রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্ব এখন সবচেয়ে বিপজ্জনক দশকের মুখোমুখি। মিত্রদের মস্কো থেকে সরে যেতে বাধ্য করতে রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমারা পারমাণবিক ব্ল্যাকমেইল করছে।
একই সঙ্গে যুদ্ধ বাধিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে পশ্চিমা তৎপরতার নিন্দা ও সমালোচনা করে পুতিন বলেন, তারা রক্তক্ষয়ী ভূ-রাজনৈতিক খেলায় মত্ত।
বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) দীর্ঘ এক বক্তৃতায় একথা বলেন তিনি।
রুশ প্রেসিডেন্ট পরিষ্কার করে বলেন, ইউক্রেনের সামরিক অভিযানের ব্যাপারে তার মধ্যে কোনও রকমের দুঃখবোধ নেই।
পুতিন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “আমরা ঐতিহাসিক একটি প্রান্তসীমায় দাঁড়িয়ে আছি। সামনে সম্ভবত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বিপজ্জনক, আনপ্রেডিক্টেবল এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দশক অপেক্ষা করছে। ঘটনা প্রবাহ একটি নিশ্চিত বৈপ্লবিক পরিবর্তনের দিকে যাচ্ছে।
প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেন, বিশ্ব ব্যবস্থার ওপর একাধিপত্য ধরে রাখার প্রচেষ্টা সত্ত্বেও পশ্চিমা শক্তি দিন দিন ক্ষয়ে যাচ্ছে। সারাবিশ্বের ওপর পশ্চিমাদের নিরঙ্কুশ আধিপত্যের অবসান হওয়ার ঐতিহাসিক মুহূর্ত নিকটবর্তী।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, পাশ্চাত্য বিশ্ব মানব সভ্যতাকে এককভাবে সামাল দিতে পারছে না। কিন্তু তারা বেপরোয়াভাবে সেই চেষ্টা চালাচ্ছে। বিশ্বের বেশিরভাগ মানুষ এখন আর আমেরিকার এই একাধিপত্য চায় না।
রাশিয়া কখনওই নিজেকে পশ্চিমাদের শত্রু বলে ভাবেনি বরং মস্কো পশ্চিমা দেশগুলো ও ন্যাটো জোটের বন্ধু হতে চেয়েছে বলেও দাবি করেন পুতিন।
রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, “আমি সবসময় সাধারণ জ্ঞানের ওপর বিশ্বাস করি এবং এ কারণে আমি নিশ্চিত যে, আজ হোক, কাল হোক বহু মেরুর বিশ্বব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা হবে এবং পশ্চিমারাই এর ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা শুরু করবে। সে আলোচনা যত তাড়াতাড়ি হয় ততই ভালো।
মস্কো-ভিত্তিক গবেষণা ও পরামর্শদাতা সংস্থা ভালদাই ফোরামে বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠানে পুতিন বক্তব্য দেওয়ার সময় বলেন, ‘রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্রের সম্ভাব্য ব্যবহার সম্পর্কে আমরা সক্রিয়ভাবে কিছু বলিনি। আমরা শুধুমাত্র পশ্চিমা দেশগুলোর নেতাদের মন্তব্যের ইঙ্গিতের বিষয়ে পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছি।’
পশ্চিমাদের অভিযুক্ত করে তিনি বলেন, তারা বিপজ্জনক, রক্তাক্ত, নোংরা খেলা খেলছে। বিশ্বের বেশিরভাগ সমস্যা সৃষ্টির জন্য পশ্চিমাদেরকে দোষারোপ করে পুতিন জোর দিয়ে বলেন, পশ্চিমের ‘একক আধিপত্য’ এখন শেষ হয়ে আসছে।
সূত্র: আল জাজিরা, বিবিসি।