লোহাগাড়া প্রতিনিধি : মিরদাদ হোসেন
দক্ষিণ চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার চুনতি রেঞ্জ বন কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে ০৮ অক্টোবর ২০২২ শনিবার সকাল ৯ টায় লোহাগাড়া উপজেলার চট্রগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে বাসে করে খাঁচাবন্দী একটি উল্লুক নিয়ে যাওয়ার সময় অভিযান চালিয়ে দুইজনকে হাতেনাতে আটক করা হয়। আটককৃত ব্যক্তিরা হচ্ছেন ১. মোঃ মাজহারুল (৩২), পিতা- আবদুল মজিদ, মাতা-মৃত মাজেদা, গ্রামঃ পেন্নাই, উপজেলা-দাউদকান্দি, জেলা- কুমিল্লা, ২. মমিন, পিতা-আবদুল জলিল, মাতা-পেয়ারা বেগম, সাং ফতেয়াবাদ, উপজেলা – দেবিদ্বার, জেলা- কুমিল্লা। আটককৃত ব্যক্তিরা স্বীকার করেন, তারা বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে বিরল প্রজাতির এই উল্লুকটি নিয়ে যাচ্ছিলেন। বণ্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২ এর ৩৪(খ) ধারা অনুযায়ী এভাবে বণ্যপ্রাণী ক্রয়-বিক্রয় এবং আমদানি-রপ্তানি করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আটককৃত ব্যক্তিগণ ভ্রাম্যমাণ আদালতে তাদের অপরাধ স্বীকার করায় আইন অনুযায়ী তাদের প্রত্যেককে এক বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং দশ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড প্রদান, অর্থদণ্ড অনাদায় আরও এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।
চার দশক আগেও বাংলাদেশের বনে বসবাসকারী উল্লুকের সংখ্যা ছিল প্রায় তিন হাজার। কিন্তু সেখান থেকে এখন সেটি মাত্র কয়েকশো প্রাণীতে এসে ঠেকেছে।
লোহাগাড়া উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট জনাব শরীফ উল্যাহ কর্তৃক পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতে এই দণ্ড প্রদান করা হয়। তিনি বলেন মানুষের মতো পরিবার প্রথায় অভ্যস্ত এই প্রাণীটি বিশ্বজুড়েই বিলুপ্তির ঝুঁকিতে রয়েছে। আন্তর্জাতিক পরিবেশ সংরক্ষণ সংস্থা আইইউসিএনের বিলুপ্তির ঝুঁকিতে থাকা প্রাণীদের লাল তালিকায়ও রয়েছে এই প্রাণীটি।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকালে লোহাগাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জনাব মুহাম্মদ আতিকুর রহমান, এস আই মোঃ সাজিব হোসেন, চুনতি রেঞ্জ কর্মকর্তা জনাব মোঃ মাহমুদ হোসেন, চুনতি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জনাব জয়নাল আবেদীন উপস্থিত ছিলেন।
আসামিদেরকে জেলহাজতে প্রেরণের জন্য লোহাগাড়া থানায় সোপর্দ করা হয়। বিরল প্রজাতির এই উল্লুকটিকে ডুলাহাজরা সাফারি পার্কে প্রেরণের নিমিত্ত রেঞ্জ কর্মকর্তা জনাব মোঃ মাহমুদ হোসেন এর হেফাজতে দেওয়া হয়।