অকার্যকর হয়ে পড়ছে বেশিরভাগ এন্টিবায়োটিক। আইইডিসিআরের গবেষণা তথ্য বলছে, কোনো কোনো অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ শক্তি হারিয়েছে ৯৭ শতাংশ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জীবন বাঁচানো এই ওষুধের যথেচ্ছ ব্যবহারের লাগাম টেনে না ধরলে, হুমকির মুখে পড়বে জনস্বাস্থ্য। তবে সঙ্কট মোকাবেলায় উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার, তৈরি হচ্ছে নীতিমালাও।
বারডেম হাসপাতালের ল্যাবে ডায়াগনসিস করা ৫৫ বছর বয়সী এক রোগীর রিপোর্ট থেকে জানা যায়; তার শরীরে সাতটি এন্টিবায়োটিকই অকার্যকর। একই অবস্থা পপুলার ল্যাবে আসা ৭০ বছর বয়সী আরেক রোগীর ক্ষেত্রেও। তার শরীরে রোগ নিরাময়ে কাজ করছে না ১২ ধরণের এন্টিবায়োটিকের কোনোটিই।
রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান- আইইডিসিআর-এর পাঁচ বছর ধরে চালানো গবেষণার তথ্য বলছে, দেশে প্রচলিত ৩০টি এন্টিবায়োটিকের প্রতিটিই এখন অকার্যকর হওয়ার দিকে ঝুঁকছে। প্রতি বছরই হারাচ্ছে এর কার্যক্ষমতা। অপ্রয়োজনীয় ও অতিরিক্ত ব্যবহারে কোনো কোনো এন্টিবায়োটিক প্রতিরোধশক্তি হারিয়েছে ৯৭ শতাংশ পর্যন্ত। এতে বিভিন্ন এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করেও সুস্থ করা যাচ্ছে না রোগীকে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জীবাণুর বিরুদ্ধে কার্যক্ষমতা হারানোয় রোগীদের শরীরে হাই-ডোজ কিংবা রিজার্ভ গ্রুপের এন্টিবায়োটিক দিতে বাধ্য হচ্ছেন চিকিৎসকরা। এতে ভবিষ্যতে রোগীর জন্য কার্যকর কোনো এন্টিবায়োটিক না থাকার শঙ্কা গবেষকদের। বিএসএমএমইউ-এর মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সোহেল মাহমুদ বলছেন, এন্টিবায়োটিকের ব্যবহার সংক্রান্ত নির্দেশনা থাকলেও তা মানেন না ক্রেতা-বিক্রেতা কেউই। এজন্য এন্টিবায়োটিক বিক্রি ও ব্যবহারে নীতিমালা প্রণয়ণের দরকার।
সঙ্কট মোকাবেলায় এন্টিবায়োটিকের মোড়কে লাল দাগ দিয়ে মানুষকে সতর্ক করতে চায় সরকার। প্রেসক্রিপশন ছাড়া ওষুধ বিক্রি করলে ২০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রেখে প্রণীত ওষুধ আইন-২০২২ মন্ত্রীসভায় অনুমোদনের অপেক্ষায়। তৈরি হচ্ছে বিক্রি ও ব্যবহারের নীতিমালাও।
এন্টিবায়োটিকের অকার্যকারিতা ঠেকাতে এক্সেস, ওয়াচ ও রিজার্ভ তিন শ্রেণিতে ভাগ করে রিজার্ভ ওষুধ ব্যবহারে কঠোর বিধি নিষেধ আরোপ করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।পূর্বপশ্চিমবিডি