বিচ্ছিন্ন কয়েকটি ঘটনার মধ্য দিয়ে প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। ভোট গণনা শেষে ফলাফল আসতে শুরু করেছে। সন্ধ্যা থেকে ফলাফল আসা শুরু হয়।
এর আগে বুধবার সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। প্রথম ধাপে দেশের ১৩৯ উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এরপর শুরু হয় গণনা। গণনা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ফল ঘোষিত হতে থাকে।
এরইমধ্যে বেশ কয়েকটি উপজেলার বেসরকারি ফলাফল পাওয়া গেছে।
এ পর্যন্ত প্রাপ্ত ফলাফলে বেসরকারিভাবে জয়ী হয়েছেন:
চেয়ারম্যান পদে পঞ্চগড় তেঁতুলিয়া উপজেলায় মো. নিজাম উদ্দীন খান, কুড়িগ্রামের চিলমারীতে রুকুজ্জামান শাহীন, কক্সবাজার সদরে নুরুল আবছার ও কুতুবদিয়াতে ব্যরিস্টার হানিফ বিন কাশেম, দিনাজপুরের বিরামপুরে পারভেজ কবির, ঘোড়াঘাটে কাজী শুভ রহমান চৌধুরী ও হাকিমপুরে কামাল হোসেন রাজ, ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে সফিকুল ইসলাম ও হরিপুরে আব্দুল কাইয়ুম, চাঁদপুর মতলব দক্ষিণে সিরাজুল মোস্তফা তালুকদার, মতলব উত্তরে মোহাম্মদ মানিক,বগুড়ার সোনাতলায় মিনহাজুজ্জামান লিটন এবং নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় মাকসুদ হোসেন, হবিগঞ্জ বানিয়াচংয়ে মো. ইকবাল হোসেন খান, হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে আলা উদ্দিন, কুতুবদিয়ায় মোহাম্মদ হানিফ বিন কাশেম, সন্দ্বীপে এস এম আনোয়ার হোসেন, জামালপুর সদরে বাবু বিজন কুমার চন্দ্র, খাগড়াছড়ির মানিকছড়িতে মো. জয়নাল আবেদীন, রামগড়ে বিশ্ব প্রদীপ ত্রিপুরা বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন।
এদিকে, পিরোজপুরে তিনটি উপজেলা পিরোজপুর সদরে এস এম বায়েজিদ হোসেন, ইন্দুরকানী উপজেলায় জিয়াউল আহসান গাজী, নাজিরপুরে এস এম নূরে আলম সিদ্দিকী শাহীন বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। শরীয়তপুরে ভেদরগঞ্জে ওয়াছেল কবির ও নড়িয়ায় একেএম ইসমাইল হক বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। ফরিদপুর সদর উপজেলায় শামসুল আলম চৌধুরী, মধুখালীতে মোহাম্মদ মুরাদুজ্জামান, চরভদ্রাসনে আনোয়ার আলী,মেহেরপুর সদর উপজেলায় আনারুল ইসলাম, মুজিবনগরে আমাম হোসেন মিলু, যশোরের কেশবপুরে মফিজুর রহমান বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। কম ভোটারের জন্য বৈরি আবহাওয়াকে দুষলেন তিনি। এছাড়া কয়েকটি কেন্দ্রে অনিয়ম হয়েছে বলেও স্বীকার করেন সিইসি। বুধবার বিকেলে ভোটগ্রহণ শেষে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সাথে তিনি কথা বলেন।
প্রথম ধাপে ২২টি উপজেলায় ইভিএম ও বাকিগুলোয় ব্যালট পেপারে ভোট হয়েছে। প্রথম ধাপে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন ২৮ জন প্রার্থী।
২ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। নির্বাচন চলাকালে ৩৪ ঘটনায় ২৫ জন আহত হয়েছে। আটক করা হয়েছে ৩৭ জনকে। সামগ্রিকভাবে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। যেসব কেন্দ্রে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে সব জায়গায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানান সিইসি।
এরআগে সকাল ৮টায় শুরু হয় ভোটগ্রহণ। বৈরী আবহাওয়ায় সকালে কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি কম থাকলেও, পরে কিছুটা বাড়ে। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে নেওয়া হয় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পেরে খুশি ভোটাররা। তবে, কয়েকটি স্থানে বিচ্ছিন্নভাবে সংঘর্ষ ও কিছু অনিয়মের ঘটনা ঘটেছে। এতে পুলিশসহ আহত হয়েছে কমপক্ষে ২৫ জন। অনিয়মের অভিযোগে কয়েকটি কেন্দ্রে ভোট স্থগিত করা হয়েছে। এছাড়া, কয়েকজন প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসারকে প্রত্যাহার ও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে সারাদেশে মোট ১ হাজার ৬৩৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৫৭০, ভাইস চেয়ারম্যান ৬২৫ এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪৪০ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এই নির্বাচনে ভোটার প্রায় ৩ কোটি ১৪ লাখ। ভোটকেন্দ্র ছিল প্রায় ১২ হাজার। ভোটকক্ষ প্রায় ৭৮ হাজার। প্রতিটি সাধারণ ভোটকেন্দ্রে ১৭ জন সদস্য ও গুরুত্বপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে ১৮ থেকে ১৯ জন করে নিরাপত্তা সদস্য নিয়োজিত ছিল।
দেশের মোট ৪৯৫ উপজেলার মধ্যে নির্বাচন উপযোগী ৪৮৫ উপজেলায় চার ধাপে ভোট হচ্ছে এবার। সবশেষ ২০১৯ সালে পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট হয় পাঁচ ধাপে।