পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলায় কবরস্থানে বসে বিষপান করে আত্মহত্যা করেছে প্রেমিক-প্রেমিকা। উপজেলার কলারদোয়ানিয়া ইউনিয়নের উত্তর কলারদোয়ানিয়া গ্রামের চানদকাঠী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
শুক্রবার ভোরে তাদের মৃত্যু হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার রাত ২টার দিকে প্রেমিকার বাড়ির সামনের কবরস্থানে বসে তারা বিষপান করেন।
নিহত প্রেমিকা মারিয়া খানম নাজিরপুরের উত্তর কলারদোয়ানিয়ার রফিকুল ইসলামের মেয়ে। তিনি উপজেলার মুগারঝোর দাখিল মাদ্রাসার দশম শ্রেণির ছাত্রী। আর প্রেমিক ইয়াছিন তালুকদার (১৮) পিরোজপুর জেলার নেছারবাদ উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের উলিবুনিয়া গ্রামের হাফিজ তালুকদারের ছেলে। ইয়াছিন তার বাবার সঙ্গে ধান-চালের ব্যবসা করেন। নিহতরা সম্পর্কে একে অপরের আত্মীয়।
নিহত ইয়াছিনের বাবা জানান, ইয়াসিন কয়েকদিন আগে তার ফুফা (ভগ্নিপতি) মোজাম্মেল হক হাওলাদারের বাড়িতে বেড়াতে যায়। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ফুফাতো ভাই সাব্বিরের সঙ্গে তার দোকানে ঘুমাতে যায়। কিন্তু দোকানের ভেতর গরম লাগার কথা বলে সেখান থেকে সে বের হয়। রাত ৩টার দিকে ইয়াছিনের ফুফু সাবিনা ইয়াসমিন ফোন করে জানান, ইয়াছিন ও বাড়ির পাশের এক মেয়ে একসঙ্গে বিষপান করেছে।
নিহত মারিয়া খানমের মা শামীমা নাছরিন বলেন, মারিয়া রাতের খাবার খেয়ে ১০টার দিকে তার কক্ষে ঘুমাতে যায়। রাত ২টার দিকে বাড়ির সামনের কবরস্থান থেকে বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার পাই। পরে সেখানে গিয়ে মারিয়া ও ইয়াছিনকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখি।
পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে নাজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রেমিকা মারিয়াকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। আর পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইয়াছিনের মৃত্যু হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রেমঘটিত জটিলতা ও সম্ভবত অভিমানের কোনো সূত্র ধরে তারা আত্মহত্যা করে থাকতে পারে।
নাজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক অসিত মিস্ত্রি জানান, মারিয়াকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। আর ভোরে চিকিৎসাধীন হাসপাতালে ইয়াছিনের মৃত্যু হয়।
নাজিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হুমায়ুন কবির জানান, আত্মহত্যার কারণ নিয়ে নিহতদের পরিবারের কেউ মুখ খুলছেন না। তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।