রাশিয়ার রপ্তানি পণ্যের ওপর ইউরোপের দেয়া নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলে ইউরোপিয় বন্দরগুলোতে রাশিয়ার আটকে পড়া ৩ লাখ টন সার উন্নয়নশীল বিশ্বকে বিনামূল্যে দিতে রাশিয়া প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
উজবেকিস্তানের রাজধানী তাশখন্দে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা জোট সাংহাই কো অপারেশন অর্গানাইজেশনের চলমান সম্মেলনে শুক্রবার এই ঘোষণা দিয়েছেন পুতিন।
রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘ইউরোপের বিভিন্ন বন্দরে ৩ লাখ টনেরও বেশি সার আটকে আছে। নিষেধাজ্ঞার কারনে সেসব বাইরে যেতে পারছে না। যদি ইউরোপ রুশ পণ্যের রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা শিথিল করে, সেক্ষেত্রে বিশ্বের দরিদ্র ও দরিদ্রতম বিভিন্ন দেশকে আমরা সেসব সার বিনামূল্যে প্রদান করতে প্রস্তুত আছি।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউক্রেনের বিভিন্ন গুদামে আটকে থাকা গম-ভুট্টা ছাড়ে সম্প্রতি জাতিসংঘ, তুরস্ক, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা চুক্তিতে ইউরোপের বন্দরগুলোতে আটকে থাকা রাশিয়ার সারের বিষয়টিও ছিলো। রাশিয়ার পক্ষ থেকে শর্ত দেয়া হয়েছিলো— ইউক্রেনের গম ছাড়ের বিনিময়ে রাশিয়ার সারের ওপর থেকে রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হবে।
জাতিসংঘ ও তুরস্কের আহ্বান ও কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় সাড়া দিয়ে রাশিয়ার সারের ওপর জারি থাকা নিষেধাজ্ঞা কিছুমাত্রায় শিথিল করতে সম্মত হয় ইইউ।
শুক্রবারের বক্তৃতায় ইইউ’র এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট। সেই সঙ্গে তিনি অভিযোগ করেন— কেবল নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় নিষেধাজ্ঞা যতখানি শিথিল করা প্রয়োজন, ঠিক ততখানিই করেছে ইউরোপ।
ইউরোপ স্বার্থপরের মতো কেবল নিজের সমস্যাকেই বড় করে দেখেছে। ইইউ যে মাত্রায় নিষেধাজ্ঞা শিথিল করেছে, তাতে কেবল তারাই আমাদের সার কিনতে পারবে। কিন্তু উন্নয়নশীল ও দরিদ্রতম দেশগুলোর কী হবে? কোত্থেকে সার কিনবে তারা?
চলতি বছর ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর সামরিক অভিযানের জেরে রাশিয়ার ওপর একগুচ্ছ নিষেধাজ্ঞা জারি করে ইউরোপ। কিন্তু সেসবের প্রভাবে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের অর্থনীতিতে অস্থিরতা ও গভীর সংকট দেখা দেয়ায় সম্প্রতি নিষেধাজ্ঞা কিছুামাত্রায় শিথিল করতে বাধ্য হয়েছে ইউরোপের দেশসমূহের জোট ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।