নিজস্ব প্রতিবেদকঃ একজন সফল তরুন উদ্যোক্তার গল্প আমাদের দেশ তৃতীয় বিশ্বের একটি স্বল্পোন্নত দেশ। আর জাতি হিসাবেও আমরা উন্নয়নশীল। তাইতো পৃথিবীতে যে কয়েকটি দেশে বেকার সমস্যা সবচেয়ে চরমে তারমধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। সরকারি চাকরির মোহে যখন ছুটে চলছে লাখো তরুণ, তখনও কিছু স্বপ্নবাজ তরুণ-তরুণী নিজেরাই উদ্যোগ গ্রহণ করছে নিজের-পায়ে দাঁড়ানোর। একদিকে পড়ালেখা অন্যদিকে ক্ষুদ্র ব্যবসা, দুটোই সমানতালে চালিয়ে নিচ্ছেন এবং টিকে থাকার লড়াইয়ে সামিল হচ্ছেন তারা। বাংলাদেশের অসংখ্য তরুণ উদ্যোক্তাদের মধ্যে রয়েছেন।যেখানে বেশ বড় অংকের তরুণ-তরুণী নিজেদের সংসারের হাল ধরতে নাজেহাল অবস্থা পার করছেন,সেখানে কিছু তরুণ সমাজে উজ্জ্বল দৃষ্ঠান্ত স্থাপন করেছেন।
বাংলাদেশের অসংখ্য তরুণ উদ্যোক্তাদের মধ্যে রয়েছেন। তেমনি একজন পটুয়াখালীর গর্বিত সন্তান ও শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজির ফ্যাশন ডিজাইন ও প্রযুক্তি বিভাগের শিক্ষার্থী মোঃ আল-আমিন খান। এই স্বপ্নবাজ তরুণ উদ্যোক্তার গল্প শুনাব আপনাদের। মোঃ আল-আমিন খানের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন- বাংলা৫২ নিউজ প্রতিনিধি।
উদ্যোক্তা হিসেবে আপনার শুরুটা কেমন ছিল?
আল-আমিনঃ নিজের জমানো মাত্র ৫০০ টাকা পুজি নিয়ে সেই টাকা দিয়ে ফানুস কিনে ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে প্রথম অনলাইন ব্যবসা ‘ব্লু আইডেনটিক’ এর যাত্রা শুরু হয়েছিল।
শিক্ষার্থীও কঠোর পরিশ্রম করছেন কিভাবে?
আল-আমিনঃ আমি যখন ক্ষুদ্র পরিসরে কাজ শুরু করেছিলাম তখন অনেকেই ঠাট্টা, তামাশা করত। তখন বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বড় অনলাইন পাইকারী ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আলিবাবা’র প্রতিষ্ঠাতা, সাবেক সিইও ও বর্তমান নির্বাহী চেয়ারম্যান জ্যাক মা এর জীবনী পড়ি, সেই থেকে আমার পরিবার ও বন্ধুমহল আমাকে উৎসাহ দিতেন। তাদের অনুপ্রেরণাতেই আজ আমি এই জায়গায় এসেছি।
আপনি কেন উদ্যোক্তার পেছনে ছুটলেন?
আল-আমিনঃ যে পরিমাণ শিক্ষিত জনশক্তি শ্রমবাজারে প্রবেশ করছে, দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, তাদের কর্মক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে অতি সীমিত! ফলে দিন দিন বেকারত্ব বেড়েই চলেছে! তাই আমি মনে করি চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হতে হবে। কারণ বর্তমান সময়ে বেকারত্ব দূরীকরণে একজন সফল উদ্যোক্তার কোনো বিকল্প নেই আর আমাদের দেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিনিও চান আমরা তরুনরা উদ্যোক্তা হই।
আপনি কী কী পণ্য নিয়ে কাজ করছেন?
আল-আমিনঃ আমরা সাধারণত ছেলেদের সকল পোশাক নিয়ে কাজ করি, যেমন: প্যান্ট, শার্ট, টি-শার্ট, পোলো শার্ট, হুডি, পাঞ্জাবি, বক্সার ইত্যাদি। এছাড়া শীতের সময় সকল প্রকার শীতের কালেকশন নিয়েও কাজ করছি এবং নিজেরাই ডিজাইন করে নিজেরাই তৈরি করছি।
আপনার প্রতিষ্ঠানের গ্রাহক কারা?
আল-আমিনঃ অনলাইন ব্যবসা হওয়ায় সারা দেশেই আমাদের অসংখ্য গ্রাহক রয়েছে।
নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য আপনার কী কী পরামর্শ রয়েছে?
আল-আমিনঃ স্বাবলম্বী হয়ে বেঁচে থাকার স্বার্থকতাটাই আলাদা। তাই বলব যা করতে হবে ছাত্রজীবন থেকেই শুরু করতে হবে, হোক না সেটা ক্ষুদ্র পরিসরে। একজন উদ্যোক্তা হতে হলে আপনাকে অবশ্যই ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে লেগে থাকতে হবে প্রতিবন্ধকতা তো থাকবেই, তবে ইচ্ছা থাকলে তা অতিক্রম করা সম্ভব। আমি আমার পরিচিত অনেকেই দেখেছি যে, তারাও অনলাইন ব্যবসা শুরু করেছেন, তবে দুই-তিন মাসের মধ্যেই ব্যবসা বন্ধ করে ফেলেছেন। ব্যবসায় যে প্রথম মাসে আপনার অনেক বিক্রি হবে, এমন কোন শর্ত নেই। একজন সফল উদ্যোক্তা হতে হলে অবশ্যই ধৈর্য, পরিশ্রম এবং আন্তরিক হতে হবে। আপনাকে ডিজিটাল মার্কেটিং সর্ম্পকে জানতে হবে, আপনাকে পন্য প্যাকেজিং ও দ্রুত সময়ে ডেলিভারী সর্ম্পকে জানতে হবে। আমাদের দেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুব সমাজের জন্য বলেছেন সেটি হলো- ‘চাকরি করব না,চাকরি দেব’ যুবসমাজকে এই চিন্তা করার পরামর্শ দিয়েছেন। এভাবে যুবকরা আত্মকর্মী হলে আগামীতে বাংলাদেশে কেউ বেকার থাকবে না। যুবকরাই হবে বাংলাদেশের কর্ণধার।
আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
আল-আমিনঃ সারা দেশব্যাপী আমাদের সেবা অব্যাহত রয়েছে। আমার বিশ্বাস একদিন সারা বিশ্বে আমাদের পন্য পৌঁছাবে এবং ‘ব্লু আইডেনটিক’ একটা ব্র্যান্ড হিসেবে দাঁড়াবে সকল শ্রেনীর গ্রাহকের মাঝে। ইনশাআল্লাহ