আনোয়ার সাদত জাহাঙ্গীর,ময়মনসিংহঃ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সংস্কৃতি বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ত্রিশালে কৃতিসন্তান সাবেক ছাত্রনেতা নুরুল আলম খান পাঠান মিলন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্ম জয়ন্তী উপলক্ষে ত্রিশালবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।নজরুলকে নিয়ে ত্রিশালবাসীর আবেগের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেনঃ
প্রিয় ত্রিশালবাসী,
আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। আজ কবি’র জন্মদিন। জন্মদিনে কবিকে স্মরণ করি পরম শ্রদ্ধায়।
আজকের আমাদের বাংলাদেশের ভূখণ্ডে কবি প্রথম পদার্পন করেছিলেন ত্রিশালে। আসানসোলের চুরুলিয়ার দুখু মিয়া ত্রিশালে এসেছিলেন কাজী রফিজুল্লাহ দারোগার হাত ধরে। খুব অল্পদিন ত্রিশালে ছিলেন,কিন্তু সারাজীবনের জন্য আপন হয়ে রয়েছেন ত্রিশালের মানুষের মণিকোঠায়।
অদম্য মেধাবী দুখু মিয়া ক্রমেই যোদ্ধা-কবি হয়ে উঠেন। দুখু মিয়া হয়ে হয়ে উঠেন কবি কাজী নজরুল ইসলাম।
কবি নজরুল ইসলাম হয়ে উঠেন বিদ্রোহী কবি, সাম্যের কবি,শোষিত-বঞ্চিত মানুষের কবি। প্রেরণা হয়ে জাগিয়ে তুলেন ভারতবাসীকে, মুক্তির দিশা দেন বাঙালিকে।
আমাদের মুক্তিযুদ্ধে তাঁর গান ও কবিতা অস্ত্রের মতো হানাদারের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠে, মুক্তিযোদ্ধাগণ অনুপ্রাণিত হন তাঁর গান ও কবিতার মাধ্যমে।
স্বাধীন বাংলাদেশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কবি নজরুল ইসলামকে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। কবি হয়ে উঠেন আমাদের জাতীয় কবি।
আজ জাতীয় কবির জন্মদিন। মহাসমারোহে পালিত হচ্ছে জন্মজয়ন্তী। কবির জীবন ও কর্ম-সৃষ্টির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই।
ত্রিশালের কৃতিপুরুষ কাজী রফিজুল্লাহ দারোগা কবিকে বেঁচে থাকবার দিশা দিয়ে অমর হয়েছেন আর জাতির পিতা কবিকে আমাদের কবি, আমাদের জাতীয় কবি হিসাবে প্রতিষ্ঠা দিয়ে বাঙালিকে ধন্য করেছেন। তাঁদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানাই।
কবি কাজী নজরুল ইসলাম আমাদের কবি, বাঙালির আপন মানুষ। এই আপন মানুষটির পদধূলির কল্যাণে ত্রিশালের মানুষ হিসাবে আমি ও আমরা ধন্য। ত্রিশাল ও নজরুল যেন এক ও অভিন্ন সত্তা।
কবির ‘স্বদেশি গান’ নামীয় কবিতাটি উল্লেখ করছি—
নম নম নমো বাংলাদেশ মম
চির-মনোরম চির মধুর।
বুকে নিরবধি বহে শত নদী
চরণে জলধির বাজে নূপুর॥
শিয়রে গিরি-রাজ হিমালয় প্রহরী,
আশিস-মেঘ বারিসদা তার পড়ে ঝরি,
যেন উমার চেয়ে এ আদরিণী মেয়ে,
ওড়ে আকাশ ছেয়ে মেঘ-চিকুর॥
গ্রীষ্মে নাচে বামা কাল-বোশেখি ঝড়ে,
সহসা বরষাতে কাঁদিয়া ভেঙে পড়ে,
শরতে হেসে চলে শেফালিকা-তলে
গাহিয়া আগমনি- গীতি বিধুর॥
হরিত অঞ্চল হেমন্তে দুলায়ে
ফেরে সে মাঠে মাঠে শিশির-ভেজা পায়ে,
শীতের অলস বেলা পাতা ঝরার খেলা
ফাগুনে পরে সাজ ফুল-বধূর॥
এই দেশের মাটি জল ও ফুলে ফলে,
যে রস যে সুধা নাহি ভূমণ্ডলে,
এই মায়ের বুকে হেসে খেলে সুখে
ঘুমাব এই বুকে স্বপ্নাতুর॥
শুভ জন্মদিন, কবি!