তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক বলেছেন, ‘গত তিন দিনে সিআইআই (স্পর্শকাতর তথ্য অবকাঠামোর) এর মধ্যে আরও তিনটি প্রতিষ্ঠানের ঝুঁকি আমরা চিহ্নিত করতে পেরেছি।’
সোমবার আগারগাওয়ে আইসিটি টাওয়ারে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমাদের পাঁচ কোটি বার্থ রেজিস্ট্রেশন, ডেথ রেজিস্ট্রেশন কিংবা জাতীয় পরিচয়পত্র চুরি হয়েছে বলে যে ধরনের প্রচার হচ্ছে এটা সত্য না। খুব অল্প সংখ্যক পরিচয় অর্থাৎ নাম, জন্ম তারিখ, ফোন নম্বর এই তথ্য গুলো কোনো আক্রমণ হয় নাই, কোনো ধরনের তথ্য চুরি যায় নাই। আমাদের প্রযুক্তিগত দুর্বলতার কারণে বার্থ এবং ডেথ রেজিস্ট্রেশন সিস্টেম থেকে যেই অ্যাপ্লিকেশন পোর্টাল আছে সেখানের তথ্য দেখা যাচ্ছিল। এ দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের যে ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সি ঘোষিত ২৯টি ক্রিটিক্যাল ইনফ্রাস্টাকচার আছে তাদের প্রতিনিধিদেরকে নিয়ে বসেছিলাম এবং বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং গোয়েন্দা সংস্থা তাদের সবাইকে নিয়ে বসে তাদের কাছে যত ধরনের তথ্য উপাত্ত আছে এবং যত ধরনের সমস্যা চিহ্নিত করা গেছে সেগুলো নিয়ে আমরা প্রায় দীর্ঘ তিন ঘণ্টা বৈঠক করেছি। সেই বৈঠক শেষে আমরা দুটো কমিটি করে দিয়েছি। কমিটি এ ধরনের তথ্য ফাঁসের জন্য আমাদের প্রযুক্তিগত কি দুর্বলতা ছিল সেটা চিহ্নিত করবে। যদি কোনো ব্যক্তি পর্যায়ে দায়িত্বে অবহেলা থেকে থাকে সেটা চিহ্নিত করা এবং এই ধরনের ঘটনা আগামীতে যাতে না ঘটে তার জন্য প্রযুক্তিগত সক্ষমতা, ব্যক্তিগত দক্ষতা এবং দায়িত্বশীল আচরণ নিশ্চিত করার জন্য আমাদের কি কি করণীয় সে বিষয়ে আমাদের জানাবে। কম্পিউটার ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিম থেকেও কমিটিতে প্রতিনিধি দেওয়া হয়েছে, গোয়েন্দা পুলিশ ও পাশাপাশি আমাদের আইসিটি মন্ত্রণালয় থেকে প্রতিনিধি দেওয়া হয়েছে। সাত দিনের মধ্যে তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। ১০ দিনের মধ্যে আমরা উচ্চ পর্যায়ে একটা রিপোর্ট পেশ করব এবং প্রেস মিডিয়ার কাছেও আমরা একটা সামারি আকারে তুলে ধরব। কেন কিভাবে কি হয়েছিল।
এই তথ্য ফাসের বিষয়টি ধরিয়ে দেওয়া মারকোপাওলোসকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা ভিক্টর মারকোপাওলোকে ধন্যবাদ দিই উনি এটা দেখেছেন, জানিয়েছেন। উনি একজন গবেষক। আমরা খোজ খবর নিয়েছি উনি কোথায় পড়ালেখা করছেন, কোথায় ইনটার্নশিপ করছেন। আমরা ওনার সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য বলেছি। আমরা ওনাকে অফিসিয়ালি ধন্যবাদ জানাতে চাই।
এনআইডি কার্ডের কোনো তথ্য গেছে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ন্যাশনাল আইডির যে ডেটাবেইজ সেটি একদমই সুরক্ষিত ও অক্ষত এবং জন্ম– মৃত্যু নিবন্ধনের যে তথ্য সেখান থেকেও এমন কোনো তথ্য যায় নাই। প্রথমিক ভাবে আমরা পেয়েছি, নতুন নিবন্ধন কিম্বা সংশোধনের বিভিন্ন যেখানে আবেদন হয় সেখান থেকে আবেদন পত্রগুলো যেখানে সংরক্ষিত থাকে সেখানে ডেটা গুলো খুব সহজেই পাওয়া যাচ্ছিল। আমাদের ডেটা বেইজ থেকে কোনো তথ্য চুরি যায় নাই। আমাদের বিশেষজ্ঞরা লিখিত যে তথ্য আমাকে দিয়েছে সেখানে এনআইডির কোনো তথ্য চুরি হয়েছে বলে তথ্য প্রমাণ পায় নি। বার্থ ও ডেথ রেজিস্ট্রেশন থেকে পাঁচ কোটি তথ্য চলে গেছে এমনও পায় নি।
দুর্বলতার দায় কে নেবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা কমিটি করে দিয়েছি, এ ধরনের ভুলের জন্য কারা কারা দায়ি এবং ভবিষ্যতে যেন এমন না হয় এসব বিষয় প্রতিবেদনে যেন থাকে সে বিষয়ে কমিটকে বলা হয়েছে।
নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন, জাতীয় নিরাপত্তার জায়গাতে এমন কোনো হুমকি হয় নাই তবে ব্যক্তিগত নিরাপত্তার ক্ষেত্রে অবশ্যই ঝুঁকি আছে। কেননা ভবিষ্যতে সে কোনো ধরনের সাইবার ক্রাইম করতে পারে। এখন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে কোনো অপরাধী ডার্ক ওয়েবে বিক্রি করে দিয়েছে এমনও আমরা পায়নি। আমরা খুঁজতেছি ডার্ক ওয়েবে এমন কোনো অকশান হয় কিনা। আমরা সার্চ করছি। এমন হলে আমরা জানাবো।