রাম বসাক, শাহজাদপুর (সিরাজাগঞ্জ) প্রতিনিধি : বন্যায় আবারও যমুনা নদীর পানি বাড়তে থাকায় অতিরিক্ত স্রোতে গত কয়েক দিনে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে প্রায় ৯টি বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। উপজেলার গালা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মারজান ফকিরপাড়া গ্রামের এসব বাড়ি নদীতে বিলীন হয়। নদী ভেঙ্গে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের প্রায় ৪০ গজ কাছে চলে এসেছে। এখনই অতিদ্রুত ভাঙ্গন ঠেকানো না গেলে যমুনা নদী আঘাত হানবে ১শ ৩৫ কোটি ৫০ লাখ কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাধে। পানি উন্নয়ন বোর্ড জিও প্যাক ডাম্পিং শুরু করলেও তা ধীরগতির জন্যই ৯টি বাড়ি যমুনাতে বিলীন হয়েছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভাঙ্গন কবলিত পরিবারের সদস্যরা সংসারের জিনিসপত্র সরিয়ে নিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব ও অসহায় হয়ে পরিবারের সদস্যরা শিশু-সন্তানদের নিয়ে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। খোলা আকাশের নিচে জড়ো করে কেউ কেউ শিশু-সন্তানদের নিয়ে আহাজারি করছেন। ভাঙ্গনের স্বীকার ভুক্তভোগীরা বলেন, শুক্রবার সকালের সময় যমুনা নদীতে তীব্র ঢেউ শুরু হয়। মুহূর্তে যমুনা পাড়ের ৯টি বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। জীবন নিয়ে সবাই ঘর থেকে বের হতে পারলেও বেশিরভাগ মূল্যবান জিনিসপত্র রক্ষা করতে পারেননি। সেই থেকে তারা খোলা আকাশের নিচে রয়েছেন।
এ বিষয়ে গালা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বাতেন বলেন, ২০০৯ সালে যমুনার তীর সংরক্ষণ বাঁধটি নির্মাণের পর থেকে সংস্কার ও সঠিকভাবে তদারকি না করায় আজ আমার ইউনিয়নের ৯টি বাড়ি যমুনায় বিলীন হয়েছে। তিনি আরও অভিযোগ করেন, একটি প্রভাবশালী মহল অবৈধ ড্রেজারের মাধ্যমে নদী তীর রক্ষা বাঁধের পাশ ঘেষে অনিয়মতান্ত্রিক ভাবে বছরের পর বছর বালু উত্তোলনের ফলেই এই ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। অবৈধ ড্রেজার বন্ধে ইতিপূর্বে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকর কোন পদক্ষেপ গ্রহন করা দেখা যায়নি। দ্রুত এই ভাঙ্গন রক্ষায় পদক্ষেপ না নিলে যেকোন সময় আঘাত হানবে প্রায় ১শ ৩৫ কোটি ৫০ লাখ কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাধে। তিনি আরও বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য দ্রুত সাহায্য সহযোগিতা চেয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। কিন্তু এখনও কোন সাহায্য সহযোগিতা হাতে পাওয়া যায়নি। পেলে তাদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।
এই বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ তরিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ভাঙ্গন রোধে জিও প্যাক ডাম্পিং শুরু করা হয়েছে।