জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস জানিয়েছেন, কোন পরিস্থিতিতে কারও গুম হওয়াকে সমর্থন করে না জাতিসংঘ। আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) টুইটারের এক টুইট বার্তায় তিনি একথা জানান।
তিনি আরও বলেন, পরিবার এবং সমাজের অধিকার আছে তাদের প্রিয়জনের সাথে কী ঘটেছে সে সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানার। আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবসে আমি দেশগুলিকে এই নৃশংস অপরাধের অবসান ঘটাতে সাহায্য করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।
২০০৬ সালের ২০ ডিসেম্বর গুম হওয়া সব ব্যক্তির জন্য আন্তর্জাতিক সনদ হিসেবে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে গৃহীত হয়।
২০১০ সালের ডিসেম্বরে ‘ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন ফর প্রটেকশন অব অল পারসন্স অ্যাগেইনস্ট এনফোর্সড ডিসঅ্যাপিয়্যারেন্স’ সম্মেলনে আন্তর্জাতিক সনদটি কার্যকর হয়, তাতে ৩০ আগস্টকে আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস ঘোষণা করা হয়।
এরপরের বছর থেকে দিবসটিতে গুম হওয়া মানুষগুলোকে স্মরণ এবং সেই সঙ্গে তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানানোর জন্য দিবসটি পালন করা হচ্ছে বিশ্বব্যাপী।
আন্তর্জাতিক গুম দিবস উপলক্ষে বেসরকারি সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রে (আসক) গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদ স্বাক্ষর এবং এ সংক্রান্ত অভিযোগ তদন্তে নিরপেক্ষ কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছে।
আসকের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিভিন্ন গণমাধ্যম থেকে সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী ২০০৭ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত ৬০৪ জন গুমের শিকার হয়েছেন বলে ভুক্তভোগী পরিবার ও স্বজনরা অভিযোগ তুলেছেন।
এদের মধ্যে পরবর্তী সময়ে ৭৮ জনের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে, ৮৯ জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে এবং ৫৭ জন ফেরত এসেছেন।
এসব ঘটনায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে পরিবার, স্বজন বা প্রত্যক্ষদর্শীরা দাবি করেছেন, বিশেষ বাহিনী-র্যাব, ডিবি পুলিশ ও গোয়েন্দা বিভাগের পরিচয়ে সাদা পোশাকে ব্যক্তি বা ব্যক্তিদের তুলে নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু প্রায়ই সংশ্লিষ্ট বাহিনী তাদের গ্রেফতার বা আটকের বিষয়টি অস্বীকার করে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের তথ্যমতে, ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলোতে ১৯৭০ ও ৮০-র দশকে কেবল অবৈধ অস্ত্র কারবারি ও ভিন্নমতাবলম্বীরাই গুম হতেন। কিন্তু বর্তমানে রাজনৈতিক নেতা, বিভিন্ন নৃগোষ্ঠীর নেতা, মাদক কারবারি ও মানবপাচারকারীদের মধ্যেও গুমের ঘটনা দেখা যায়।