Sunday , 16 June 2024
শিরোনাম

এমপি আনার হত্যা তদন্তে ঢাকায় ভারতীয় পুলিশের স্পেশাল টিম

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ভারতীয় পুলিশের দুই সদস্যের স্পেশাল টিম ঢাকায় আসছে। তার মৃত্যুর ঘটনায় সন্দেহভাজন দুইজন ভারতীয় নাগরিক জড়িত বলে প্রাথমিকভাবে তথ্যও মিলেছে।

বৃহস্পতিবার (২৩ মে) দুপুর ২টার দিকে ভারতীয় পুলিশের টিম ঢাকায় পৌঁছাবে বলে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।

ডিবি সূত্র জানিয়েছে, ভারতের পুলিশ সদস্যরা আনোয়ারুল আজীমের হত্যাকাণ্ড নিয়ে তদন্ত-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও পরিবারের সঙ্গে কথা বলবেন। তারা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বাংলাদেশে গ্রেপ্তার সন্দেহভাজন তিন আসামিকেও জিজ্ঞাসাবাদ করবেন।

ডিবির তদন্ত থেকে জানা যায়, পরিকল্পনা অনুযায়ী কলকাতার নিউ টাউনের সঞ্জীবনী গার্ডেনে ট্রিপ্লেক্স ফ্ল্যাট ভাড়া করেন মূল পরিকল্পনাকারী এমপি আনারের বন্ধু ও ব্যবসায়িক পার্টনার আক্তারুজ্জামান শাহীন। আগে থেকেই ভারতে অবস্থান করা কয়েক সন্ত্রাসীর সঙ্গে চুক্তি করেন তিনি। এরপর ৫ কোটি টাকার চুক্তিতে বাংলাদেশ থেকে ওই ফ্ল্যাটে নিয়ে যান মূল কিলার চরমপন্থি নেতা আমানুল্লাহকে।

ঢাকার তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, শাহীন কিলার আমানুল্লাহকে নিয়ে কলকাতায় যান গত ৩০ এপ্রিল। সংসদ সদস্য আনার হত্যার ছক কষেন ওই ফ্ল্যাটে বসেই। এরপর সেখান থেকে ১০ মে দেশে ফেরেন শাহীন। তখন শাহীনের ভাড়া করা ওই ফ্ল্যাটে অবস্থান করেন শাহীনের বান্ধবী শিলাস্তি রহমান, মূল কিলার আমানুল্লাহ, জিহাদ, সিয়াম, মোস্তাফিজ ও ফয়সাল। ১৩ মে রাতে হত্যা মিশন বাস্তবায়ন করে আমানুল্লাহ, শিলাস্তি ও ফয়সাল দেশে ফেরেন। তাদের আটকের পর হত্যারহস্য উদ্ঘাটন হয়। তাদের কাছে পাওয়া যায় এমপি আনার হত্যার লোমহর্ষক কাহিনি।

তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ওই ফ্ল্যাটে যাওয়ার পর আনারকে শাহীনের টাকার জন্য চাপ দেন আমানুল্লাহ ও তার সহযোগীরা। একপর্যায়ে আনারের গলায় চাপাতি ধরেন আমানুল্লাহ। এ নিয়ে ধস্তাধস্তি হয়। পরে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধে তাকে হত্যা করা হয়।

এরপর শাহীন আমানুল্লাহকে নির্দেশ দেন লাশ গুম করতে। সেই নির্দেশ পেয়ে আমানুল্লাহ এমপি আনারের লাশটি কেটে টুকরো টুকরো করেন। এরপর বাইরে থেকে কিনে আনা হয় সাদা পলিথিন, ব্লিচিং পাউডার ও দুটি বড় সাইজের ট্রলি ব্যাগ। লাশ টুকরো করার পর তা ঢোকানো হয় পৃথক দুটি ট্রলিতে। লাশের টুকরোগুলো ব্যাগে ঢোকানোর পর বাইরে থেকে আনা ব্লিচিং পাউডার দিয়ে ওই ফ্ল্যাটের মেঝে পরিষ্কার করে ফেলা হয়।

এমপি আনোয়ারুল আজিম আনারকে ১৩ মে হত্যা করা হলেও তার মরদেহের টুকরো ভর্তি প্রথম ট্রলিটি ওই বাসা থেকে বের করে সরানো হয় পরদিন ১৪ মে। ফ্ল্যাট কম্পাউন্ডের বাইরে নিয়ে পাশের একটি শপিংমলের সামনে দাঁড়ায় কিলার গ্রুপের দুই সদস্য। এরপর কিলার গ্রুপের সদস্য সিয়ামকে এই ট্রলি তুলে দেওয়া হয়। সিয়াম একটা গাড়িতে উঠে কিছুদূর যাওয়ার পর সেটি নিয়ে নেমে যান। এরপর এই ব্যাগ কোথায় নিয়ে গেছেন তা জানে না কেউই। আরেকটি ব্যাগ ফ্ল্যাটে রেখেই ১৫ মে আমানুল্লাহ ও শাহীনের বান্ধবী শিলাস্তি আকাশপথে ঢাকায় চলে আসেন। অন্য ট্রলি ব্যাগটি মোস্তাফিজ, ফয়সালসহ অন্যরা সরিয়ে ফেলে।

কলকাতা পুলিশের ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট বা সিআইডির আইজি অখিলেশ জানিয়েছেন, আনোয়ারুল আজিমের নিখোঁজ হওয়া নিয়ে তদন্ত চলছিল। বুধবার (২২ মে) আমরা জানতে পারি, তাকে খুন করা হয়েছে। শেষ বার যেখানে তাকে দেখা গিয়েছিল, সেই জায়গাটি স্থানীয় থানা খুঁজে বের করে সিআইডিকে তদন্তের ভার দেওয়া হয়। পশ্চিমবঙ্গের ব্যারাকপুর পুলিশের সূত্রগুলো বলছে, আনোয়ারুল আজিমের দেহ এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি।

Check Also

কঠোর নজরদারিতে রয়েছে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত: সেনাপ্রধান

দেশের সংকটময় মুহূর্তসহ যেকোনো পরিস্থিতিতে অকুতোভয় দায়িত্ব পালনে সেনাবাহিনী সদা প্রস্তুত জানিয়ে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

x