মোঃ ইকবাল হোসেন, কুমিল্লা।। ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি থেকে ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক্স নিয়ে ২০১৩ সালে বিএসসি শেষ করেন প্রকৌশলী বদিউল আলম শাহীন ।
তারপর টানা সাত বছর বিভিন্ন কোম্পনীতে চাকুরী করেন তিনি।
২০২০ সালে করোনায় ছুটিতে বাড়িতে আসেন । অবসর সময় কাজে লাগাতে ৬ বিঘা জমির উপর গড়ে তুলেন ৫টি বিভিন্ন জাতের ফলের বাগান। অন্যদিকে মাছ চাষের জন্য সাড়ে ৬ বিঘা জমির উপর একটি পুকুর কাটেন। পুকুরের চারপাশেও সবুজ বনায়নের বিপ্লব ঘটান। তার উদ্যোক্তা হওয়ার প্রথম দিকের গল্পটা মোটেও সহজ ছিল না। অর্ধলক্ষেরও বেশি মাইনের সন্মানজনক পেশা ছেড়ে গায়ের মধ্যে কৃষি কাজ করার ব্যাপারটি কেউ পছন্দ করেনি। সেজন্য আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব ও পথচারীদের কাছে শুনতে হয়েছে নানা কথা। তারপরেও দমে যাননি তিনি।
অদম্য ইচ্ছে শক্তিতে এগিয়ে যাচ্ছেন নিজ স্বপ্ন পূরণের পথে ।
কৃষিবীদ শায়েখ সিরাজসহ অন্যান্যদের প্রোগ্রাম দেখে গত দুই বছরে করেছেন ৫টি ফলের বাগান ও মাছ চাষের জন্য ২টি বড় পুকুর।
প্রজেক্টের নাম দিয়েছেন সওদাগর এগ্রো ফার্ম। সওদাগর এগ্রোফার্মের ফলবাগানে ড্রাগন গাছ আছে ১৫’শ, বল সুন্দরি জাতের বড়ই গাছ আছে ৪’শ, মালটা গাছ ২’শ, পেয়ারা ১শ, লেবু গাছ ১শ, নারিকেল গাছ -৪০টি , লিচু গাছ -২০টি , আম গাছ আছে -৫০টি ।
বর্তমানে তার এগ্রোফামের্ প্রতিদিন গড়ে ৬ জন কর্মচারী কাজ করেন।
সওদাগর এগ্রোফার্মের সত্ত্বাধিকারী ইঞ্জিনিয়ার বদিউল আলম শাহিনের বাড়ি মুরাদনগর উপজেলা সীমানারপাড় গ্রাম।
পিতা মৃতঃ আব্দুল হাকিম সওদাগর ছিলেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক। দুই ভাই, এক বোনের মধ্যে তিনি তৃতীয় । বড় ভাই আলমগীর হোসেন তিনি একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার, স্ব-পরিবারে থাকেন ইংল্যান্ড।
আর বোন খাদিজা আক্তার লাবণ্য তিনি একজন ফার্মাকোলজি ডেনমার্কের বাসিন্দা ।
কৃষি উদ্যোক্তা ইঞ্জিনিয়ার বদিউল আলম শাহীন পেশা পরিবর্তন করে কিভাবে কৃষিতে আসলেন এ বিষয় নিয়ে কথা হয় প্রতিবেদকের সাথে । তিনি বলেন, “চাকুরি করা অবস্থায় কোম্পানী পরিবর্তন করে নতুন কোম্পানীতে জয়েন্ট করি। তখন কাজের খুব একটা চাপ ছিলনা। একদিন কোম্পানীর এমডি আমাকে অ্যাকোয়াপনিক্স নামে একটা প্রজেক্ট দেন।
এটি মূলত মাটি ছাড়া পানিতে মাছ ও গাছ উৎপাদন করার একটি কৌশল ।
এই প্রজেক্টে কাজ করতে গিয়ে ধীরে ধীরে কৃষিতে আগ্রহ জন্মায়। তারপর ইউটিউবে বিভিন্ন কৃষিবীদদের অনুসরণ করে জ্ঞান লাভ করি। করোনাকলীন সময়ে গ্রামে এসে ভিয়েতনামের নারিকেল চারা রোপনের মধ্যে দিয়ে কাজ শুরু করেছি। হালাল উপার্জনের জন্য কৃষিতে নিরাপদ বিনিয়োগ করে আগের চেয়ে ভালো আছি। এতে স্বাধীনতা আছে। সামনের দিকে আরো কিছু নতুন প্রজেক্ট তৈরির পরিকল্পনা আছে।
পরিবারের কিছু অসম্মতি থাকলেও বাকী জীবন কৃষি নিয়েই থাকতে চাই।