চলতি বছরে বাংলাদেশের ইতিহাসের সর্ববৃহৎ সার্কুলারে একেবারে প্রায় সাড়ে ৩৭ হাজার শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়। বিপুলসংখ্যক এই শিক্ষক নিয়োগ পাওয়ার পর যোগদান করেছেন জানুয়ারিতে। আড়াই মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো মেলেনি কোনো অর্থ। শুধু বেতন না। এই সময়ে এই শিক্ষকদের বৈশাখী ভাতা ও ঈদ ভাতাও মেলেনি। ঈদ সামনে রেখে নতুন যোগ দেয়া এই শিক্ষকরা কোনো বেতন না পেয়ে ভুগছেন হতাশায়।
নিয়োগ পাওয়া সাড়ে ৩৭ হাজার শিক্ষকের মধ্যে প্রায় সাত হাজার শিক্ষক সরাসরি রাজস্ব খাতভুক্ত। বাকি শিক্ষকরা চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি (পিইডিপি-৪) আওতায় সাব-কম্পোনেন্ট ‘প্রাক প্রাথমিক শিক্ষা’র আওতায়। এই শিক্ষকদের জানুয়ারি থেকে জুন মাসের বেতন ছাড় করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই)। মোট ছাড়কৃত অর্থের পরিমাণ দুইশ’ ৫৯ কোটি ৫৭ লাখ ১১ হাজার দুইশ’ ৫০ টাকা।
চলতি বছরের ২২শে মার্চ জারি করা হয় এই বিজ্ঞপ্তি। ছাড়কৃত অর্থ ৯টি খাতে ব্যবহার করা যাবে বলে উল্লেখ করা হয়। এরমধ্যে মূল বেতন প্রায় ১৪০ কোটি ৭৭ লাখ টাকা, বাড়ি ভাড়া প্রায় ৬৩ কোটি ৫১ লাখ, চিকিৎসা ভাতা প্রায় ১৯ কোটি ১৯ লাখ, উৎসব ভাতা প্রায় ২৬ কোটি ৫৬ লাখ, নববর্ষ ভাতা প্রায় পাঁচ কোটি ৩১ লাখ, টিফিন ভাতা প্রায় দুই কোটি ৫৫ লাখ, শিক্ষা ভাতা প্রায় ৭৩ লাখ, যাতায়াত ভাতা প্রায় সাত লাখ ৬৬ হাজার ও হাওর/দ্বীপ/চর ভাতা ৮৫ লাখ টাকা।
নতুন করে যোগ দেয়া শিক্ষকরা বেতন ভাতা না পেয়ে অসহায় দিন যাপন করছেন।
জেলা ও উপজেলা একাধিক শিক্ষা অফিসারের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তারা কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। বলছেন, অর্থ ছাড় হয়েছে। কিন্তু কবে শিক্ষকরা বেতন পাবেন তারা জানেন না। নতুন যোগদান করা শিক্ষকরাও একাধিকবার ফোন করে তাদের বেতনের তথ্য জানতে চাচ্ছেন কিন্তু তারা কোনো নির্দিষ্ট তারিখ জানাতে পারছে না।
জানা যায়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, ডিপিই ও অর্থ মন্ত্রণালয় বৈঠকে বসতে যাচ্ছে আগামী রোববার। ৯ই এপ্রিলের এই বৈঠকে ঈদের আগে শিক্ষকদের বেতন-ভাতা প্রদান নিয়ে আলোচনা হবে।
ডিপিই’র এক কর্মকর্তা বলেন, ঈদের আগে শিক্ষকদের বেতন প্রদানের সম্ভাবনা কম। তবে ডিপিই চেষ্টা করছে ঈদের আগেই এই ভাতা প্রদানের। তিনি বলেন, তবে ঈদের আগে বেতন ভাতা না পেলেও সমস্যা নেই। এই অর্থ ভবিষ্যতে তারা পেয়ে যাবেন। এ বিষয়ে অধিদপ্তরের পরিচালক (অর্থ বিভাগ) মিজানুল হক বলেন, আগামী রোববার অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একটি বৈঠক আছে সেখানেই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। আমরা চেষ্টা করছি ঈদের আগেই বেতন-ভাতা প্রদানের।