়ে গেছে। কাপড়ের দাম দেখে বাজারে এসেও মুখ শুকিয়ে যাচ্ছে। নিজের টা কিনবো নাকি পরিবারের জন্য কিনবো।’
আরেক পাশের রাজ্জাক বস্ত্রলায়ের দোকানেও ভিড় ঠেলে গিয়ে দেখা যায়, সেখানেও বসার কোনো জায়গা নাই। জানতে চাইলে সেখানে থ্রি-পিচ কিনতে আসা রাজশাহী কলেজের ছাত্রী সুরাইয়া বিনতে বলেন, ‘এবার কাপড়ের দাম অনেক বেশি। গতবার যে থ্রি-পিচ দেড় হাজার টাকি ছিল, এবার সেটি আটারোশ টাকা কমপক্ষে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে দুই হাজার টাকার ওপরেও আদায় করছেন ব্যবসায়ীরা। এবার ভিড় দেথেও ব্যবসায়ীরা ইচ্ছেমতো দাম আদায় করছেন সুযোগে।’
নগরীর আরডিএ মার্কেটের প্রধান ফটক দিয়ে ভিড় ঠেলে যাতায়াত করছিলেন ক্রেতারা। এই মার্কেটের একে বারে ভির পার্যন্ত যেতে ভিড় ঠেলে যাতায়াত করতে হচ্ছে ক্রেতাদের। আরডিএ মার্কটের গোল্ডেন গার্মেন্টেসের কর্মচারী মতিউর রহমান বলেন, এবার বেচা-কেনা বেশ ভালো। গভীর রাত পর্যন্ত বেচা-কেনা হচ্ছে। ক্রেতারাও আসছেন ব্যাপক। অনেক সময় ক্রেতা সামাল দিতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। গত দুই বছর ঈদের বাজারে বসে থেকে সময় কেটেছে। এবার সেটি পুশিয়ে যাবে আশা করি।’
এ বাজারের কাপড় শেখ গার্মেন্টেসের কর্মচারী নাদের আলী বলেন, ‘এবার রোজার শুরু থেকেই ভালো ব্যবসা হচ্ছে। আশা করছি একেবারে চাঁন রাত পর্যন্ত আরও ব্যবসা বাড়বে। এখনোই ভিড় লেগেই থাকছে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত। এবারও ভারতীয় থ্রি-পিচ ও শাড়ির চাহিদা বেশি ক্রেতাদের।’