কাপ্তাই থেকে ভোটাধিকার হরণকারীদের সংস্কার হয়নি
জনগণের ভোটাধিকার হরণের ষড়যন্ত্র এখনো অব্যাহত রয়েছে। তৃণমূল পর্যায়ের সাধারণ মানুষ বলছেন, পতিত আওয়ামী সরকারের মদতপুষ্টরা এখনো স্ব স্ব কর্মস্থলে বহাল তবিয়তে রয়েছেন। কাপ্তাইয়ের ইউপি চেয়ারম্যানরা নৌকা প্রতীক নিয়ে এখনো উপজেলা আইনশৃঙ্খলা ও সমন্বয় সভায় অংশ নিচ্ছেন এবং প্রভাব বিস্তার করে মতামত ও সিদ্ধান্ত দিচ্ছেন—এমন অভিযোগ রয়েছে স্থানীয়দের।
এ অবস্থায় আশঙ্কা করা হচ্ছে, আগামীতে জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগ আরও কঠিন হয়ে উঠতে পারে। সচেতন মহল মনে করছেন, ভোট ও গণতন্ত্রবিরোধী শক্তিকে চিহ্নিত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, গেল ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পরও কিছু আওয়ামীপন্থী কর্মকর্তা ও কর্মচারী পরিস্থিতি মেনে নিতে পারেননি। সরকারি দপ্তরগুলোতে দায়িত্ব পালনে অনীহা দেখা দিয়েছে। সকাল ৯টায় অফিসে হাজির হওয়ার কথা থাকলেও অধিকাংশ কর্মকর্তা সকাল ১১টায় অফিসে আসেন এবং দুপুর ২টার মধ্যে অফিস ত্যাগ করেন। তাছাড়া, কর্মস্থলে না থেকেও তারা সরকারি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন এবং সরকারি বাসাভাড়ার টাকা পুরোপুরি নিচ্ছেন।
এমনকি, কাপ্তাই উপজেলায় আওয়ামী লীগের আস্থাভাজন কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী এখনো নীরবে সংগঠিত হচ্ছেন এবং গোপনে বৈঠক করছেন বলে গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে। তাদের লক্ষ্য—পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হলে পুনরায় ক্ষমতায় ফেরা।
বিশেষজ্ঞ মহল বলছেন, ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৩ সালের দিনের ভোট রাতে করে দেওয়ার অভিযোগে যাদের নাম এসেছিল, তাদের অধিকাংশ এখনো কাপ্তাইয়ে বহাল তবিয়তে রয়েছেন। যদি দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া না হয় এবং এই ব্যক্তিদের অপসারণ না করা হয়, তবে ২০২৬ সালের নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে আয়োজন করা কঠিন হতে পারে।
এছাড়াও, কাপ্তাইয়ের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সাবেক আওয়ামীপন্থী কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা এখনো সক্রিয়। তাদের মধ্যে ২০-৩০ জন রয়েছেন যারা ছাত্রলীগ, যুবলীগ এবং আওয়ামী লীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। এক বছর পার হলেও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার কার্যক্রম দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখাতে পারেনি—ফলে ভোটারদের মধ্যে উদ্বেগ কাটছে না।
সচেতন মহল মনে করছে, এখনই যদি এসব চিহ্নিত কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া না হয়, তবে ভবিষ্যতে কাপ্তাইকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র আরও তীব্র হতে পারে। তাই ভোটাধিকার রক্ষায় এবং গণতন্ত্রকে সুরক্ষিত রাখতে সরকার ও প্রশাসনের জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।