দেশের সর্ববৃহৎ হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতা ‘কুরআনের নূর পাওয়ার্ড বাই বসুন্ধরা গ্রুপ’র সেমিফাইনাল রাউন্ডের প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে।
সারা দেশের আনাচকানাচে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা হাজারো মাদরাসা থেকে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে নিবন্ধন করেছিলেন কয়েক হাজার হফেজ। তাদের মধ্য থেকে নির্বাচিত সেরা ৪৫ জনকে নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রতিযোগিতার থিয়েটার রাউন্ড। এরপর তাদের মধ্য থেকে সেরা ৩০ জন জায়গা পেয়েছিলেন কোয়ার্টার ফাইনালে। তাদের মধ্য থেকে সেরা ২০ জন জায়গা করে নিয়েছেন সেমিফাইনাল রাউন্ডে।
এই পর্বে প্রতিযোগিতার জন্য প্রতিযোগীদের চারটি গ্রুপে ভাগ করা হয়েছে। প্রতি গ্রুপের প্রতিযোগীর মধ্য থেকে পরের পর্বে জায়গা পাবেন দুজন হাফেজ।
সেমিফাইনাল রাউন্ডের শুরুতে শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) পবিত্র মাহে রমজানের ২২তম দিনে আমরা শুনব প্রথম গ্রুপে স্থান পাওয়া কুমিল্লার হাফেজ মো. মুশাররফ হুসাইন ও মো. মাজহারুল ইসলাম আইয়ুব, ময়মনসিংহের মো. লাবিব আল হাসান, খুলনার হোজাইফা মুন্সি ও ঢাকা দক্ষিণের মো. আব্দুল্লাহ মাহমুদের সুমধুর কণ্ঠের কোরআন তিলাওয়াত। তাদের মধ্য থেকে ফাইনাল রাউন্ডের জন্য সেরা দুজনকে বাছাই করবেন বিচারকরা।
এর আগে গত ৯ ফেব্রুয়ারি সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগীয় জোনের অডিশন রাউন্ডের মাধ্যমে উৎসবমুখর পরিবেশে দেশব্যাপী হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতার মেগারিয়ালিটি শো ‘কুরআনের নূর’ শুরু হয়। গত ১১ ফেব্রুয়ারি শেষ হয় কুমিল্লা জোনের অডিশন। এর পরদিন ১২ ফেব্রুয়ারি দিনভর চলে চট্টগ্রাম জোনের অডিশন। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি একই দিনে সম্পন্ন হয় রাজশাহী ও রংপুর জোনের অডিশন। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি একই দিনে শেষ হয় ফরিদপুর ও খুলনা বিভাগীয় জোনের অডিশন। গত ২০ ফেব্রুয়ারি শেষে হয় বরিশাল বিভাগীয় জোনের অডিশন। গত ২২ ফেব্রুয়ারি দিনভর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে অনুষ্ঠিত হয় ঢাকা উত্তর জোনের অডিশন। সব শেষে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি একই স্থানে অনুষ্ঠিত হয় ঢাকা দক্ষিণ জোনের অডিশন।
চলতি রমজান মাসে দেশের বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের পৃষ্ঠপোষকতায় হাফেজদের এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ মুসল্লি কমিটি। দেশের ৯টি জোন থেকে সেরা তিনজন করে মোট ২৭ জন হাফেজ প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় পর্বে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছেন। আর ঢাকা বিভাগের দুটি জোন (উত্তর ও দক্ষিণ) থেকে ৯ জন করে মোট ১৮ জন হাফেজ থিয়েটার রাউন্ডে অংশ নেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। পরে এই ৪৫ জন প্রতিযোগী নিয়ে শুরু হয় বিশুদ্ধ ও সুন্দর কোরআন তিলাওয়াতের শ্রেষ্ঠত্বের প্রতিযোগিতা। তাদের মধ্য থেকে কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নেন ৩০ জন। দেশবরেণ্য ইসলামিক স্কলার ও অভিজ্ঞ হাফেজদের সমন্বয়ে গঠিত বিচারকমণ্ডলী তাদের মধ্য থেকে সেমিফাইনাল রাউন্ডের জন্য ২০ জন কোরআনে হাফেজকে বাছাই করেন। পরে তাদের মধ্য থেকে ধাপে ধাপে সেরা পাঁচজন বিজয়ীকে নির্বাচিত করা হবে।
প্রথম বিজয়ী পাবেন ১০ লাখ টাকা ও সম্মাননা। দ্বিতীয় বিজয়ী পাবেন সাত লাখ টাকা ও সম্মাননা। তৃতীয় পুরস্কার পাবেন পাঁচ লাখ টাকা ও সম্মাননা। চতুর্থ ও পঞ্চম পুরস্কার হিসেবে দুজন দুই লাখ করে ও সম্মাননা পাবেন। সেরা আটে থাকা অন্যরাও পাবেন এক লাখ টাকা আর্থিক পুরস্কার ও সম্মাননা।
এই প্রতিযোগিতায় বিচারকের প্যানেলে আছেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম শায়খুল হাদিস মুফতি মুহিব্বুল্লাহিল বাকী আন নদভী, কোরআনের ওপর সর্বোচ্চ ডিগ্রি মুত্তাসিল সনদের অধিকারী ও ১০ কিরাত বিশেষজ্ঞ এবং আন্তর্জাতিক কিরাত তিলাওয়াত সংস্থার (ইকরা) সহ-সভাপতি শাইখ আহমাদ বিন ইউসুফ আল আজহারি, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম মুফতি মিজানুর রহমান, পেশ ইমাম শায়খুল হাদিস মুফতি এহসানুল হক জিলানী ও শায়খুল হাদিস মুফতি মুহিউদ্দীন কাসেম।
কোরআনে হাফেজদের নিয়ে বৃহৎ এই রিয়ালিটি শো চলতি রমজানে প্রতিদিন নিউজ ২৪ টেলিভিশন চ্যানেলে সম্প্রচারিত হবে। এর মিডিয়া পার্টনার হিসেবে রয়েছে কালের কণ্ঠ, বাংলাদেশ প্রতিদিন, বাংলানিউজটোয়েন্টিফোরডটকম ও ক্যাপিটাল এফএম।